একা কুম্ভ ছিলেন অর্জুন, ব্যারাকপুর বাঁচাবে কে? শূন্য গড়ে মুখ খুঁজছে বিজেপি

একা কুম্ভ ছিলেন অর্জুন, ব্যারাকপুর বাঁচাবে কে? শূন্য গড়ে মুখ খুঁজছে বিজেপি

#কলকাতা: অর্জুন সিং দল ছেড়েছেন৷ ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে এবার দলের হাল কে ধরবেন, সেটাই এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন রাজ্য বিজেপি-র অন্দরে৷ কারণ অর্জুনকে বাদ দিয়ে ব্যারাকপুরে বিজেপি-র সংগঠন যে কার্যত শূন্যে এসে দাঁড়ালো, তা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না দলের রাজ্য নেতাদের৷ ফলে ব্যারাকপুরে অর্জুনের বিকল্প মুখ খুঁজে বের করাই এখন বিজেপি-র কাছে সবথেকে কঠিন চ্যালেঞ্জ৷

এই পরিস্থিতিতে তড়িঘড়ি এ দিন ব্যারাকপুর নিয়ে বৈঠক ডেকে শুভেন্দু অধিকারীকে এই সাংগঠনিক জেলার বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু তার পরেও স্থানীয় ভাবে অর্জুনের শূন্যস্থান কীভাবে পূরণ করা যায়, সেটাই এখন দলের রাজ্য নেতাদের মাথাব্যথার বিষয়৷

২০১৯ সালে কার্যত অর্জুনের একার কৃতিত্বেই যে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র দখল করা গিয়েছিল, তা অস্বীকার করেন না বিজেপি নেতারা৷ সেই অর্জুন দল ছাড়ার পর ব্যারাকপুরে দলের সাংগঠনিক কমিটির একুশ জন সদস্যের মধ্যে আরও অন্তত আটজন নেতা তৃণমূলে যোগ দিতে পারে বলে খবর৷ তৃণমূলের দিকে পা বাড়িয়ে রাখা এই নেতারা প্রত্যেকেই অর্জুন ঘনিষ্ঠ৷ আগামী ৩০ মে শ্যামনগরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাতেই দল বদল করতে পারেন তাঁরা৷

ব্যারাকপুরে তাই অবিলম্বে এই শূন্যস্থান পূরণ করতে হবে বিজেপি-কে৷ ২০২৪-এ ব্যারাকপুর লোকসভা দখলে রাখা যাবে কি না, অর্জুনের দলত্যাগের পর এখন থেকেই বিজেপি-র অন্দরে সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ বিজেপি নেতারা মুখে বলছেন, অর্জুনের দলত্যাগে বিজেপি-র কোনও ক্ষতি হবে না৷ কিন্তু ব্যারাকপুরে সাংগঠনিক কমিটিতে অর্জুন এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতাদের বিকল্প মুখ খুঁজে বের করতেই যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে বিজেপি নেতাদের৷

এই পরিস্থিতিতে ব্যারাকপুেরর সাংগঠনিক কমিটিতে কাদের নিয়ে আসা হবে, দলের নেতাদের থেকেই সেই নাম চেয়েছে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব৷ বেশ কিছু নামও ইতিমধ্যে জমা পড়েছে৷ এঁদের মধ্যে কাদের নাম চূডান্ত করা হবে, তা ঠিক করবে দলের রাজ্য নেতৃত্বই৷

কারণ ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এক ভাটপাড়া ছাড়া ব্যারাকপুরের সবকটি বিধানসভা পরাজিত হয়েছিল বিজেপি৷ এমন কি, পুরভোটে ভাটপাড়ায় অর্জুনের নিজের ওয়ার্ডে লড়াই থেকে সরে দাঁড়ান বিজেপি প্রার্থী৷ ফলে ব্যারাকপুরে দলের সংগঠনের হাল যে যথেষ্ট শোচনীয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷

এত দিন তবু অর্জুন একা কুম্ভ হয়ে গড় রক্ষা করছিলেন৷ কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে অর্জুনের দাপট যুক্ত হলে ব্যারাকপুর এলাকায় তার মোকাবিলা করার ক্ষমতা এই মুহূর্তে বিজেপি-র রয়েছে কি না, তা নিয়ে গেরুয়া শিবিরে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে৷

এমনিতে অর্জুন সাংসদ থাকলেও তাঁকে ঘিরে বিজেপি-র অন্দরে টানাপোড়েন ছিলই৷ ব্যারাকপুরে সংগঠনের হ্রাস কার হাতে থাকবে তা নিয়ে দলের মধ্যে দ্বন্দ্বও ছিল৷ নানা ঘটনায় কখনও রাজ্য নেতৃত্ব জেলা বা স্থানীয় নেতৃত্বের উপরে দোষ চাপিয়েছে, কখনও হয়েছে উল্টোটা৷

অন্যদিকে অর্জুনের প্রত্যাবর্তনে ব্যারাকপুর কার্যত বিরোধী শূন্য করে ফেলতে পারল রাজ্যের শাসক দল৷ তবে এতদিন যাঁরা অর্জুনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, তৃণমূলের সেই নেতারা এবার কী অবস্থান নেন, সেই প্রশ্নও উঠছে৷ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই অর্জুন বিরোধী ব্যারাকপুরের বেশ কিছু নেতা নিজেদের দাবি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন৷ সেই বার্তায় বলা হয়েছে, হাওয়া বুঝে যাঁরা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসছেন, তাঁদের সঙ্গে যেন দলের দুঃসময়ে থেকে যাওয়া নেতা-কর্মীদের এক করে দেখা না হয়৷ পাশাপাশি, অর্জুন সিং অথবা তাঁর ঘনিষ্ঠদের হাতে তৃণমূলের যে নেতা-কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন, ব্যারাকপুরে সভা করতে এসে তাঁদের উদ্দেশে যেন বার্তা দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷

Published by:Debamoy Ghosh

(Source: news18.com)