মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য: রাজ্য়জুড়ে অ্যাডিনো ভাইরাসের দাপটের মধ্যে মঙ্গলবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও বি সি রায় হাসপাতালে মৃত্যু হল মোট ৫ শিশুর। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ২ জন এবং বিসি রায় হাসপাতালে ৩ শিশুর মৃত্য়ু হয়েছে। জানা যাচ্ছে ওইসব শিশুদের অনেকেরই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিল। কিন্তু সেইসব নিউমোনিয়ার পেছনে কোন ভাইরাস তা স্পষ্ট করছে হাসপাতাল।
বি সি রায় হাসপাতালে মঙ্গলবার ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত মোট ৩টি শিশুর মৃত্যু হয়। হাসপাতালের তরফে জানা যাচ্ছে ওইসব শিশুর প্রত্যেকেই নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট ছিল। অন্যদিকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেও ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজন অ্যাডিনোভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। সবেমিলিয়ে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ও অ্যাডিনোভাইরাস রাজ্যে স্বাস্থ্য দফতরের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
রবিবার জ্বর, সর্দি ও শ্বকষ্ট নিয়ে মেডিক্যালে ভর্তি হয় ১ বছরের স্বর্ণ দাস। আজ সকালে তার মৃত্যু হয়। অন্যদিকে, মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা আদিত্য দাসকে(৬ মাস) গত মঙ্গলবার ভর্তি করা হয়। তার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট ছিল। বুধবার তাকে ভেন্টিলেশনে দিতে হয়। গতকাল অ্যাডিনোভাইরাস সক্রমণের কথা জানান চিকিত্সকেরা। আজ ভোর সাড়ে পাঁচটায় তার মৃত্যু হয়।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বি সি রায় হাসপাতালে ভর্তি হয় হরিনঘাটার এক শিশুকে। বয়স মাত্র ২ মাস। কল্য়াণীর জে এন এম হাসপাতাল থেকে তাকে কলকাতায় আনা হয়। সেইসময় তার জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্ট ছিল। আজ সকাল ৬টা নাগাদ তার মৃ্ত্যু হয় বিসি রায় হাসপাতালে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, যেসব শিশুর বয়স ২ বছরের নীচে তাদেরও বেশি বিপদ বাড়ছে। আজ যে ৫ শিশুর মৃত্যু হয়েছে তাদের সবার বয়স ২ বছরের নীচে। গতকালই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ও শিশুরোগ বিভাগের প্রধানদের নিয়ে একটি বৈঠক করে স্বাস্থ্য দফতর। সেই বৈঠকে একাধিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেডের সংখ্যা বাড়ানো থেকে শুরু করে রেফার না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার পরেও বাড়ছে উদ্বেগ।
অ্যাডিনোভাইরাসে এখনওপর্যন্ত কতজনের মৃত্য়ু হয়েছে তা সরকারিভাবে জানানো হয়নি। তবে স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, এখনওপর্য়ন্ত রাজ্যে আডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৫টি শিশুর। সার্বিকভাবে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ২০-২৫টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বিভিন্ন হাসপাতালে। সবচেয়ে বেশি সংখ্য়ক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বি সি রায় হাসপাতালে। পরিস্থিতি এমনটাই হয়েছে যে এক একটি বেডে ২-৩টি শিশুকে রাখতে হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন তাদের ভর্তি নিতে অপারগ। তবে ফিরিয়ে দিলে চিকিত্সাটুকুও তারা পাবে না।
(Feed Source: zeenews.com)