নতুন বছরে ডেটিংয়ের নয়া ট্রেন্ড, বদলে যাবে সম্পর্কের ধরন! দাবি Bumble-এর

নতুন বছরে ডেটিংয়ের নয়া ট্রেন্ড, বদলে যাবে সম্পর্কের ধরন! দাবি Bumble-এর

এসে গিয়েছে নতুন একটা বছর। আর নতুন বছর মানেই আবার নতুন করে সবটা শুরু করার পালা কিংবা নতুন কোনও রেজোলিউশন নিয়ে সেই অনুযায়ী কাজ করা। যাতে গোটা বছরটাই সুন্দর ভাবে কেটে যায়। নয়া বছরে নতুন এবং সেরা কিছু ট্রেন্ড প্রকাশ করেছে উইমেন-ফার্স্ট ডেটিং অ্যাপ Bumble। আসলে এর মাধ্যমেই ২০২৩ সালের ডেটিং ট্রেন্ড নির্ধারিত করা হচ্ছে।

গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে বাম্বল ডেটিং অ্যাপের ট্রেন্ডের লক্ষ্য ছিল রিডিসকভারি বা পুনরায় সন্ধান। আসলে গত বছরে অতিমারীর জেরে ডেটিং ট্রেন্ডে একটা নতুন প্রবণতা দেখা গিয়েছিল। তার মধ্যে অন্যতম ছিল হার্ডবলিং, অ্যালকোহল-ফ্রি ড্রাই-ডেটিংয়ের উত্থান এবং কোনও একটি শখকে ডেটিংয়ের অংশ করে তোলার চাহিদা।

সদ্য-বিদায় নেওয়া ২০২২ সালের দিকে আরও এক বার ফিরে তাকালে দেখা যাবে যে, এই বছরটা আমাদের কিছু শিক্ষা দিয়ে গিয়েছে। সহজ ভাবে বলতে গেলে, আমরা কী চাইছি এবং আমাদের সেই চাহিদা ও এর ক্ষেত্রে বাধা-বিপত্তির কথা আমরা কী ভাবে প্রকাশ করব, সেই বিষয়ে অবগত করেছে আগের বছরটা। তবে বাম্বল-এর বিশ্বব্যাপী গবেষণা বলছে যে, নতুন বছরের লক্ষ্য হবে বর্তমান অবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করা এবং আমাদের ডেটিংয়ের কৌশলের ক্ষেত্রে আরও বেশি করে ভারসাম্য বজায় রাখা।

জনপ্রিয় এই ডেটিং অ্যাপের মতে, ২০২৩ সালে ডেটিংয়ের ক্ষেত্রে আমাদের আরও আশাবাদী হতে হবে। আসলে সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে, প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষই সামনের সময়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছে এবং একটা রোমান্সের ক্ষেত্রে একটা ইতিবাচকতা অনুভব করছে। শুধু তা-ই নয়, ভারতেও এই ট্রেন্ডের ক্ষেত্রে ব্যাপক ভাবে সাড়া মিলছে। সমীক্ষা বলছে, প্রায় ৮১ শতাংশ ভারতীয় নতুন বছরে ডেটিংয়ের বিষয়ে বেশ ইতিবাচক ধারণা এবং মানসিকতা পোষণ করছেন।

তাহলে দেখে নেওয়া যাক, এই নয়া বছরে ডেটিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা কী কী আশা করতে পারি। এ-সবের পরামর্শ অবশ্য দিচ্ছে খোদ ডেটিং অ্যাপই।

ওপেন কাস্টিং:

ডেটিংয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মহিলারা টল, ডার্ক অ্যান্ড হ্যান্ডসাম মানুষ খোঁজেন। তবে এই ধারণা দূর করার সময় এসে গিয়েছে। এটাই মূলত টাইপ কাস্টিং হিসেবে পরিচিত। আসলে শারীরিক গঠন-এর মতো বিষয়টা খুবই সীমিত পরিমাণ বিকল্প দেয়, যা আমাদের কাজে সে ভাবে আসবে না। আর টাইপ কাস্টিংয়ের বিপরীত হল ওপেন কাস্টিং। ফলে এটার উপরই জোর দিতে হবে। আসলে ওপেন কাস্টিং হল, কী ভাবে ৩ জনের মধ্যে ১ জন মানুষ (৩৮ শতাংশ) এখন শারীরিক গঠন বা ‘টাইপ’-এর বেড়াজাল কাটিয়ে ডেটিংয়ের কথা বিবেচনা করছেন। আবার একই সঙ্গে ৪ জনের মধ্যে ১ জন মানুষ (২৮ শতাংশ) এমন ডেটিংয়ের উপর কম জোর দিচ্ছে, যা তাদের কাছ থেকে অন্যরা প্রত্যাশা করছেন। আর অধিকাংশ মানুষ অর্থাৎ ৬৩ শতাংশই এখন ডেটিংয়ের ক্ষেত্রে শারীরিক গঠনের তুলনায় ইমোশনাল ম্যাচিওরিটির উপর জোর দিচ্ছেন।

গার্ডরেলিং:

অতিমারীর পরে অফিস-কাছাড়ি খুলেছে। ফলে সকলেই অফিসে ফিরতে শুরু করেছেন এবং একটা ব্যস্ত সামাজিক জীবনের ঘেরাটোপে ঢুকে পড়ছেন। যার ফলে তাঁরা ভীষণই উচ্ছ্বসিত। আর এর কারণে আমরা আমাদের সীমানার উপর মনোনিবেশ করতে বাধ্য হচ্ছি। অর্ধেকেরও বেশি মানুষ (৫২ শতাংশ) গত বছরে আরও বেশি করে সীমানা গড়ে তুলেছে। এর মধ্যে রয়েছে নিজেদের মানসিক চাহিদা এবং সীমানা সম্পর্কে ধারণা আরও পরিষ্কার হওয়া (৬৩ শতাংশ), সেইখান থেকে নিজেদের বার করে আনার জন্য ইচ্ছে এবং চিন্তা (৫৯ শতাংশ), সামাজিক ভাবে অতিরিক্ত প্রতিশ্রুতি না-দেওয়া (৫৩ শতাংশ)।

প্রেম-জীবনে ভারসাম্য:

চাকরির সুনাম এবং তার জন্য কাজের ব্যস্ততাকে এক সময় পদমর্যাদার প্রতীক হিসেবে দেখা হত। তবে আজ আর সেই দিন নেই। কারণ আজকের দিনে দাঁড়িয়ে প্রায় অর্ধেক মানুষই (৪৯ শতাংশ) কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনে ভারসাম্য আনার বিষয়টাকেই গুরুত্ব দিচ্ছে। আবার সঙ্গীর কাজের ধরনের তুলনায় তাঁর কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্যের উপরেই বেশি জোর দিয়ে থাকে অর্ধেকের বেশি মানুষ (৫৪ শতাংশ)। গত কয়েক বছর ধরে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ (৫২ শতাংশ) ব্রেক এবং বিশ্রামের বিষয়টাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। আর ১০ জনের মধ্যে ১ জন (১৩ শতাংশ) এমন কাউকে ডেট করছেন না, যাঁর চাকরিতে প্রচুর চাপ রয়েছে।

ওয়ান্ডারলাভ বা অন্য শহরে প্রেম:

বর্তমানে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, যেখানে বাম্বল-এ ৩ জনের মধ্যে ১ জন (৩৩ শতাংশ) মানুষ বলছে যে, তারা অন্য শহরে থাকা সঙ্গীর সঙ্গেও ডেট করতে চায়। অর্থাৎ অন্য শহরে গিয়ে সম্পর্কে জড়ানোর ক্ষেত্রে তাদের কোনও আপত্তি নেই। আসলে অতিমারীর কালে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। এমনকী এটাও দেখা গিয়েছে যে, প্রায় ১২ শতাংশ ভারতীয় অন্য দেশে গিয়ে ডেট করার ক্ষেত্রে কোনও আপত্তিই করেননি।

মডার্ন ম্যাসক্যুলিনিটি:

ভারতীয় সমাজ বদলাচ্ছে। লিঙ্গ সাম্য এবং প্রত্যাশার বিষয়ে আলোচনা খোলাখুলিই হচ্ছে। বিশেষ করে Gen Z এবং মিলেনিয়ালদের মধ্যে। গত বছরে ৪ জনের মধ্যে ৩ জন পুরুষ (৭৪ শতাংশ) বলছেন যে, তাঁরা নিজেদের আচরণ পরীক্ষা করেছেন এবং টক্সিক ম্যাসক্যুলিনিটি-র বিষয়ে তাঁদের স্পষ্ট ধারণা তৈরি হয়েছে। ফলে তাঁরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, এই ধরনের বিষয় একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। তবে বাম্বল-এ থাকা প্রায় ৪৭ শতাংশ পুরুষ জানিয়েছেন যে, পুরুষদের আবেগ প্রকাশ করা উচিত নয়, এই ধারণাকে তাঁরা সক্রিয় ভাবেই চ্যালেঞ্জ করছেন। ফলে বাম্বল-এর প্রায় ২৯ শতাংশ পুরুষ নিজেদের পুরুষ বন্ধুদের সঙ্গে নিজের আবেগের বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলছেন। আবার অর্ধেকের বেশি (৫২ শতাংশ) ভারতীয় পুরুষ স্বীকার করেছেন যে, ডেটিং এবং সম্পর্কের ক্ষেত্রে জেন্ডার রোল-এর ধারণা ভাঙায় তাঁরা উপকৃত হয়েছেন।

ডেটিংয়ের ক্ষেত্রে নবজাগরণ:

বাম্বল-এ থাকা ৩ জনের মধ্যে ১ জন (৩৯ শতাংশ) মানুষ গত দুই বছরে নিজেদের বিবাহ কিংবা সম্পর্ক ভেঙে বেরিয়ে এসেছে। এমনটা দেখা গিয়েছে। আর এই বিষয়টা ভারতে কিন্তু ব্যাপক ভাবে প্রচলিত হয়েছে। যেখানে সম্পর্ক থেকে বেরোনো বেশির ভাগ মানুষজন দ্বিতীয় অধ্যায়ের দিকে ঝুঁকছে। আবার ৪২ শতাংশ ভারতীয় প্রথম বারের জন্য ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার করছেন এবং ডেটিংয়ের নতুন ভাষা ও কোড সম্পর্কে অবগত হচ্ছেন।

(Feed Source: news18.com)