উৎপল পরাশর
৮৫ বছর বয়সী অসমের এক প্রাক্তন সেনা জওয়ান তথা গোর্খাকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রায় ১১ বছর আগে এই ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার সেই ঘটনায় কার্যত অসন্তোষ প্রকাশ করেছে গুয়াহাটি হাই কোর্ট। বিচারপতি অচিন্ত্য এম বি বরুয়া ও রবিন পুখন গোটা প্রক্রিয়ায়, মাথা খাটানো হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন। এক নির্বাচনী আধিকারিককে এজন্য ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি ওই ব্যক্তিকে ডাউটফুল ভোটার বা ডি ভোটার বলে গণ্য় করেছিলেন।
এদিকে ১৯৯৯৭ সালে জগৎ বাহাদুর ছেত্রী নামে ওই ব্যক্তিকে ডি ভোটার হিসাবে ঘোষণা করা হয়। দিসপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ইলেকটোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারের মতামত অনুসারে তাকে এভাবে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে অসমের জিওলজি ও মাইনিং বিভাগের এক আধিকারিক অবশ্য ঘটনাস্থলে গিয়ে জানিয়েছিলেন যে ১৯৩৭ সালে অসমের ডিব্রুগড়েই জন্মেছিলেন ছেত্রী। তা সত্ত্বেও তাঁকে ডি ভোটার হিসাবে গণ্য করা হয়।
সোমবার আদালত তার নির্দেশে উল্লেখ করেছে, ছেত্রী যদি ১৯৩৭ সালে ডিব্রুগড়ে জন্মে থাকেন তবে তিনি বাংলাদেশ থেকে এসেছেন এটা বলার কোনও যুক্তিই নেই। আসলে ইআরও মাথা না খাটিয়েইএটা করেছিলেন।
এদিকে অসমের এনআরসি ও অসম রেকর্ড ১৯৮৫ অনুসারে নিয়ম অনুসারে, ২৫শে মার্চ ১৮৭১ সালের পরে যারা রাজ্যে এসেছেন তারা নথিপত্র না দেখাতে পারলে তাদের অনুপ্রবেশকারী হিসাবে গণ্য় করা হয়। তাদেরকে বিদেশি হিসাবে গণ্য় করা হয়। তাদের ডি ভোটার হিসাবে গণ্য করা হয়।
এদিকে ইআরওর রেফারেন্সের উপর ভিত্তি করে ছেত্রীর বিরুদ্ধে ২০০০ সালে মামলা করা হয়েছে। শুনানি চলাকালীন জানা যায় ১৯৬৩ সাল থেকে ২০০১ সাল থেকে ৩৮ বছর ধরে ছেত্রী ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। এদিকে আদালতের পর্যবেক্ষণ যেভাবে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তা আইন মেনে হয়নি।
আদালত এবার ইআরও এবং ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের মতামত খারিজ করে দিয়েছে। এর সঙ্গেই কোনও যুক্তিগ্রাহ্য কারণ ছাড়াই ছেত্রীকে সমস্যার মধ্য়ে ফেলা ও যুক্তি দিয়ে বিষয়টি না দেখার জেরে ডিসপুরের ওই ইআরওকে ১০হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই টাকা ছেত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হবে।
আদালত জানিয়েছে, অসম ইলেকশন কমিশনার প্রয়োজনে সেই সময় কর্মরত ইআরওর কাছ থেকে জরিমানার টাকাটা তুলতে পারেন। অন্যদিকে ছেত্রী যাতে নাগরিক হিসাবে সমস্ত অধিকার পান সেটাও নিশ্চিত করার কথাও বলেছে আদালত।
(Feed Source: hindustantimes.com)