বিশ্বের প্রাচীনতম চিকিৎসা পদ্ধতি আয়ুর্বেদ। এর প্রধান উপাদান হল ওষধি গাছ। এক সময় এ সব গাছের কদর ছিল। তারপর আস্তে আস্তে মানুষ ভুলেছে ওষধি গাছের ব্যবহার। কিন্তু করোনাকালে আবার ফিরেছে আয়ুর্বেদের ভরসা। সাধারণ চিকিৎসার সঙ্গে মানুষ ভরসা করেছে গাছগাছড়ার ওষধি গুণের উপর।
এই চাহিদার কথা মাথায় রেখেই রাজস্থানের ভরতপুর জেলার কৃষকরা ওষধি গাছের চাষ শুরু করেছেন। এমনকী অনেকে ঐতিহ্যবাহী চাষ ছেড়ে ওষধি গাছের চাষ শুরু করেছেন। কৃষকরা জানান, কম খরচে ঘৃতকুমারী, তুলসী, অশ্বগন্ধা, আমলকি ইত্যাদি চাষ করে দ্বিগুণ লাভ পাচ্ছেন।
ভরতপুর জেলার ভুসাভার শহর উদ্যান ও অর্থকরী ফসলের জন্য এমনিতেই বিখ্যাত। তবে ওই এলাকায় কিছু কৃষক ছিলেন যাঁরা দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাহী কৃষিকাজের বদলে বেছে নিয়েছেন ওষধি গাছের চাষ। সারা দেশে এসব গাছের চাহিদা বেড়েছে। সেকথা মাথায় রেখেই চাষের প্রতি আগ্রহও বেড়েছে। আর প্রতিমাসে এক লাখ টাকার বেশি আয় করছেন কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষক সুরেশ অবস্থি জানান, আগে তিনি চিরাচরিত পদ্ধতিতে গম, যব, সর্ষে ও ছোলা চাষ করতেন। করোনার সময় লক্ষ করলেন, অ্যালোপ্যাথি ওষুধের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ ঔষধি গাছ থেকে তৈরি আয়ুর্বেদিক পদ্ধতির উপর ভরসা করছেন। একথা মাথায় রেখেই প্রায় ২ হেক্টর জমিতে অ্যালোভেরা, সতাভার, অশ্বগন্ধা, সফেদ মুসলি ও তুলসি চাষ শুরু করেন। তিনি জানান, গত ৩০ বছর ধরে তিনি ঐতিহ্যবাহী কৃষিকাজ করে আসছেন, কিন্তু তিন বছরে ঔষধি গাছের চাষ করে যা লাভ করেছেন তা আগে হয়নি। তাঁকে দেখেই আশেপাশের অন্য কৃষকরা এধরনের চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
প্রতিমাসে এক লাখ টাকা আয়…
সুরেশ জানান, করোনা অতিমারির পর থেকেই মানুষ স্বাস্থ্য নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। অসুস্থ হয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার থেকে নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পক্ষপাতী অনেকেই। সেক্ষেত্রে আয়ুর্বেদ খুব সহায়ক। তার ফলেই এসব গাছের চাহিদা বেড়েছে। সুরেশ বলেন, ‘আমি যখন এই চাষ শুরু করি তখন মনে একটা ভয় তো ছিলই। কিন্তু এখন লাভ দেখে সেই ভয় কেটে গিয়েছে।’ তিনিই জানান, বাইরে থেকে বিভিন্ন সংস্থা স্থানীয় কৃষকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করছে। ফলে একমাসে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব হচ্ছে।