এস,এম শাহাদৎ হোসাইন, গাইবান্ধা : গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ থেকে পূর্বদিকে এক কিলোমিটার দূরে রামডাকুয়া গ্রামের মূল রাস্তা থেকে উত্তরদিকে নেমে যাওয়া রাস্তাটির দুই ধারে ছিল ৫০ থেকে ৬০টি বিশাল আকৃতির শতবর্ষী আমগাছ। সঙ্গে ছিল দেবদারু, বকুল ও লিচুসহ অনেকগুলো মহিরুহ বৃক্ষ। ১৯৮৮ সালের প্রলয়ঙ্করী বন্যায় সর্বনাশী তিস্তা তার ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। ভেঙে তছনছ করে দেয় ওই জনপদ। একে একে ভেঙে যায় মসজিদ, মাদ্রাসা ও বিদ্যালয়। সেই সঙ্গে বিলীন হয়ে যায় আমের সাইর নামে ছায়া ঢাকা, পাখি ডাকা ঐতিহ্যবাহী রাস্তাটি।
অধিবাসীরাও যে যেভাবে পারেন বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়ে শুরু করেন বসবাস। সেই ঘটনার প্রায় ৩ দশক পর স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমের ফলে দৃষ্টিনন্দন রূপে ফিরেছে সেই মেঠোপথ। ১৯৮৮ সালের বন্যার পর তিস্তা ব্যারাজ নির্মাণের ফলে ২০০০ সালের দিকে জেগে উঠে চর। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অধিবাসীরা আবার ফিরতে শুরু করেন নিজ ভূমিতে। স্কুল ও মাদ্রাসা ফেরানো সম্ভব না হলেও আগের জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে একটি সুদৃশ্য মসজিদ।
হারানো ঐতিহ্য ফেরাতে প্রায় একযুগ আগে মসজিদ কমিটি ও স্থানীয়দের উদ্যোগে এবং স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে মাটি কেটে পুনরায় তৈরি করেন সেই মেঠোপথ। রাস্তাটি তৈরির বছর দুয়েক পর ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্য এ রাস্তার দুই ধারে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৩০০টি আমগাছ লাগানো হয়। গাছগুলো বড় হয়ে রাস্তাটি এখন এক দৃষ্টিনন্দন রূপ নিয়েছে। হাতছানি দিয়ে ডাকছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। আর সেই ডাকে সাড়া দিয়ে প্রকৃতির অপরূপ শোভা উপভোগ ও সময় কাটানোর জন্য ছুটে আসছেন অনেকেই। রয়েছে একটি চা দোকানও। চায়ের কাপে চুমু আর গল্প করে সময় কাটাতে দেখা যায় অনেককেই।
চা দোকাদার রফিকুল ইসলাম বলেন, ৮৮ সালের দিকে নদী ভাঙনে শত বছরের ঐতিহ্য আম গাছর সারির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যায়। এ এলাকার বাসিন্দা জেলা শিক্ষা অফিসার খন্দকার আলাউদ্দিন আল আজাদ ও অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার নুরুল ইসলামের সহযোগিতায় এবং স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে মাটি কেটে ১০/১২ বছর আগে তৈরি করা হয় রাস্তাটি। লাগানো হয় ৩০০ আমগাছ। প্রতিদিন দেড় থেকে দুইশত লোক আসে সময় কাটাতে। আসেন বিভিন্ন অফিসের লোকজনও। চা ভালো হওয়ায় বিক্রিও হয় বেশ। রাস্তাটি পাকাকরণ ও কিছু বসার জায়গা করতে পারলে আরো দৃষ্টিনন্দন হতো।
(Feed Source: sunnews24x7.com)