‘সৃষ্টিকর্তা নন, জাতপাত তৈরি করেন পণ্ডিতরাই’, বললেন সঙ্ঘ প্রধান ভাগবত

‘সৃষ্টিকর্তা নন, জাতপাত তৈরি করেন পণ্ডিতরাই’, বললেন সঙ্ঘ প্রধান ভাগবত

মুম্বই: পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের আগে জাতপাত নির্বিশেষে সমাজের সব স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছনোর নির্দেশ দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। সেই আবহেই রবিবার জাতপাতের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শোনা গেল রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সেবক সঙ্ঘের (Rashtriya Swayamsevak Sangh) প্রধান মোহন ভাগবতকে (Mohan Bhagwat)। জানালেন, জাতপাত আসলে পুরোহিতদের তৈরি। ঈশ্বরের হাতে এমন কোনও বিভেদের সৃষ্টি হয়নি।

জাতপাতের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শোনা গেল রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সেবক সঙ্ঘের প্রধানকে

সন্ত শিরোমণি রোহিদাসের ৬৪৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রবীন্দ্র নাট্য মন্দিরে একটি জমায়েতের উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন ভাগবত। সেখানেই এমন মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, “ঈশ্বর একটাই কথা বলেছেন যে, তাঁর কাছে সকলের সমান কদর।  জাতি-বর্ণের কোনো বিভেদ নেই। সমাজে শ্রেণি তৈরি করেন পণ্ডিতরাই, যা ভুল ছিল। আমাদের সমাজের এই বিভেদেরই ফায়দা তোলে বহিঃশত্রুরা। তার জন্যই বার বার আক্রমণ হয়েছে। বাইরে থেকে এসে আমাদের মধ্যেকার বিভেদকে কাজে লাগিয়ে ফায়দা তুলেছে কিছু মানুষ।”

ভারতে নাগরিকদের মধ্যে চেতনা এবং বিবেক বোধ একই বলেও মন্তব্য় করেন ভাগবত। তাঁর কথায়, “সংসারে থেকে সমাজের প্রতিও দায়িত্ববোধ তৈরি হয় আমাদের মনে। প্রত্যেক কাজই যখন সমাজের বৃহত্তর কল্যাণের সঙ্গে জড়িয়ে, সেখানে কোনও কাজ বড়, ছোট বা আলাদা হতে পারে না। সৃষ্টিকর্তার কাছে আমরা সকলেই সমান। তাঁর কাছে কোনও জাতপাত বা শ্রেণি নেই। পণ্ডিতরা এই বিভাজন তৈরি করেন, যা ভুল ছিল।”

তুলসিদাস, কবীর এবং সুরদাসের চেয়ে সন্ত রোহিদাস অনেক বেশি মহান ছিলেন বলেও মন্তব্য করেন ভাগবত। তিনি বলেন, “রোহিদাস ব্রাহ্মণদের মন জয় করতে পারেননি যদিও, কিন্তু বহু মানুষের মন জিতে নিয়েছিলেন। ঈশ্বরের মানুষকে আস্থাবান করে তুলেছিলেন। তাই ওঁকে সন্ত বলা হয়।”

শুধু নিজের পেট ভরানোই ধর্ম হতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন ভাগবত। তাঁর কথায়, “নিজের কাজ করে যেতে হবে। নিজের ধর্ম মেনেই করে যান। সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, সমাজের উন্নতির জন্য কাজ করতে হবে। ধর্ম আসলে তা-ই। এই চিন্তা এবং আদর্শে ভর করেই সন্ত রোহিদাসরা এগিয়ে আসেন।”

শুধু নিজের পেট ভরানোই ধর্ম হতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন ভাগবত

ভাগবত আরও বলেন, “চারপাশে কী ঘটছে, নজর থাক তার উপর। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই নিজের ধর্ম ত্যাগ করবেন না। ধর্মীয় বার্তা পৌঁছে দেওয়ার রীতি ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু সব ধর্মের বার্তা মূলত একই। অন্যের ধর্মকে খাটো না করেই নিজের ধর্ম পালন করে যেতে হবে।”

(Feed Source: abplive.com)