ISL 2022-23, ATKMB vs HFC: একাধিক গোল মিস করেও, বিশাল-প্রীতমের সৌজন্যে ফের ফাইনালে এটিকে মোহনবাগান, সামনে বেঙ্গালুরু

ISL 2022-23, ATKMB vs HFC: একাধিক গোল মিস করেও, বিশাল-প্রীতমের সৌজন্যে ফের ফাইনালে এটিকে মোহনবাগান, সামনে বেঙ্গালুরু

এটিকে মোহনবাগান:  ০ (পেনাল্টি – ১ , ১, ১, ০, ১) = ৪

হায়দরবাদ এফসি: ০ (পেনাল্টি –  ১, ০, ০, ১, ১) = ৩

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ১২০ মিনিট ধরে লড়াই চলার পরেও গোলের দেখা নেই। তাই শেষ পর্যন্ত খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেই মারাত্মক চাপের মুখেও জোড়া সেভ করলেন বিশাল কাইথ। কিন্তু সেখানেও ছিল রোমাঞ্চ। ব্রাডন হ্যামিল গোল মিস করতেই বিশালের উপর চাপ বেড়ে যায়। তবে মাথা ঠাণ্ডা রেখে শেষ বল বিপক্ষের জালে জড়িয়ে দেন অধিনায়ক প্রীতম কোটাল। আর সেই গোলের সুবাদেই রুদ্ধশ্বাস সেমি ফাইনালে ৪-৩ ব্যবধানে জিতে চলতি আইএসএল-এর ফাইনালে চলে গেল এটিকে মোহনবাগান। আগামী ১৮ মার্চ বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে গোয়ার জওহর লাল নেহেরু স্টেডিয়ামে সামনে নামবে সবুজ-মেরুন।

জেতার জন্য সব উপকরণ প্রস্তুত ছিল। ভরে উঠেছিল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের গ্যালারি। প্রিয় দলকে সমর্থন করার জন্য, মেরিনার্সদের হয়ে গলা ফাটানোর জন্য মিনিটে মিনিটে বাড়ছিল চিৎকারের ডেসিবেল। অ্যাওয়ে সেমি ফাইনালে গোলশূন্য ড্র করার পর এদিন ইতিবাচক মানসিকতা নিয়েই নেমেছিল সবুজ-মেরুন। এমনকি শুরু থেকেই বার্থোলোমিউ ওগবেচেকে নামিয়ে গোলের খোঁজে নেমেছিল নিজামের শহরা। কিন্তু কোথায় কি! ফিরতি লেগের সেমি ফাইনালে প্রথমার্ধে খেলার ফলাফলও ছিল ০-০। এমনকি এক্সট্রা টাইম পর্যন্তও খেলার ফলাফল সেই গোলশূন্যই ছিল। তাই এই শেষ চারের ম্যাচের ফলাফলও পাওয়া গেল ট্রাইব্রেকারে।

৬ মিনিটে মেরিনার্স নিয়মিত ভাবে প্রতিপক্ষের বক্সে উঠছিল। হুগো বৌমাস বল বাড়িয়েছিলেন মনবীর সিং-কে। কিন্তু বল ক্লিয়ার করে দেন হায়দরাবাদের ডিফেন্ডার সাহিল তাভোরা। ১০ মিনিটের মাথায় আবার হায়দরাবাদের আক্রমণ। এবার ওগবেচে এরিয়াল বলটি বক্সের দিকে নিয়ে গিয়ে মহম্মদ ইয়াসিরকে পাস দেন। সেই বলটি ধরে ইয়াসির শট নিলেও, গত ম্যাচের মতোই দুরন্ত দক্ষতা দেখিয়ে, সেভ করেন সবুজ-মেরুনের গোলকিপার বিশাল কাইথ।

লাগাতার আক্রমণের ধাক্কা সামলে এটিকে মোহনবাগানের কাছেও গোল করার সুযোগ চলে এসেছিল। ২৩ মিনিটে মনবীরের একটি দুরন্ত শট একটুর জন্য মিস হয়। ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে পঞ্জাবতনয়ের শট। বড় মিস। গোলটি হলে আন্তর্জাতিক মানের তকমা পেত। এর ঠিক আগেই পেত্রাতোস হায়দরাবাদ গোলকিপারের ভুলের সুযোগ পেলেও শটটি বাইরে মারেন। এটাও ছিল বড় মিস। সেই দুটি শট বিপক্ষের জালে ঢুকে গেলে ফেরান্দোর মুখে অনেক আগেই হাসি ফুটে উঠত। এরপর দুটি দল হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করলেও, কেউই গোলের মুখ খুলতে পারেনি।

দ্বিতীায়ার্ধের শুরুতেই কিয়ান নাসিরির জায়গায় লিস্টন কোলাসোকে নামিয়ে দেন ফেরান্দো। তবে এতেও মুখ কিছুতেই খুলছিল না। ৫৭ মিনিটে হায়দরবাদের গোলকিপার গুরমিত সিং ও দুরন্ত ডিফেন্সের কাছে প্রথম হার মানলেন হুগো বুমোস। পরে দিমিত্রি পেত্রাতোসের জোড়া কর্নারও কাজে এল না। এরপর প্রথমার্ধের মতোই দুই দল গোলের খোঁজে লড়াই করে গেল।

৬৭ মিনিটে জোড়া বদল করেন হায়দরবাদের কোচ মানোলো মার্কুয়েজ। বোর্জা হেরেরার বদলে নামলেন জোয়াও ভিক্টর। হলিচরণ নার্জারির জায়গায় নামলেন রোহিত দানু। পিছিয়ে ছিলেন না ফেরান্দোও তিনিও ৭৩ মিনিটে হুগোকে তুলে মাঠে ফেড্রিকো গ্যালেগোকে।

তবুও গোল মিসের বহর চলছিলই। ৮২ মিনিটে মাঠের বাঁ দিক ঠিকানা লেখা লম্বা পাস বাড়ান দিমিত্রি পেত্রাতোস। বক্সের সামনে সেই সময় ছিলেন স্লাভকো দামজানকোভিচ। তিনি মাথায় বল ছোয়ালেই কাঙ্খিত গোল পেয়ে যেত সবুজ-মেরুন। তবে এবারও সুযোগ হাতাছাড়া হল। শেষদিকেও গোলের সুযোগ চলে এসেছিল। এবার কার্ল ম্যাকহাউ ব্যর্থ হলেন। ফলে গোলশূন্য ভাবেই এক্সট্রা টাইমে চলে গিয়েছিল দ্বিতীয় সেমি ফাইনালের খেলা। কিন্তু এক্সট্রা টাইমের প্রথমার্ধেও একের পর এক গোলের সুযোগ হেলায় হারাল সবুজ-মেরুন। চাপের খেলা এখানেই শেষ নয়। প্রথম সেমি ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের বেঙ্গুলুরু এফি বনাম মুম্বই এফসি-র ফলাফল টাইব্রেকারে পাওয়া গিয়েছিল। এবার যুবভারতীতেও সেই ম্যাচের রিমেক ঘটে গেল। সবুজ-মেরুন সমর্থকদের রক্তচাপে বাড়িয়ে ম্যাচ চলে গেল টাইব্রেকারে।

আর সেখানেই হল সোমবারের টানটান ম্যাচের নিষ্পত্তি। ব্রাডন হ্যামিল গোল মিস করতেই বিশালের উপর চাপ বেড়ে যায়। তবে মাথা ঠাণ্ডা রেখে শেষ বল বিপক্ষের জালে জড়িয়ে দেন অধিনায়ক প্রীতম কোটাল। আর সেই গোলের সুবাদেই রুদ্ধশ্বাস সেমি ফাইনালে ৪-৩ ব্যবধানে জিতে চলতি আইএসএল-এর ফাইনালে চলে গেল এটিকে মোহনবাগান। আগামী ১৮ মার্চ বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে গোয়ার জওহর লাল নেহেরু স্টেডিয়ামে সামনে নামবে সবুজ-মেরুন।

(Feed Source: zeenews.com)