নিউ ইয়র্ক: মৃত্যুর প্রায় দোরগোড়ায় দাঁড়িয়েছিলেন। আর সহ্য করতে পারছিলেন না যন্ত্রণা। চোখের সামনে প্রাণের প্রিয় মানুষটাকে তিল তিল করে কষ্ট পেতে দেখছিলেন স্ত্রী। তাঁরও যেন যন্ত্রণার সীমা পরিসীমা ছিল না। তাতেই চুক্তি। মুক্তির চুক্তি! চুক্তি যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্তি দেওয়ার।
দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ফ্লোরিডার বাসিন্দা বছর সাতাত্তরের জেরি গিল্যান্ড। মাস খানেক আগে অবস্থার এতটাই অবনতি হয় যে, তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করান তাঁর পরিবারের লোকজন। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর। গত কয়েক দিন ধরে স্বামীর জন্য হাসপাতাল-ঘর করছিলেন জেরির স্ত্রী অ্যালেনও। কিন্তু, কোনও চিকিৎসাতেই সাড়া দিচ্ছিল না জেরির শরীর। দিন দিন যেন যন্ত্রণায় কঁকুড়ে যাচ্ছিলেন বৃদ্ধ। আর বুঝি যন্ত্রণা সহ্য হচ্ছিল না।
এর মধ্যেই গত ৩ সপ্তাহ আগে স্ত্রীয়ের সঙ্গে একটা চুক্তি করেন জেরি। বলেন, যদি ২২ জানুয়ারির মধ্যে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হয়, তাহলে, তাঁকে যেন গুলি করে মেরে দেন অ্যালেন। একেবারে সিনেমার মতো, তাই না! প্রাণের মানুষকে কতখানি যন্ত্রণায় দেখলে, তাঁর প্রাণ নিয়ে, তাঁকে মুক্তি দিতে হয়!
গত শনিবার ছিল সেই দিন। এর মধ্যেও অবস্থার উন্নতি হয়নি জেরির। অতএব, চুক্তি পালন করার সময় এসে যায় অ্যালেনের। সকাল সকাল ডেয়টন বিচের হাসপাতালে এসে হাজির হন ছিয়াত্তরের বৃদ্ধা। তাঁকে কেউ বাধাও দেয়নি। এই কদিন এই বৃদ্ধার মুখ হাসপাতালকর্মীদের প্রায় চেনা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, কেউ জানতে পারলেন না, এদিন অ্যালেন, তাঁর সঙ্গে করে এনেছিলেন একটা বন্দুক। তারপর সোজা চলে গিয়েছিলেন ১২ তলায়, যেখানে তাঁর স্বামী মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে।
তারপর, হাসপাতাল কেবিনের মধ্যে দাঁড়িয়েই স্বামী জেরির মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালান অ্যালেন। সব শেষ!
স্বামীকে গুলি করে খুন করার অপরাধে অ্যালেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানিয়েছে, স্বামীকে মারার পরে নিজেকেও গুলি করে শেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল অ্যালেনের। গুলির আওয়াজ শুনে হাসপাতালকর্মীরা এসে যাওয়াও তাতে বাধা পড়ে। তবে কিছুতেই হাত থেকে বন্দুক নামাতে চাইছিলেন না অ্যালেন। পরিস্থিতি সামলাতে দ্রুত পৌঁছয় পুলিশ। তারপর , ফ্লাশ ব্যাঙ ডিভাইস ব্যবহার করে অ্যালেনকে মুহূর্তের জন্য অন্যমনস্ক করা হয়, আর তখনই বৃদ্ধার হাতের বন্দুক ছিনিয়ে নেন পুলিশকর্মীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে তীব্র অবসাদে রয়েছেন অ্যালেন।