কিয়েভের উপর ফের জোরালো রুশ হামলা

কিয়েভের উপর ফের জোরালো রুশ হামলা

মঙ্গলবারও রাশিয়া ইউক্রেনের রাজধানীর উপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে৷ ইউক্রেন সেগুলি ধ্বংস করতে সমর্থ হয়েছে৷ প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি পালটা সামরিক অভিযানের আভাস দিয়েছেন৷ ইউক্রেনের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের উপর রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আশঙ্কায় বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছিল৷ মঙ্গলবার ভোরে শুধু রাজধানী কিয়েভের উপর প্রায় ১৫টি ক্রুজ মিসাইল নিক্ষেপ করে মস্কো৷

তবে ইউক্রেনের সূত্র অনুযায়ী প্রত্যেকটি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে৷ যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুর যড়যন্ত্র বিফল হয়েছে বলে শহরের সামরিক প্রশাসনের প্রধান সেরহি পপকো টেলিগ্রাম অ্যাপে মন্তব্য করেছেন৷ তার মতে, যত বেশি সম্ভব নিরীহ মানুষের হত্যাই এই হামলার লক্ষ্য ছিল৷ তবে প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী এখনও কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি৷ কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিচকো শহরের দক্ষিণ পশ্চিমে একটি বাড়ির উপর আকাশ থেকে ধ্বংসাবশেষ পড়ার খবর দিয়েছেন৷ তবে তাঁর মতে, এই ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর নেই৷ ক্লিচকো বলেন, সোমবারের হামলায় কমপক্ষে পাঁচ জন আহত হয়েছে৷

শুধু মে মাসেই রাশিয়া এই নিয়ে কিয়েভের উপর পাঁচ দফা বড় আকারের হামলা চালাল৷ একদিন আগেই রাশিয়া ইউক্রেনের উপর সবচেয়ে বড় ড্রোনের ঝাঁক পাঠিয়েছিল৷ সোমবার রাশিয়ায় ‘বিজয় দিবস’ উদযাপন করা হয়৷ ১৯৪৫ সালে নাৎসি জার্মানির পরাজয় উপলক্ষ্যে রাশিয়ায় দিনটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে৷ ইউক্রেনের প্রেসি়ডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, যে পুরনো অশুভ শক্তি আধুনিক রাশিয়াকে আচ্ছন্ন করেছে, নাৎসিবাদের মতোই তা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে৷ তাঁর মতে, ইউক্রেনের বিজয়ের দিনক্ষণ এখনও জানা না গেলেও সেই ঘটনা গোটা ইউক্রেন, ইউরোপ ও মুক্ত বিশ্বের জন্য উৎসবের কারণ হবে৷ তাছাড়া রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেনের সাফল্য অন্য আগ্রাসী শক্তির জন্যও কঠিন বার্তা বহন করবে বলে জেলেনস্কি মন্তব্য করেন৷ সোমবার তিনি ডিক্রি জারি করে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে জয় উদযাপনের দিনটি ৯ মে-র বদলে ৮ মে পালনের সিদ্ধান্ত নেন৷ এবার থেকে সে দেশে ৯ মে ‘ইউরোপ দিবস’ পালিত হবে৷

জেলেনস্কি তাঁর দৈনিক ভিডিয়ো বার্তায় ইউক্রেনের পালটা সামরিক অভিযানের আভাস দিয়েছেন৷ তবে গোলাবারুদ সরবরাহের ক্ষেত্রে ‘সুখবর’ উল্লেখ করলেও তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি৷ রাশিয়ার দখলদারি প্রশাসনের এক কর্মকর্তার মতে, বৃষ্টির কারণে ইউক্রেনের সামরিক অভিযান এখনও শুরু হচ্ছে না৷ রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত জাপোরিঝা শহরের অংশের প্রশাসনিক প্রধান ইয়েভগেবি বালিৎস্কি বলেন, ১০ থেকে ১২ সেন্টিমিটার গভীরে মাটি নরম থাকলে তার উপর সামরিক যান চালানো অসম্ভব৷ তবে তার মতে ইউক্রেনের পালটা অভিযান যে কোনও মুহূর্তে শুরু হতে পারে৷

এদিকে ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র অনুযায়ী ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে রাশিয়া যথেষ্ট সৈন্য জোগাড় করতে পারছে না৷ ফলে এবার মধ্য এশিয়ার অভিবাসী শ্রমিকদের সেনাবাহিনীতে ভরতি করানোর উদ্যোগ নিচ্ছে সে দেশ৷ ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যে রাশিয়ার সামরিক নিয়োগকর্তারা মসজিদ ও ইমিগ্রেশন দফতর ঘুরে সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন৷ উজবেক ও তাজিক ভাষায় পারদর্শী কর্মকর্তারা মোটা অংকের ভাতার লোভ দেখিয়ে শ্রমিকদের ইউক্রেন যুদ্ধে লড়াইয়ের টোপ দিচ্ছেন৷ ব্রিটিশ সরকারের মতে, জনরোষের ঝুঁকি এড়াতে রাশিয়া যতদিন সম্ভব নতুন করে আরও পুরুষদের বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক বাহিনীতে যোগদানের সিদ্ধান্ত মুলতুবি রাখছে৷ কারণ গত ‘মোবিলাইজেশন’ প্রচেষ্টার সময় সমাজে গভীর অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল এবং তরুণরা দলে দলে দেশত্যাগ করেছিল৷

(Feed Source: hindustantimes.com)