কোভিডে মৃত্যুর ভয়, ৩ বছর ঘরে আটকে মা-ছেলে; শেষমেশ উদ্ধার!

কোভিডে মৃত্যুর ভয়, ৩ বছর ঘরে আটকে মা-ছেলে; শেষমেশ উদ্ধার!

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: প্রায় তিন বছর পর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এ মহিলা ও তাঁর ছেলেকে। শিশু কল্যাণ কমিটি ও পুলিস-সহ একদল চিকিৎসকের যৌথ প্রচেষ্টায় তাদের দুজনকে বের করা হয়। কোভিডে মৃত্যু হতে পারে এই আশঙ্কায় মহিলা ও তার ছেলে তিন বছর বাড়ি থেকে বেরোননি তারা। পুলিস জানালো, সেক্টর-২৮-এর মারুতি বিহারের ব্লক-এ-র একটি ফ্ল্যাট থেকে এক মহিলা ও তাঁর ১০ বছরের ছেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানায়, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, শিশু কল্যাণ কমিটি ও পুলিস-সহ একদল চিকিৎসকদের যৌথ প্রচেষ্টায় তাদের দুজনকে বের করা হয়। স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ৩৬ বছরের ওই মহিলাকে বুধবার পিজিআই রোহতকে পাঠানো হয়েছে। গুরগাঁওয়ের চিফ মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ বীরেন্দ্র যাদব জানিয়েছেন, মেয়েটির মানসিক অবস্থা জানতে বেশ কিছু পরীক্ষা করা হবে।

তাঁর কথায়, মা-ছেলে শারীরিকভাবে সুস্থ ছিলেন। তবে শিশুটির কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করা হবে। এ ব্যাপারে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। পুলিস জানিয়েছে, বাবা টিউশন ফি দেওয়ার অভিযোগ করায় ছেলে যে বেসরকারি স্কুলে পড়ত সেখান থেকে ওই মহিলা অনলাইন ক্লাসের জন্য বিশেষ কোনও অনুমতি নিয়েছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর পারভিন কুমার খান্না জানিয়েছেন, তিন দিন আগে ওই মহিলার স্বামী তাঁর ছেলেকে উদ্ধারের জন্য সাহায্য চান। তাঁর কথায়, প্রথমে মনে হয়েছিল স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি চলছে। তবে পরে আমরা জানতে পারি যে, সম্ভবত ওই মহিলার কোনও অসুখ ছিল। যার কারণে তিনি আশঙ্কা করেছিলেন যে তাঁর ছেলে কোভিড-19-এ আক্রান্ত হতে পারে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস থেকে শুরু হয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত ঘরবন্দি তারা।

খান্না জানিয়েছেন, প্রথমে ওই মহিলার কাছে দুটি রান্নার সিলিন্ডার ছিল। পরে তা বদলে ইনডাকশন করে নেন। তিনি শুধু প্যাকেটজাত খাবার অর্ডার করতেন। যা সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলা যেত। এমনকী ট্যাঙ্কের সঞ্চিত জল ব্যবহার করেননি এই ভয়ে যে তিনি এবং ছেলেকে অসুস্থ হয়ে যাবেন। শিশুটির চুল লম্বা হয়ে গিয়েছিল। সেটাও বাড়িতেই কেটে দিত ওই মহিলা।  না বেরিে তাঁর গোটা বাড়িটাই আবর্জনায় ভরে গিয়েছে।

খান্না জানিয়েছেন, পাঁচ-ছয় বার ভিডিও কলের মাধ্যমে মহিলার সঙ্গে কথা বলার পরে এবং শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার তাঁকে রাস্তায় বের করতে সক্ষম হন। তিনি বলেন, আমরা সবাই তাকে বিশ্বাস করাতে পেরেছিলাম যে তার স্বামী অভিযোগ করছেন যে তার কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে এবং তার স্বামীকে ভুল প্রমাণ করার জন্য তাকে অবশ্যই পরীক্ষা করাতে হবে। অবশেষে তিনি রাজি হন এবং শেষ পর্যন্ত আমরা তার ছেলেকেও বের করে আনতে সক্ষম হই। স্বামী অপেক্ষা করছিলেন স্ত্রীর অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে কিন্তু তা কখনও হয়নি। অবশেষে তিনি পুলিসের দ্বারস্থ হন।

(Feed Source: zeenews.com)