কেন কোহিনুরখচিত বিতর্কিত মুকুট পরবেন না কুইন কনসর্ট ক্যামিলা?

কেন কোহিনুরখচিত বিতর্কিত মুকুট পরবেন না কুইন কনসর্ট ক্যামিলা?

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কোহিনুর নিয়ে কান্ডের শেষ নেই। কোহিনুরের ইতিহাস যেন প্রতিদিন নতুন করে লেখা হচ্ছে। রাজা চার্লসের অভিষেক নিয়ে আবার আলোচনায় ফিরল কোহিনুর। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পরে ব্রিটেনের রাজা হয়েছেন তাঁর ছেলে তৃতীয় চার্লস। দায়িত্ব নিলেও এখনও আনুষ্ঠানিক অভিষেক হয়নি চার্লসের। সেই দিন ধার্য হয়েছে আগামী ৬ মে। ওই দিন লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে বসবে চার্লসের অভিষেকের রাজকীয় আসর। তবে এই আসরে চার্লসের স্ত্রী কুইন কনসর্ট ক্যামিলার মাথায় দেখা যাবে না বহুচর্চিত সেই কোহিনুর হিরেখচিত মুকুট।

বাকিংহাম প্রাসাদের পক্ষ থেকে কদিন আগে বলা হয়েছে, চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে কুইন কনসর্ট ক্যামিলা কোহিনুরখচিত মুকুট না পরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর পরিবর্তে তিনি রানি মেরির ব্যবহৃত মুকুট পরবেন। এর অর্থ, ওই মুকুটে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মসৃণ হিরের একটি রেপ্লিকা থাকতে পারে। আসল কোহিনুর হিরেটি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মায়ের মুকুটে রয়েছে।

টাওয়ার অব লন্ডনে দর্শনার্থীদের জন্য সাজিয়ে রাখা ছিল রানি মেরির এই মুকুটটি। ৬ মে-র অনুষ্ঠানের কথা ভেবে সেটি সেখান থেকে সাময়িক সরিয়ে আনা হয়েছে। সেটিকে দ্রুত প্রস্তুত করা করা হচ্ছে ওই দিনের জন্য। বাকিংহাম প্যালেস জানিয়েছে, সাম্প্রতিক ইতিহাসে এই প্রথম অভিষেক-অনুষ্ঠানের জন্য রানি মেরির মুকুট বেছে নেওয়া হল।

রাজপরিবারের নিয়ম অনুযায়ী, রানিরা কোহিনুরের মুকুট মাথায় পরেই সিংহাসনে বসেন। ২০২২ সালের গোড়ার দিকে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ঘোষণা করেছিলেন, তাঁর মৃত্যুর পরে চার্লস সিংহাসনে বসলে রাজার স্ত্রী হিসেবে ‘রানি’ হবেন ক্যামিলা এবং তখন ক্যামিলাই কোহিনুরখচিত রাজমুকুটের উত্তরাধিকারী হবেন।

কোহিনুর নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা বহুদিন থেকেই চলছে। ইতিহাসখ্যাত কোহিনুর হিরেটি ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে ব্রিটেনে গিয়েছিল। ইংরেজরা ভারত থেকে ছিনিয়ে কোহিনুর নিয়ে চলে গিয়েছিল, বা এটি চুরি করেছিল– এরকম একটা ধারণা নানা মহলেই আছে। তবে ভারত সরকার ২০১৬ সালে বলেছিল, ব্রিটেন কোহিনুর চুরি করেনি বা জোর করেও নেয়নি। পাঞ্জাবের তৎকালীন মহারাজা রঞ্জিত সিংহের উত্তরাধিকারীরা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে এটি উপহার দিয়েছিলেন। যদিও ভারত সরকারের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত হয়নি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এএসআই)। তারা বলেছে, রানি ভিক্টোরিয়ার হাতে কোহিনুর তুলে দিতে একরকম বাধ্য করা হয়েছিল পাঞ্জাবকে। ১৮৪৯ সালে যে লাহোর চুক্তি হয়, সেই চুক্তি অনুযায়ী, লাহোরের মহারাজা কোহিনুর হিরে ইংল্যান্ডের রানিকে দিতে বাধ্য ছিলেন। অনেক পথঘুরে অনেকের হাত হয়ে অবশেষে রঞ্জিত সিংহের হাতে কোহিনুর এসে পৌঁছেছিল ১৮১৩ সালে। ১৮৩৯ সালে রঞ্জিত সিংহ প্রয়াত হন। এটি শেষমেশ ব্রিটিশদের হাতে এসে পৌঁছয় ১৮৪৯ সালে। তারপর থেকে এটি তাদের হেফাজতেই থেকেছে। যদিও বিভিন্ন সময় ঐতিহাসিক কোহিনুর ফেরত চেয়েছে ভারত। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পরেও ভারতীয়দের মধ্যে কোহিনুর ফেরতের বিষয়ে আর একবার দাবি ওঠে।

(Feed Source: zeenews.com)