নাবালিকাকে ধর্ষণ, খুন করে রান্না চাপিয়েছিল অলোক! ফাঁসির দাবিতে রণক্ষেত্র তিলজলা

নাবালিকাকে ধর্ষণ, খুন করে রান্না চাপিয়েছিল অলোক! ফাঁসির দাবিতে রণক্ষেত্র তিলজলা

কলকাতা: পুলিশের সন্দেহ ছিলই৷ শেষ পর্যন্ত তিলজলায় নাবালিকাকে খুনের অভিযোগ পুলিশি জেরায় ধৃত যুবক স্বীকার করে নিল, খুনের আগে শিশুটিকে ধর্ষণ এবং যৌন নিগ্রহ করে সে৷ ধৃতের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই খুনের অভিযোগের পাশাপাশি পকসো আইনেও মামলা করেছে পুলিশ৷ ধৃতকে আজই আদালতে তুলবে পুলিশ৷

সূত্রের খবর, পুলিশি জেরায় ধৃত অলোক কুমার জানিয়েছে, প্রথমে ওই নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন করে সে৷ তার পর মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে এবং শ্বাসরোধ করে শিশুটিকে খুনের চেষ্টা করে সে৷ মৃত্যু নিশ্চিত করতে শিশুটিকে ধর্ষণও করে সে৷ তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে নাবালিকার ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে পুলিশ৷

সাত বছরের ওই নাবালিকাকে খুনের এই ঘটনায় রবিবার রাতে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় তিলজলা৷ পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে থানা ভাঙচুরের চেষ্টা করেন ওই নাবালিকার পরিবারের সদস্য এবং এলাকার বাসিন্দারা৷ ভাঙচুর করা হয় থানা চত্বরে রাখা পুলিশের গাড়ি এবং বাইক৷ ছোড়া হয় ইট৷ শেষ পর্যন্ত বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে লাঠি চার্জ করে পুলিশ৷ এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিহারের বাসিন্দা অলোক কুমারকে গতকালই গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷ তিলজলার শ্রীধর রায় রোডের যে আবাসনে ওই নাবালিকা থাকত, অলোক সেই আবাসনেরই তিন তলায় থাকত৷

রবিবার সকাল আটটা নাগাদ তিলজলার বাসিন্দা ওই নাবালিকা ময়লা ফেলার জন্য বাইরে যায়৷ কিন্তু দীর্ঘক্ষণ মেয়ে না ফেরায় মেয়ের খোঁজ শুরু করেন বাবা-মা৷ খোঁজ না মেলায় রবিবার বেলা বারোটা নাগাদ তিলজলা থানায় অভিযোগ জানায় পরিবার৷ যদিও শিশুটির বাবার অভিযোগ, বার বার অনুরোধ করলেও প্রথমে শিশুটির খোঁজে তৎপর হয়নি পুলিশ৷

স্থানীয়দের দাবি, পুলিশ তৎপর না হওয়ায় তাঁরাই শিশুটির খোঁজ শুরু করেন৷ পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, তদন্ত নেমে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়৷ দেখা যায়, শিশুটি ময়লা ফেলে ফের আবাসনের গেট দিয়ে ভিতরে ঢোকে৷ এতেই পুলিশ নিশ্চিত হয়, শিশুটি ওই আবাসনেই কোথাও আছে৷ খোঁজ শুরু হয় আবাসনের ৩২টি ফ্ল্যাটে৷

তল্লাশি চলাকালীন আবাসনের তিন তলায় অলোক কুমারের ফ্ল্যাটে ঢোকে পুলিশ৷ সেই সময় রান্না করছিল অলোক কুমার নামে ওই অভিযুক্ত৷ রান্নাঘরের ভিতরেই একটি বস্তা দেখে সন্দেহ হয় পুলিশ৷ বস্তা খোলার চেষ্টা করতেই বাধা দেয় অভিযুক্ত অলোক কুমার৷ এতেই সন্দেহ দৃঢ় হয় পুলিশকর্মীদের৷ বস্তা খুলতেই শিশুটির রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়৷ পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়৷

এর পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি৷ স্থানীয়দের অবশ্য দাবি, পুলিশ যাওয়ার আগে তাঁরাই শিশুটিকে অলোকের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করেন৷ এর পরেই রবিবার রাতে উত্তপ্ত হতে শুরু করে পরিস্থিতি৷ থানার বাইরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ ভাঙচুরের ঘটনায় ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷ গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার সময় অভিযুক্তকে মারধরও করে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী৷ শিশুটির বাবা এবং স্থানীয়দের দাবি, পুলিশ সময়মতো খোঁজ শুরু করলে ওই নাবালিকাকে হয়তো বাঁচানো সম্ভব হত৷

(Feed Source: news18.com)