নিজের ৮ আত্মীয়কেও টাকার বিনিময়ে চাকরি! কুন্তলকে জেরায় উঠে এল বিস্ফোরক তথ্য

নিজের ৮ আত্মীয়কেও টাকার বিনিময়ে চাকরি! কুন্তলকে জেরায় উঠে এল বিস্ফোরক তথ্য

কলকাতা: মানিক-কুন্তল জুটি যা করেছেন, তা কারওকে খুন করার চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। শেক্সপিয়রের ‘ম্যাকবেথ’-র প্রসঙ্গ তুলে আদালতে সওয়াল ইডি-র আইনজীবীর। ইডি-র দাবি, পশ্চিমবঙ্গের গোটা শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে ছেলেখেলা করেছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। জনগণের বিরুদ্ধে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র করেছেন এই দুই তৃণমূল নেতা।

এদিন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে বড় পর্দাফাঁস করেছে ইডি। আদালতে ইডি-র আইনজীবী জানিয়েছেন, কারা কারা টাকার বিনিময়ে চাকরি পাওয়ার জন্য পরীক্ষা দিচ্ছেন, তার সংকেত লুকনো থাকত OMR শিটের মধ্যেই। অনেক প্রশ্নের মধ্যে কেবলমাত্র দুটো নির্দিষ্ট প্রশ্নেরই নির্দিষ্ট উত্তর দেওয়ার জন্য আগে থেকেই বলে দেওয়া হত তাঁদের। বাকি উত্তরগুলোর জায়গা ফাঁকা রাখতে বলা হত। এটা করলেই কুন্তলরা বুঝতে পারতেন এরাই ‘ক্যান্ডিডেট’ (টাকার বিনিময়ে চাকরি প্রার্থী)। কুন্তল ঘোষকে জেরায় নাকি এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে ইডি।

ইডি-র দাবি, OMR শিটের বিষয়ে কুন্তল জেরায় নাকি জানিয়েছে, তাঁর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল মানিকের। ষড়যন্ত্রে মানিকের শরিক ছিলেন কুন্তল। বিনিময়ে মিলত চাকরি বিক্রির টাকার পার্সেন্টেজ। এই সওয়াল তুলেই এদিন মানিক ভট্টাচার্যের জামিনের বিরোধিতা করে ইডি।

কুন্তল ঘোষকে ইডি জেরা করে নাকি জানতে পেরেছে, নিজের আটজন আত্মীয়কে  OMR শিট-এর সাংকেতিক কোডের মাধ্যমে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলেন তিনি। তবে, তাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন কি না, তা অবশ্য খতিয়ে দেখছে ইডি। নিজের আত্মীয়দের থেকে কত টাকা নিয়েছিল কুন্তলরা, সেটাও জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। এই OMR শিট কারচুপিতে মানিক ভট্টাচাৰ্যের সঙ্গে কুন্তল সরাসরি যুক্ত বলে আদালতে দাবি করেছে ইডি।

ইডি-র আইনজীবীর দাবি, মানিক ভট্টাচাৰ্য গোটা শিক্ষাব্যবস্থাটা দুর্নীতিতে ভরিয়ে দিয়েছিলেন। মানিকের জামিনের বিরোধিতা করতে গিয়ে ম্যাকবেথ নাটকের কথা তুলে ধরেন তিনি। ইডি-র আইনজীবী বলেন, “বৃহত্তর জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন এঁরা। মানিক-কুন্তল একই সঙ্গে কাজ একই কাজ করেছেন। যা করেছেন, তা খুনেরই সমান। একটা সময় ছিল বাংলায় শিক্ষা ছিল সেরা। এখন বাংলায় পড়তে গিয়ে ভয় পাচ্ছে পড়ুয়ারা।”

পাল্টা মানিকের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্তের জবাব, “OMR শিটের বিষয়ে সব অভিযোগ মিথ্যে। ইডি-র তদন্ত কবে শেষ হবে, তা ইডি-ও জানেনা। সব দিক ভেবে জামিন দেওয়া হোক।” যদিও দুপক্ষের সওয়াল শোনার পরেও মানিকের জামিনে সবুজ সঙ্কেত দেয়নি আদালত।

(Feed Source: news18.com)