তুরস্ক: সোমবারের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পরে কেটে গিয়েছে ৮০ ঘণ্টা! ধীরে ধীরে ক্ষীণ হয়ে এসেছে ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে জীবিত কারও উদ্ধারের ন্যূনতম সম্ভাবনা। কিন্তু এর মধ্যেই মিরাকল! উদ্ধার করা গেল মাত্র ছ’বছরের নওরিন-কে। আর নওরিনের উদ্ধারকাজের পিছনে যাঁদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়ে গেল, তারা হল রোমিও এবং জুলি।
তুরস্কের ভূমিকম্পের পরে সে দেশে NDRF কর্মীদের বেশ কয়েকটি দল পাঠিয়েছে ভারত। আর এই দলের সঙ্গী হয়েছে ৬টি কুকুর। নাম–রোমিও, জুলি, rambo, হানি, বব এবং রক্সি। তুরস্কের উপদ্রুত এলাকায় জীবিতদের খোঁজে উদ্ধারকারী দলের সঙ্গেই অক্লান্ত পরিশ্রম করে করে চলেছে এই সারমেয় বাহিনী।
সেই পরিশ্রমেরই ফসল দেখা গেল শুক্রবার। এই কদিন ধরেই কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপের নীচে প্রাণের খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছিল রোমিও-রা। এদিন গাজিয়ান্তেপ শহরের একটি ধ্বংসস্তূপের কাছে গিয়েই অস্থির হতে শুরু করে জুলি। তার হ্যান্ডলারকেও সেই কথা ঠারেঠোরে জানান দেয় সে। এরপরে রোমিও-কেও ব্যাপারটা খতিয়ে দেখতে নিয়ে আসা হয় ওই ধ্বংসস্তূপের কাছে। সে-ও সেই একই সঙ্কেত দেয়। তখনই উদ্ধারকারীরা নিশ্চিত হন, এই ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও জীবিত কোনও প্রাণের হদিস রয়েছে।
যন্ত্র এনে একে একে সরানো হয় কংক্রিটের চাঁই। একে একে বেরিয়ে আসে ৬ জন পূর্ণাঙ্গ মানুষের দেহ। সেখানেই মৃতদেহগুলির সঙ্গেই ছিল ৬ বছরের ছোট্ট নওরিন-ও। প্রথমে উদ্ধারকারীরা ভবেছিলেন, এই শিশুটিও বোধহয় বেঁচে নেই। কিন্তু উদ্ধারকারীরা তাকে কোলে তুলে নিতেই চোখ খোলে সে। এরপরেই দ্রুত তাঁকে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাসপাতালে।
NDRF দলের DG অতুল কারওয়াল জানিয়েছেন, ছ’ বছরের ছোট্ট নওরিনকে উদ্ধারের পিছনে দায়ী ৬ বছরের ল্যাব্রেডর জুলি। নাহলে ভূমিকম্পের ৮০ ঘণ্টা পরে এমন অলৌকিক উদ্ধার বোধহয় সম্ভব হত না। যদিও, ভূমিকম্পে নওরিনের পরিবারের সমস্ত সদস্যেই মারা গিয়েছেন বলে জানান তিনি।
গত সোমবার রিখটার স্কেলে ৭.৮ মাত্রায় কেঁপে উঠেছিল তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা। চলতি দশকে এটিই সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যেই এই বিপর্যয়ের ঘটনায় প্রায় ১৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।