নয়াদিল্লি: জীবনে চল্লিশটি বসন্ত পার করেছেন বটে। তার মধ্যেই কমপক্ষে ৫৫০ সন্তানের ‘বাবা’ হয়েছেন। এ বার যুবকের সামনে হাতজোড় করল আদালতও। তাঁকে থামাতে আর্জি এল আদালতের তরফেই। তাতেও যদি না থামেন, তাঁকে মোটা টাকা জরিমানা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে আদালত (Viral News)।
শুক্রাণুচক্রের বাড়-বাড়ন্তের অভিযোগ জমা পড়েছে
খবরের শিরোনামে উঠে আসা ওই যুবক নেদারল্যান্ডের নাগরিক। শুক্রাণু দান করে কমপক্ষে ৫৫০ সন্তানের ‘বাবা’ হয়েছেন তিনি। হিসেব সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা দেশের। সন্তানহীনদের অসহায়তার সুয়োগ নিয়ে দেশে শুক্রাণুচক্রের বাড়-বাড়ন্তের অভিযোগ জমা পড়েছে। তাতেই ওই যুবককে থামাতে কার্যত হাতজোড় করল আদালত।
বিতর্কের কেন্দ্রে যে যুবক, তাঁর নাম জোনাথন জেকব মেইজের (Jonathan Jacob Meijer)। বয়স ৪১ বছর । শুক্রাণু দান করে ৫৫০-এরও বেশি সন্তানের ‘বাবা’ হয়েছেন তিনি। কিন্তু সন্তান পেতে মরিয়া মা-বাবাদের তিনি মিথ্যে বলেছিলেন অভিযোগ। সেই নিয়ে মামলা জমা পড়ে আদালতে। তিনি জোনাথন যে এতগুলি সন্তানের ‘বাবা’, সেকথা তিনি লুকিয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতেই জোনাথনের সামনে কার্যত হাতজোড় করে আদালত। বলা হয়েছে, আপাতত আর শুক্রাণু দান করতে পারবেন না জোনাথন। সন্তান পেতে মরিয়া কোনও দম্পতির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন না তিনি। আদালতে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে ফের যদি শুক্রাণু দান করেন তিনি, সে ক্ষেত্রে তাঁকে ১ লক্ষ ইউরো জরিমানা করা হবে, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৯০ টাকার বেশি।
জোনাথনের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে এগিয়ে এসেছেন বহু মা-বাবাই। তাঁদের অভিযোগ, ৫৫০-এর বেশি সন্তানের কথা লুকিয়ে গিয়েছিলেন জোনাথন। এখন বুঝতে পারছেন, বড় ধরনের চক্রের শিকার হয়েছেন তাঁরা। তাঁদের সন্তানের যে কয়েকশো সৎ-ভাইবোন রয়েছে, তা বিলক্ষণ টের পাননি তাঁরা। বিষয়টি মেনে নেওয়া যাচ্ছে না কোনও ভাবেই।
নেদারল্যান্ডের পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, কমপক্ষে ১৩টি ক্লিনিকে নিয়মিত যাতায়াত ছিল জোনাথনের। সেখান থেকেই তাঁর দান করা শুক্রাণু বিকোত। অথচ নেদারল্যান্ডের আইন বলছে, এক জন পুরুষ ১২ জনের বেশি মহিলাকে শুক্রাণু প্রদান করতে পারবেন না। শুক্রাণু প্রদানকারী ব্যক্তি ২৫টির বেশি সন্তানের ‘বাবা’ হতে পারবেন না। শুক্রাণু প্রদানকারী ব্যক্তির শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা যাতে বংশবিস্তারের মাধ্যমে ছড়িয়ে না পড়ে, তার জন্যই এমন ব্যবস্থা।
বর্তমানে কেনিয়ায় থাকেন জোনাথন
সেই নিয়মই জোনাথন লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৭ সাল থেকে শুক্রাণু দান করে আসছেন জোনাথন। ৫৫০ থেকে ৬০০ সন্তান জন্মেছে তাঁর শুক্রাণু থেকে। ২০১৭ সালেও তাঁর শুক্রাণু দানে নিষেধাজ্ঞা বসানো হয়েছিল। তার পরও থামেননি জোনাথন। নেদারল্যান্ডের বদলে বিদেশে গিয়ে শুক্রাণু দান করে আসেন। যদিও জোনাথনের আইনজীবীর দাবি, নিঃসন্তান দম্পতিদের সাহায্য় করাই উদ্দেশ্য ছিল তাঁর মক্কেলের। জোনাথন পেশায় সঙ্গীতশিল্পী। বর্তমানে কেনিয়ায় থাকেন তিনি।
(Feed Source: abplive.com)