চাকরিচ্যুতদের পক্ষে সওয়াল, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ হাইকোর্টে

চাকরিচ্যুতদের পক্ষে সওয়াল, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ হাইকোর্টে

সৌভিক মজুমদার, আশাবুল হোসেন ও বিজেন্দ্র সিংহ, কলকাতা : কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে চাকরিচ্য়ুতদের পক্ষে কার্যত সওয়াল করেছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee)। তাঁর বক্তব্য়ের একটি অংশ নিয়ে আদালত অবমাননার অভিযোগে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য (Lawyer Bikash Ranjan Bhattacharya)। তাঁকে হলফনামা দাখিলের পরামর্শ দিয়েছেন বিচারপতি।

হলফনামা দাখিলের পরামর্শ আদালতের

নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় (Recruitment Scam) এখনও অবধি আদালতের নির্দেশে চাকরি গেছে ৪ হাজার ২৩৩ জনের। মঙ্গলবার সেই চাকরিচ্য়ুতদের হয়ে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় মন্তব্য করেছিলেন, ‘প্রধান বিচারপতি এখানে নেই। আমি সুব্রতদাকে (বিচারপতি সুব্রত তালুকদার) বলব, যিনি এখানে আছেন, এটা আমার ব্য়ক্তিগত মত, দয়া করে এত সহজে চাকরি কেড়ে নেবেন না’। ২৪ ঘণ্টার মধ্য়ে তা নিয়ে আদালত অবমাননার অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁকে হলফনামা দাখিলের পরামর্শ দিয়েছে আদালত।

নিয়োগ দুর্নীতির মামলায়, সম্প্রতি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের নির্দেশে চাকরি গেছে ৮৪২ জন গ্রুপ সি কর্মীর। সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশকে চ্য়ালেঞ্জ করে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে যান চাকরি যাওয়া প্রার্থীরা। এছাড়া প্রাইমারি, নবম-দশম এবং গ্রুপ ডি-র মামলাও বিচারপতি তালুকদারের বেঞ্চে বিচারাধীন। এই প্রেক্ষাপটে মুখ্য়মন্ত্রী মঙ্গলবার বিচারপতির নাম করে, চাকরি না কাড়ার যে অনুরোধ করেছেন, তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি টি এস শিবাগনানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। স্বতঃপ্রণোদিত আদালত অবমাননার মামলা দায়েরের আবেদন জানান তিনি। বৃহস্পতিবারের মধ্য়ে এনিয়ে হলফনামা দাখিলের পরামর্শ দিয়েছে আদালত।

রাজনৈতিক তরজা

এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য প্রসঙ্গে তাঁকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিরোধীরা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, ‘এটা শুধু অবমাননা নয়, বিচারবিভাগের বিরুদ্ধে চক্রান্ত। জনমত তৈরির চেষ্টা। সেন্টিমেন্ট তৈরির নাটক করছেন মুখ্য়মন্ত্রী’। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার আলিপুর কোর্টের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন মমতা। সেখানেই চাকরিহারাদের নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। বলেন, “আমি জীবনে জেনেশুনে কারও অন্যায় করিনি। ক্ষমতায় আসার পর একজন সিপিএম ক্যাডারেরও চাকরি খাইনি। তবে তোমরা কেন খাচ্ছো ! দেওয়ার ক্ষমতা নেই, কাড়বার ক্ষমতা আছে ! সিপিএম-এর আমলে অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের একটা রায় দেখেছিলাম। চাকরি মামলা ছিল। বলেছিলেন, সংশোধন করে নাও যদি ভুল থাকে। চাকরি খাওয়ার কথা বলেননি।”

(Feed Source: abplive.com)