সেন্দ্রা: শুনলে অনেকেই অবাক হয়ে যাবেন। মহিলাকে খুন করে তাঁর মাংস কামড়ে কামড়ে খাচ্ছেন এক যুবক। আর সেই দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছেন সকলে। আঁতকে ওঠার মতো ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের সেন্দ্রাতে। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে তার মানসিক অবস্থা স্থিতিশীল নয়। তাকে হাসপাতালে আপতত ভর্তি করা হয়েছে। সেখানেই চিকিৎসা চলছে তার।
পুলিশ জানিয়েছে, রাজস্থানের সেন্দ্রার সারাধনা নামে একটি গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। বছর ৬৫-র শান্তি দেবী নিজের বাড়ির গোয়ালে কাজ করছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়ে সুরেন্দ্র ঠাকুর নামে এক যুবক আচমকা ভারী পাথর নিয়ে হামলা চালায় তাঁর উপরে। শান্তি দেবীর মাথায় সজোরে আঘাত করে সে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শান্তি দেবীর।
কিন্তু তার পরের ঘটনা কার্যত হাড়হিম করে দেওয়ার মতো। এর কিছুক্ষণ পরে শান্তি দেবীর ছেলে বীরেন বাড়ি ফিরে আসেন। তিনি বাড়িতে মাকে দেখতে না পেয়ে খোঁজ শুরু করেন। এরপরেই গোয়ালে আওয়াজ পেয়ে সেখানে যান তিনি। বীরেনের দাবি, সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন এক যুবক রক্তমাখা একটি মৃতদেহ খুবলে খাচ্ছে। কিছুক্ষণ পরে বীরেন বুঝতে পারেন এই মৃতদেহ তাঁর নিজের মায়ের। সঙ্গে সঙ্গে আশেপাশের সকলকে বীরেন বিষয়টি জানান।
স্থানীয়রা আসতেই এমন সাংঘাতিক দৃশ্য দেখে আঁতকে ওঠেন। তারা সুরেন্দ্রকে ধরতে যেতেই পাল্টা আক্রমণ করে বসে। এমনকী পালানোর চেষ্টা করে সুরেন্দ্র। তখন কোনওরকমে তাকে ধরতে পারেন আশেপাশের সকলে। খবর যায় পুলিশের কাছে। পুলিশ এসে ওই সুরেন্দ্র ঠাকুর নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারের পরেও সুরেন্দ্রর ব্যবহার অত্যন্ত আক্রমণাত্মক। সুরেন্দ্র হাইড্রোফোবিয়া নামে একটি রোগে ভুগছিল বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা। সাধারণত ব়্যাবিস ভাইরাসের সংক্রমণে এমন রোগ হয়। এই রোগে কেউ আক্রান্ত হলে জলকে ভয় পেতে শুরু করেন। চিকিৎসকদের অনুমান, সম্ভবত অতীতে সুরেন্দ্রকে ব়্যাবিস আক্রান্ত কোনও কুকুর কামড়েছিল। সেই সময়ে চিকিৎসা সঠিক ভাবে হয়নি। তার জেরেই এই পরিস্থিতি হয়েছে।
রাজস্থানের ওই এলাকার ডিএসপি সুক্রম বিষ্ণোই জানিয়েছে, “অভিযুক্তের ব্যবহার একজন মানসিক রোগীর মতো। আমরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। হাসপাতালে বেডে শুয়েই খুব চিৎকার আর ছটফট করছে। বেডেই বেঁধে রাখা হয়েছে সুরেন্দ্রকে।”
তবে একটা বিষয় নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, সুরেন্দ্র মুম্বইয়ের বাসিন্দা। সুরেন্দ্রর পকেট থেকে বাসের টিকিটও মিলেছে। কিন্তু কেন আচমকা মুম্বই থেকে ভিনরাজ্যে এসে একটি গ্রামে ঢুকে এমন কাণ্ড ঘটাল সুরেন্দ্র, তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে তদন্তকারীদের মধ্যে।
সুরেন্দ্রর বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। আগেও এমন কোনও কাণ্ড করেছে কিনা, তাও জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। মৃত শান্তি দেবীর দেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তার পরে সেই দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।