কলকাতা: মাসের শুরুতেই বেতনের একটা বড় অংশ ইএমআই, বাড়ি ভাড়া, বাচ্চাদের স্কুলের মেটাতে চলে যায়। এরপর আসে মুদিখানা, কাঁচা বাজার। সপ্তাহে একবার বাইরে খাওয়াদাওয়া, ঘুরতে যাওয়াতেও খরচ হয়। এসবের পর সঞ্চয় বলে আর কিছু থাকে না। মাসের খরচ চালানোটাও অনেক সময় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, খরচ বাঁচাব কী করে? সঞ্চয় করব কীভাবে? এখানে তেমনই কিছু টিপস দেওয়া হল। এগুলো মেনে চললে দেখা যাবে প্রতি মাসে বেশ কিছু টাকা বেঁচে যাচ্ছে, এতদিন যা বাড়তি খরচ হত। ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার জন্য বেঁচে যাওয়া এই টাকা ভাল কোনও জায়গায় বিনিয়োগ করা যায়। যাতে মেয়াদ শেষে মোটা টাকা রিটার্ন মিলবে। এবার জেনে নেওয়া যাক সেই কৌশল।
ব্যবহার না করা সাবস্ক্রিপশন বাতিল করতে হবে: আমেরিকানরা মাসিক সাবস্ক্রিপশনের জন্য কত টাকা খরচ করেন তা খুঁজে বের করতে সি+আর রিসার্চ একটি সমীক্ষা চালায়। সেখানে প্রশ্ন করা হয়েছিল স্ট্রিমিং অ্যাপস, পোশাক, বিউটি প্রোডাক্ট এবং ফুড সাবস্ক্রিপশনের পিছনে তাঁরা গড়ে কত টাকা ব্যয় করেন? উত্তর ছিল ৮৬ ডলার। আসল সত্য হল, আমেরিকানরা প্রতি মাসে সাবস্ক্রিপশনের জন্য ২১৯ ডলার খরচ করেন। কিন্তু এর মধ্যে অনেক সাবস্ক্রিপশন ব্যবহারই করা হয় না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাঙ্ক বা ক্রেডিট কার্ড স্টেটমেন্টের মাধ্যমে সেই সব সাবস্ক্রিপশনগুলো খুঁজে বের করতে হবে যেগুলো কোনও কাজেই লাগে না কিন্তু এখনও টাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে। এমন অর্ধেক সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে দিলেও প্রতি মাসে অনেক টাকা সঞ্চয় হবে।
ক্রেডিট কার্ডের সুদে নিয়ন্ত্রণ: কখনও মনে হয়েছে, একটা ক্রেডিট কার্ড কোম্পানি এত বিভিন্ন ধরনের কার্ড অফার করে কেন? কনজিউমার ফিনান্সিয়াল প্রোটেকশন ব্যুরো অনুসারে, আমেরিকানরা ক্রেডিট কার্ডের সুদ এবং ফি বাবদ প্রতি বছর প্রায় ১২০ বিলিয়ন ডলার প্রদান করেন। ক্রেডিট কার্ড প্রয়োজনীয়। কিন্তু এতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সব টাকা বেরিয়ে যেতে পারে। ২০২৩ হল বিদ্যমান ব্যালেন্স পরিশোধের উপর ফোকাস করার বছর। এর অর্থ আগে বিল পরিশোধ করে তারপর কার্ড ব্যবহার। যত বেশি ব্যালেন্স শোধ করা হবে তত কম সুদের টাকা মেটাতে হবে। যদিও এটি একমাত্র উপায় নয়, ঋণ দ্রুত পরিশোধ করার একটি উপায় হল স্নোবল পদ্ধতি ব্যবহার করা।
খাবার নষ্ট করা চলবে না: বাজার থেকে যে খাবার কেনা হয় তার ২০ শতাংশই ফেলে দিতে হয়। ধরা যাক কেউ প্রতি মাসে ১০০০০ টাকার খাবার কেনেন। এর মধ্যে ২০০০ টাকার খাবার ফেলে দিতে হয়। কয়েকটা জিনিস মেনে চললেই খাবার নষ্ট হওয়ার হাত থেকে বাঁচানো যায়।
– দোকানে যাওয়ার আগে রেফ্রিজারেটর এবং ভাঁড়ার দেখে নিতে হবে।
– শহর ছেড়ে হঠাৎ কোথাও গেলে বা যদি বোঝা যায় আগামী কয়েকদিন ফ্রিজের খাবার খাওয়া হবে না, তাহলে বন্ধু বা প্রতিবেশীকে সেটা দিয়ে যাওয়া যায়।
– ফর্দ ধরে কেনাকাটা করা উচিত। খেয়াল রাখতে হবে যাতে কোনও খাবার বাড়িতে অতিরিক্ত মজুত করা না হয়।
বিমার জন্য অতিরিক্ত অর্থপ্রদান নয়: প্রত্যেকেরই বছরে একবার বিমা পলিসি পর্যালোচনা করা উচিত। সেখানে দুটি জিনিস দেখতে হবে। প্রথমত, বিমা কভারেজ এখনও প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট কি না। দ্বিতীয়ত, অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করতে হচ্ছে না তো! একই বিমা কোম্পানিতে বছরের পর বছর ধরে বিনিয়োগ করলে একই স্তরের কভারেজের জন্য আরও ভাল হার পাওয়া যেতে পারে। এবং ইতিমধ্যেই যদি এটা না করা হয়ে থাকে তাহলে বাড়ি এবং অটো বিমা একত্র করে বছরে হাজার হাজার টাকা বাঁচানো সম্ভব।
ক্যাশ ব্যাক কার্ড বুঝেশুনে নিতে হয়- সর্বোচ্চ ক্যাশ ব্যাক কার্ডে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ০ শতাংশ ইন্ট্রো এপিআর রয়েছে: ভুল ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করলে হাজার হাজার টাকা জলে যাবে। নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী যেটা সেরা সেটা বেছে নিতে হবে। বেশ কিছু কার্ড রয়েছে যাতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ০ শতাংশ ইন্ট্রো এপিআর, ৫ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক অফার পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, কোনওরকম বার্ষিক ফি-ও দিতে হয় না। অনেক আর্থিক বিশেষজ্ঞও এমন কার্ড ব্যবহার করেন।