স্বামীর মৃত্যুর পর গ্রহণ করা দত্তক সন্তান পারিবারিক পেনশনের অধিকারী নয়

স্বামীর মৃত্যুর পর গ্রহণ করা দত্তক সন্তান পারিবারিক পেনশনের অধিকারী নয়

নয়াদিল্লি: পারিবারিক পেনশন পাওয়ার অধিকার নিয়ে বড় রায় দিল ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। সম্প্রতি এক মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, কোনও সরকারি কর্মীর মৃত্যুর পর যদি তাঁর স্ত্রী সন্তান দত্তক নেন, তবে সেই সন্তান পারিবারিক পেনশনের অধিকার পাবে না। এই সংক্রান্ত মামলাটিতে এমনই রায় দিয়েছিল বম্বে হাই কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতও সে বিষয়ে একমত হল।

এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে উঠে এসেছে ‘হামা’ বা হিন্দু দত্তক ও রক্ষণাবেক্ষণ আইন ১৯৫৬-র প্রসঙ্গ। এই আইনের ৮ এবং ১২ নম্বর ধারা অনুসারে একজন হিন্দু মহিলা যিনি প্রাপ্তবয়স্ক এবং সুস্থমনস্ক, তিনি একটি পুত্র বা কন্যাকে দত্তক নিতে পারেন।

তবে এই আইনে এমন বিধান রয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে কোনও একজন হিন্দু নারী তাঁর স্বামীর সম্মতি ছাড়া কাউকে দত্তক নিতে পারবেন না। কিন্তু হিন্দু বিধবা, বিবাহ বিচ্ছিন্নাদের ক্ষেত্রে এই শর্ত প্রযোজ্য নয়। এমনকী, স্বামী মানসিক ভাবে অসুস্থ হলেও এই শর্ত প্রযোজ্য হয় না কোনও হিন্দু নারীর উপর।

এর আগে ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর বম্বে হাই কোর্টে এই মামলার রায়েও বলা হয়েছিল, কোনও ব্যক্তির মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রীর দত্তক নেওয়া সন্তান ওই ব্যক্তির পারিবারিক পেনশনের অধিকারী নয়। পরে সেই মামলা সুপ্রিম কোর্ট অবধি গড়ায়। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কেএম জোসেফ এবং বিভি নাগরত্নের ডিভিশন বেঞ্চ বম্বে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আবেদন খারিজ করে আগের রায়ই বহাল রেখেছে। সুপ্রিম কোর্ট তার আদেশে বলেছে, মৃত্যুর পর দত্তক নেওয়া শিশু সেন্ট্রাল সিভিল সার্ভিসেস (পেনশন) বিধি ৫৪(১৪)(বি) এবং ১৯৭২ সালের সিসিএস পেনশন নিয়মের অধীনে পারিবারিক পেনশনের অধিকারী হতে পারে না। বেঞ্চ বলেছে, পারিবারিক পেনশনের সুবিধা শুধুমাত্র সেই দত্তক সন্তানই পেতে পারে, যাকে ওই ব্যক্তি জীবদ্দশায় গ্রহণ করেছিলেন। কর্মচারীর মৃত্যুর পর জীবিত পত্নীর দ্বারা দত্তক নেওয়া সন্তানের ক্ষেত্রে এই পারিবারিক পেনশন আর বাড়ানো সম্ভব নয়।

এক্ষেত্রে পিতার মৃত্যুর পর ভূমিষ্ঠ হওয়ার শিশুর অধিকার একেবারে আলাদা বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছে আদালত। বেঞ্চ স্পষ্টতই জানিয়েছে, পারিবারিক পেনশনের ক্ষেত্রে কর্মচারীর পরিবারের সম্পর্ক অত্যন্ত জরুরি। সরকারি চাকরিজীবীর মৃত্যুর পর দত্তক নেওয়া সন্তানের সঙ্গে ওই ব্যক্তির কোনও সম্পর্কই নেই। দু’টি বিষয়কে অন্য কোনও ভাবে ব্যাখ্যা করার অর্থ পেনশন প্রদান আইনের অপব্যবহার।

(Feed Source: news18.com)