বাজেট ঘিরে প্রচুর প্রত্যাশা! সরকারের সামনে কী কী পথ খোলা আছে

বাজেট ঘিরে প্রচুর প্রত্যাশা! সরকারের সামনে কী কী পথ খোলা আছে

নয়া দিল্লি: আর কয়েকদিন পরেই পেশ হতে চলেছে বাজেট। এই বাজেট ঘিরে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দেশের শিল্পপতি প্রত্যেকে তাকিয়ে রয়েছেন। বাজেট এবার কী কী বিষয়ে পরিবর্তন আসা উচিত, সেই বিষয়ে জানিয়েছেন National Committee for Financial Inclusion and Literacy-র প্রাক্তন চেয়ারপার্সন বিন্দু ডালমিয়া।

সম্ভবত কর্পোরেট করের হার আর কমাবেন না অর্থমন্ত্রী। কারণ এটি ২০১৯ সালে শেষবার কমানো হয়েছিল। এই বাজেট অত্যন্ত জনপ্রিয় হবে। কারণ অর্থমন্ত্রী সম্ভবত বিভিন্ন সেক্টরে আয় বাড়ানোর দিকে নজর দেবেন। ফার্মগুলির উপর বেশি নজর দিতে পারেন তিনি। এছাড়াও মধ্যবিত্তদের জন্য ব্যক্তিগত আয়কর কমানোর প্রত্যাশা রয়েছে বাজেটে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন যে আগামী বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় অর্থনীতি বিশ্বব্যাপী মন্দার মুখোমুখি হওয়ার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভবত জিডিপির বর্তমান হার ২.৯ শতাংশ থেকে জিডিপির ৩.৫ শতাংশে বাড়বে। ২০২৩ অর্থবছরে সরকারি ক্যাপেক্স ছিল ৭.৫ লক্ষ কোটি টাকা। গবেষণায় দেখা গেছে, যে সরকারি উন্নয়নে সরকারের ব্যয় করা এক টাকা অর্থনীতিতে ২.৫ টাকা হিসাবে শেষ হয়। কারণ এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অভ্যন্তরীণ খরচ বৃদ্ধি এবং ব্যক্তিগত বিনিয়োগ পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যায়।

ভারত একটি বিশ্বাসযোগ্য বিনিয়োগ গন্তব্য হিসাবে সামনে আসছে এবং এর ফলে FDI শক্তিশালী হতে চলেছে। সফল পিএলআই স্কিমে আইটি হার্ডওয়্যার অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এর পরিধি আরও প্রসারিত করতে হবে। পাশাপাশি খেলনা, আসবাবপত্র, চামড়া, প্রসাধনী ইত্যাদির মতো ব্যাপক খরচের আইটেম উত্পাদনকারী শ্রম সেক্টরগুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আরও বেশি করে কর্মসংস্থানের সুযোগ খুঁজতে হবে।

সম্পদ নগদীকরণ এবং বিগত বছরের বিনিয়োগ লক্ষ্যমাত্রা সম্পূর্ণ করা প্রয়োজন। গ্রামীণ উন্নয়ন এবং সামাজিক ক্ষেত্রের প্রকল্পগুলির যেমন MNREGA, PM কিষাণ, PM আবাস যোজনা, গ্রামীণ, এবং PM গ্রামীণ সড়ক যোজনার দিকে নজর দিতে হবে।

ট্যাক্সেশন ফ্রন্টে কর্পোরেটদের জন্য সাধারণ হার ২৫ শতাংশ হার ভাল বলা যেতে পারে। পাশাপাশি নতুন উত্পাদনকারী সংস্থাগুলির জন্য ১৫ শতাংশ হার রাখা যেতে পারে।

২০৩০ সালের মধ্যে ভারতকে ৯০ মিলিয়ন নন-ফার্ম কর্মক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। কেন্দ্রের কর্মসংস্থান গ্যারান্টি স্কিম কোনও সেক্টরের ২০ মিলিয়ন কর্মীকে কভার করতে পারে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো মানব উন্নয়ন সূচকে বরাদ্দের পরিমাণ বেড়েছে। ভারতের স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় জিডিপির ১.২৮ শতাংশ থেকে ২.৫- ৩ শতাংশে নিয়ে যাওয়া দরকার। আমাদের শিক্ষা ব্যয়কে বর্তমান জিডিপির ৩.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬ শতাংশে নিয়ে যেতে হবে NEP-এর পরামর্শ অনুযায়ী। উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ গবেষণা ও উন্নয়নে ব্যয়কে উৎসাহিত করা উচিত।

ভারতকে একটি উত্পাদন কেন্দ্র হিসাবে সামনে আসার জন্য এবং রপ্তানিতে আরও গতিশীল করার জন্য সরকারকে শুল্ক কাঠামোকে যৌক্তিক করতে হবে। অনুমান করা হচ্ছে যে সরকার সম্ভবত উৎপাদিত পণ্যের উপর আমদানি নির্ভরতা কমাতে বিভিন্ন কাঁচামালের উপর আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেবে, পাশাপাশি দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করার জন্য কিছু ক্ষেত্রে উচ্চ শুল্ক বজায় রাখবে। কাঁচামালের জন্য সর্বনিম্ন বা শূন্য স্ল্যাব এবং মধ্যস্থতাকারী এবং চূড়ান্ত পণ্যগুলির জন্য এর পরিমাণ ২.৫ থেকে ৫ শতাংশ হতে পারে।

বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি শীর্ষে পৌঁছেছে। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি সুদের হার কঠোর করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন নিয়ম নিচ্ছে। ফলে বলা যায়, বিশ্বব্যাপী আমরা একটি মন্দা চক্রের সূচনায় রয়েছি। মন্দা কতটা দীর্ঘ ও গভীর হবে, তা পরিমাপ করা কঠিন। অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব খুব বেশি থাকলে ভারতে জিডিপি হারকে কিছুটা হলেও ধাক্কা দিতে পারে। এর প্রভাব পড়তে পারে সরকারের আয় এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানে।

প্রতিবেদনে লেখা সমস্ত তথ্য অর্থনীতিবিদের ব্যক্তিগত মতামত

(Feed Source: news18.com)