ব্রেন ডেথের পরে নাট্যকর্মীর অঙ্গদান, পাঁচ অঙ্গ প্রতিস্থাপিত হল অন্যের শরীরে

ব্রেন ডেথের পরে নাট্যকর্মীর অঙ্গদান, পাঁচ অঙ্গ প্রতিস্থাপিত হল অন্যের শরীরে

মৃত্যুর পরে বেঁচে থাকবেন তিনি। তবে অন্য়ভাবে। বর্ধমানের এক ব্যক্তির মরণোত্তর অঙ্গদান সফল হল কলকাতায়। বর্ধমানের ওই নাট্যকর্মীর ব্রেন ডেথ হয়ে গিয়েছিল। এরপর তাঁর পরিবারের তরফে অঙ্গদানের ব্যাপারে ইচ্ছা প্রকাশ করা হয়। এরপর আর দেরি করেননি চিকিৎসকরা। সমস্ত দিকে খবর দিয়ে দেওয়া হয় দ্রুত। রিজিয়নাল অর্গ্যান অ্য়ান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশনের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করেন। এরপরই শুরু হয় অঙ্গদানের প্রক্রিয়া। দুটি কিডনি, যকৃৎ, ফুসফুস, হৃৎপিন্ড দান করা হয়েছে। এককথায় মহান দান। অত্যন্ত বিরল ওই ঘটনা।মরণোত্তর আন্দোলনকে সফলতার দিকে এগিয়ে দিতে অনেকটাই বড় পদক্ষেপ নিলেন বর্ধমানের হিরণ্ময় ঘোষ। ৫৪ বছর বয়সেই ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন তিনি। কিন্তু অন্তত পাঁচটি পরিবারের মুখে হাসি ফোটালেন তিনি।কার্যত মৃত্য়ুর পরেও নজির তৈরি করলেন তিনি। 

সূত্রের খবর, বুধবার ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। মাথাতে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। এর জেরে প্রচন্ড মাথার যন্ত্রণা আর খিঁচুনি শুরু হয় তাঁর। এরপরই আশঙ্কাজনকভাবে তাঁকে কলকাতার একটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তাঁর অবস্থার চরম অবনতি হয়েছিল।

পরিজনদের দাবি, বুধবার রাত থেকেই বোঝা যাচ্ছিল তাঁর ব্রেন ডেথের দিকে যাচ্ছে বিষয়টি। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা। এরপরই শুরু হয় অঙ্গদানের প্রস্তুতি। অঙ্গ নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম বড় ভূমিকা পালন করে কলকাতা পুলিশ। এবারও তার অন্যথা হয়নি। যে রুট দিয়ে অঙ্গ নিয়ে যাওয়া হবে সেই রাস্তায় একেবারে গ্রিন করিডর করে ফেলা হয়। এরপরই অত্যন্ত সুচারুভাবে গোটা প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয়। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পরে অধিকাংশ রোগীই বর্তমানে স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছেন বলে খবর। একাধিক পরিবারের মধ্যে স্বস্তি ফেরালেন তিনি।

শুক্রবার একে একে তাঁর শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ওই হাসপাতালেই এক প্রৌঢ় ভর্তি রয়েছে। তাঁকে হৃৎপিন্ডটি দেওয়া হয়েছে। যকৃৎটি ওই হাসপাতালেই ভর্তি এক দন্ত চিকিৎসকের শরীরে প্রতিস্থাপিত হয়েছে।চার্নক হাসপাতাল ভর্তি এক প্রৌঢ়ার শরীরে কিডনিটি প্রতিস্থাপিত হয়েছে। চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি এক মহিলা ফুসফুসটি পেয়েছেন। অন্যদিকে পিজিতে ভর্তি এক যুবতী কিডনিটি পেয়েছেন। তাঁর কর্নিয়াটাও সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে।