পাচারের নয়া কৌশল? পুলিশের চোখে ধুলো দিতেই ট্রেন থেকে ফেলা হল কচ্ছপ বোঝাই ব্যাগ

পাচারের নয়া কৌশল? পুলিশের চোখে ধুলো দিতেই ট্রেন থেকে ফেলা হল কচ্ছপ বোঝাই ব্যাগ

বর্ধমান: পুলিশের চোখে ধুলো দিতে নিত্যনতুন কৌশল নিচ্ছে পাচারকারীরা। সে কারণেই কি ট্রেন থেকে লাইনের ধারে ফেলা হয়েছিল কচ্ছপ বোঝাই ব্যাগগুলি? খতিয়ে দেখছে পুলিশ আরপিএফ ও বন দফতর। তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা মনে করছেন, কোন জায়গায় ফেলা হবে ব্যাগগুলি তা আগে থেকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছিল।কিন্তু সেই ব্যাগ সংগ্রহ করতে দেরি হয়ে যাওয়ায় তা স্থানীয় বাসিন্দাদের নজরে চলে আসে। সে কারণেই উদ্ধার করা গিয়েছে সাড়ে সাতশোর ওপর কচ্ছপ।

পাচারের আগেই বর্ধমানে বিপুল পরিমাণে কচ্ছপ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে ৭৫২টি কচ্ছপ ।তালিত ও খনা জংশনের মাঝে  ২৯টি ব্যাগ ভর্তি ৭৫২টি কচ্ছপ উদ্ধার করে দেওয়ানদিঘি থানার পুলিশ ও বর্ধমান আরপিএফ।

শনিবার সকালে তালিত ও খনা জংশনের মাঝে ব্লক সেকশন এলাকায় প্রচুর পরিমাণে লাগেজ ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। ব্যাগগুলিকে বেশ কয়েকজন গাড়িতে তোলার চেষ্টা করছে দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। তাঁরাই খবর দেন দেওয়ানদিঘি থানার পুলিশকে।পরে সেখানে আসে বর্ধমান আরপিএফও।পুলিশকে দেখে পাচারকারীরা চম্পট দিলেও দেওয়ানদিঘি থানার পুলিশ উদ্ধার করে ২২ টি ব্যাগ, যাতে প্রায় ৫৬৮টি কচ্ছপ ছিল। অন্যদিকে আরপিএফ-ও উদ্ধার করে ৭ টি ব্যাগ, যাতে প্রায় ১৮৪টি কচ্ছপ ছিলো।

তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা মনে করছেন, ট্রেনে এই কচ্ছপগুলি নিয়ে আসা হচ্ছিল। বর্ধমান স্টেশনে তল্লাশিতে ধরে ধরা পড়ার আশঙ্কায় তা তালিত স্টেশনের কাছে ফেলা হয়েছিল। পাচারকারীদের অন্য একটি দল সেই কচ্ছপ বোঝাই ব্যাগগুলি সংগ্রহ করবে, এমনটাই ছক করা ছিল বলে অনুমান। সেই মতো কয়েকজন সংগ্রহ করতেও এসেছিল। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা দেখে ফেলায় তারা চম্পট দেয়।

চলন্ত ট্রেন থেকে কচ্ছপ গুলি ফেলা হয়েছিল বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু একই জায়গায় এতগুলি ব্যাগ চলন্ত ট্রেন থেকে কীভাবে ফেলা সম্ভব হল, সে বিষয়টিও ভেবে দেখছেন তাঁরা। তাঁদের মতে, পাচারকারীরা সংখ্যায় বেশ কয়েকজন ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। সবাই একসঙ্গে ব্যাগগুলি ফেলে দেয়। দাঁড়ানো ট্রেন থেকে ফেলা হলে পাচারকারীরাও নেমে যেতে পারত। কিন্তু তেমনটি হয়নি।

বন দফতর ও রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণত উত্তর প্রদেশের দিক থেকে আসা ট্রেনগুলি থেকেই এই ধরনের কচ্ছপ উদ্ধার হয়।  এইসব কচ্ছপ রেলপথে বাংলাদেশ হয়ে বিভিন্ন দেশে পাচার হয়ে যায়। এ ছাড়াও এ রাজ্যে লুকিয়ে কচ্ছপের মাংস বিক্রি হয়। বারবার রেল পথে পাচার ব্যর্থ হওয়ায় সড়কপথে কচ্ছপ পাঠানোর চেষ্টাও চালিয়েছিল এই কাজে যুক্তরা। কিন্তু সড়কপথেও ট্রাক বোঝাই কচ্ছপ এর আগে উদ্ধার হয়েছে। সে কারণেই পরিকল্পনা বদল করে বর্ধমান স্টেশনে ঢোকার মুখে ট্রেন থেকে লাগেজ ব্যাগে বোঝাই কচ্ছপ ফেলা হয়েছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

(Feed Source: news18.com)