রাজ্য পুলিশের ডিজি’‌র দেহরক্ষী ও কনস্টেবল গ্রেফতার, কোন ঘটনায় অভিযুক্ত?

রাজ্য পুলিশের ডিজি’‌র দেহরক্ষী ও কনস্টেবল গ্রেফতার, কোন ঘটনায় অভিযুক্ত?

খাস কলকাতায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে ১৭ লক্ষ টাকা ডাকাতি হয়। এই ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধের কিনারা করল পুলিশ। কলকাতার শেক্সপিয়র সরণি থানা এলাকার ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে। আর সেই ধৃতদের পরিচয় প্রকাশ্যে আসতেই পুলিশমহলে ঢি ঢি পড়ে যায়। কারণ, একজন স্বয়ং রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যের দেহরক্ষী। নাম মহম্মদ শাহজাহান (৩৩)। আলিপুর গোপালনগর থেকে তাকে গ্রেফতার করে কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের ডাকাতি দমন শাখা। ধৃত দ্বিতীয়জনও রাজ্য পুলিশের এক কনস্টেবল। নাম প্রবীণ প্রসাদ (৩৩)। এই দু’জনকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হলে বিচারক তাদের ৪ মে পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছিল?‌ পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৭ এপ্রিল পার্ক স্ট্রিট উড়ালপুলে এক ব্যবসায়ীর গাড়ি আটকে নিজেদের পুলিশ পরিচয় দেয় দুই অভিযুক্ত। তখনই ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে থাকা ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয় তারা। ওই ব্যাগে ১৭ লক্ষ টাকা ছিল। এই ঘটনার পরই ওই ব্যবসায়ী থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ পরিচয়ের কথা জানতে পেরে সন্দেহ হয় থানার। তারপর তদন্তে নেমে সামনে আসে এই ঘটনাটি। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই লুট, অপহরণ, ভুয়ো পরিচয় দেওয়ার মতো একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে কলকাতা পুলিশ।

কেমন করে সামনে আসে ঘটনাটি?‌ এই ঘটনার তদন্তে নেমে লালবাজারের হাতে আসে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ। সেখানেই দু’জনকে চিহ্নিতও করেন গোয়েন্দারা। আর প্রথমেই হাওড়ার বেলুড় থেকে প্রবীণ প্রসাদ নামে ওই কনস্টেবলকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে দফায় দফায় জেরা করতেই ডিজির দেহরক্ষী মহম্মদ শাহজাহানের নাম বেরিয়ে আসে। তখন তাকে আলিপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। এটা পুলিশের শীর্ষমহলে জানেতেও অস্বস্তি বোধ করেন পুলিশ অফিসাররা। পরে অবশ্য জানানো হয়েছে। তাই ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আর কেউ জড়িত কিনা সেটা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।

তারপর ঠিক কী হল?‌ ধৃতদের তুলে নিয়ে গিয়ে দফায় দফায় জেরা করেন অফিসাররা। এই ডাকাতির ঘটনায় রাজ্য পুলিশের ডিজির দেহরক্ষী গ্রেফতার হওয়ার ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন। তাই জোর চর্চা শুরু হয়েছে পুলিশ মহলে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিকভাবেই প্রশাসনিক স্তরে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। যদিও এই বিষয়টি নিয়ে এখনও প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি ডিজি মনোজ মালব্য। শিয়ালদার ছবিঘর সিনেমার সামনে আগে এভাবেই ডাকাতির শিকার হয়েছিলেন নদিয়ার এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী। পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাঁকে জোর করে গাড়িতে তুলে লুট করা হয় টাকা–গয়না। সেই ঘটনায় গোয়েন্দা বিভাগের এক এএসআই এবং কনস্টেবলকে গ্রেফতার হয়েছিল।

(Feed Source: hindustantimes.com)