পঞ্চম থেকে অষ্টম স্থানে ভারত, দূষণে দিল্লির পরই কলকাতা, বিষে বাতাসের ভরকেন্দ্র দক্ষিণ এশিয়া

পঞ্চম থেকে অষ্টম স্থানে ভারত, দূষণে দিল্লির পরই কলকাতা, বিষে বাতাসের ভরকেন্দ্র দক্ষিণ এশিয়া

নয়াদিল্লি: আন্তর্জাতিক মঞ্চে তো বটেই, সংসদের বাজেট অধিবেশনেও উঠে এসেছে পরিবেশের কথা। কিন্তু দূষণের প্রকোপ থেকে কোনও ভাবেই রক্ষা পাচ্ছে না ভারত। বরং ২০২২ সালে বিশ্বের অষ্টম দূষিত দেশ হিসেবে নাম উঠে এল দেশের (Pollution Report)। আগের বছর ওই তালিকায় পঞ্চম স্থানে জায়গা হয়েছিল। বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা অর্থাৎ পিএম ২.৫ স্তর আগের চেয়ে এ বারে নেমে হয়েছে প্রতি কিউবিক মিটারে ৫৩.৩ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া মাপকাঠির চেয়ে ১০ গুণ বেশি (World Pollution)।

মোট ১৩১টি দেশকে নিয়ে তৈরি হয় এই তালিকা

সুইৎজারল্যান্ডের IQAir সংস্থার তরফে ২০২২ সালের ‘ওয়র্ল্ড এয়ার কোয়ালিটি রিপোর্ট’ প্রকাশ করা হয়েছে, তাতেই অষ্টম স্থানে জায়গা হয়েছে ভারতের। পরিবেশ বিজ্ঞানী এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দেওয়ার রিপোর্টের ভিত্তিতে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার নিরিখে এই রিপোর্ট তৈরি হয়। মোট ১৩১টি দেশকে নিয়ে তৈরি হয় এই তালিকা। তাতে যোগদান করেন প্রায় ৩০ হাজার পর্যবেক্ষক।

এ বারে দূষিত দেশের তালিকায় সবচেয়ে উপরে রয়েছে চাড। তার পর যথাক্রমে রয়েছে ইরাক, পাকিস্তান, বাহরাইন, বাংলাদেশ, বুরকিনা ফাসো, কুয়েত, ভারত, মিশর এবং তাজিকিস্তান। তবে সামগ্রিক ভাবে ভারত তালিকায় পঞ্চম থেকে অষ্টম স্থানে নেমে এলেও, ওই তালিকায় ভারতের বিভিন্ন শহরের উপস্থিতি নজর কাড়ে। মোট ৭ হাজার ৩০০ দূষিত শহরের উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে, এ যাবৎকালীন যা সর্বোচ্চ। ২০১৭ সালে ২ হাজার ২০০ শহরের উল্লেখ ছিল। তবে ভারতের বিভিন্ন শহরই দূষণের নিরিখে রয়েছে।

বায়ুদূষণের জেরে ভারতের ক্ষয়ক্ষতির যে হিসেব দেওয়া হয়েছে রিপোর্টে, তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। বলা হয়েছে, বায়ুদূষণের জন্য ১৫ হাজার কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি বহন করতে হয় ভারতকে। এর জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী যান চলাচল। বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা অর্থাৎ পিএম ২.৫-এর ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ দায় বর্তায় যান চলাচলের উপরই। তার পর শিল্প-কারখানা, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং জৈব দহন রয়েছে।

এ বারের তালিকায় প্রথম ১০-এ ছয়টি শহরই ভারতের। প্রথম ২০-র মধ্যে ভারতের শহর রয়েছে ১৪টি। আর প্রথম ৫০-এ ভারতের ৩৯টি শহরের উল্লেখ রয়েছে। আর ১০০ শহরের তালিকায় ভারতের ৬৫টি শহরের উল্লেখ রয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় বেশি। গত বছর ভারতের ৬১টি শহরের উল্লেখ ছিল প্রথম ১০০-র তালিকায়। প্রথম ১০-এ দিল্লি এবং নয়াদিল্লি, দুইয়েরই উল্লেখ রয়েছে।

তবে বরাবর দিল্লি সবচেয়ে দূষিত শহরের তকমা পেলেও, এ বারে গ্রেটার দিল্লি শহর এবং রাজধানী নয়া দিল্লির মধ্যে রেখা টানা হয়েছে। প্রথম ১০-এ দুইয়েরই উল্লেখ রয়েছে, তবে নয়া দিল্লি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানীর তকমা পেয়েছে চাডের এনজামিনা। তবে এনজামিনার জনসংখ্যা যেখানে ১০ লক্ষে কম, দিল্লির জনসংখ্যা ৪০ লক্ষের বেশি।

দক্ষিণ এশিয়া দূষণের ভরকেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত

অন্য দিকে, মেট্রোপলিটন শহরগুলির মধ্যে শীর্ষে রয়েছে দিল্লি। তার পরই রয়েছে কলকাতা। এর পর তালিকায় রয়েছে যথাক্রমে মুম্বই, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু এবং চেন্নাই। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর হিসেবে উঠে এসেছে পাকিস্তানের লাহৌর এবং চিনের হোতান। তার পর তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাজস্থানের ভিওয়াড়ি। চতুর্থ স্থানে রয়েছে দিল্লি। দিল্লির বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা পরিমাণ ৯২.৬ মাইক্রোগ্রাম, নিরাপদ স্তরের চেয়ে ২০ গুণ বেশি। দক্ষিণ এশিয়াকে দূষণের ভরকেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে রিপোর্টে।

(Feed Source: abplive.com)