আসল কিংপিন কে? পার্থর নামে ‘সব’ বলে দিলেন অর্পিতা! বিস্ফোরক তথ্য জানাল ইডি

আসল কিংপিন কে? পার্থর নামে ‘সব’ বলে দিলেন অর্পিতা! বিস্ফোরক তথ্য জানাল ইডি

কলকাতা: ইডির বিশেষ আদালতে অর্পিতা মুখোপাধ্যায় জামিনের আবেদনের শুনানি। গ্রেফতারির ৩২২ দিনের মাথায় আদালতে অর্পিতাকে সশরীরে পেশ করে জামিনের আবেদন করলেন তাঁর আইনজীবীরা। দিল্লি হাইকোর্টের আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার আজ অর্পিতার হয়ে সওয়াল করেন। সেখানেই জামিনের আবেদন করে অর্পিতার আইনজীবী বলেন, পার্থই কিংপিন, বোরে অর্পিতা, তাই জামিন দেওয়া হোক অর্পিতাকে।

ইডির চার্জশিটে উল্লেখ থাকা একাধিক ব্যক্তির নাম নিয়ে এবং তাদের ভূমিকাকে সামনে রেখে ও তাদের বয়ানকে উল্লেখ করে অর্পিতার আইনজীবী এজলাসে জানান, সমস্ত ব্যবসায়িক বিষয় এবং সমস্ত কিছুর মাস্টারমাইন্ড পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের কোনো ভূমিকা নেই। ওঁর ব্যক্তি স্বাধীনতাকে নষ্ট করা হচ্ছে। কোনও কিছুতে ব্যবসায়িক বেনিফিশিয়ারি অর্পিতা মুখোপাধ্যায় ছিলেন না।

অর্পিতা মুখোপাধ্যায় আইনজীবী সওয়ালে বলেন, আসল মাস্টারমাইন্ড কে, সেটা আসলে দেখতে হবে। অর্পিতা পরিস্থিতির শিকার। অর্পিতার Diamond City-র ফ্ল্যাটে সোনা ও নগদে টাকা পাওয়া গিয়েছে, তদন্তে অসহযোগিতা করছে বলা হচ্ছে, এইভাবে কি ব্যক্তি স্বাধীনতাকে নষ্ট করা হচ্ছে না ওঁর? ২০২২ সালের ২৩ জুলাই গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে। যা যা অভিযোগ আনা হয়েছে, সবটাই মিথ্যে। গ্রেফতারের আগে স্টেটমেন্ট রেকর্ড করা হয়নি। তদন্তে সহযোগিতাও করেছেন। অনন্ত টেক্স ফ্যাব প্রাইভেট লিমিটেড-এর এটা একটা রেজিষ্টার্ড অফিস অ্যাড্রেস বেলঘড়িয়ার ফ্ল্যাটটি, এতে ওঁর ভূমিকা কী?

সওয়ালে আরও বলা হয়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তাঁর কন্যা সোহিনী চট্টোপাধ্যায়, পার্থর জামাই অর্থাৎ পার্থ এবং পার্থর পরিবার কন্ট্রোল করত এই পুরো কোম্পানিকে। এই কোম্পানির মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ সুযোগ সুবিধা পেতেন পার্থ ও তাঁর পরিবার। অর্পিতা মুখোপাধ্যায় কোনো ভাবে এই কোম্পানিকে কন্ট্রোল করতেন না। এই কোম্পানির দ্বারা বেনিফিশিয়ারি একমাত্র পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কারণ – এই কোম্পানিতে যারা কাজ করত, এমনকি কোম্পানির ডিরেক্টরও তারা প্রত্যেকেই ডামি বা ভুয়ো। পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজের মাথা খাটিয়ে সবাইকে কাজ করাত। মনীশ জৈন এবং কমল সিং ভুতোরিয়ার নাম উঠে আসছে। কিন্তু এদের গ্রেফতার করা হল না। পুরো গেম প্ল্যান পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। অর্পিতা বলেন, ”আমি কী করছি? যাদের নাম উঠে আসছে, তাদের স্পর্শ পর্যন্ত করেনি ইডি।”

এই কোম্পানির কর্মচারী, মনোজ জৈনকে এখনও অ্যারেস্ট করা হল না। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মনোজ জৈন এবং কমল সিং ভুতোরিয়াকে (এই কোম্পানির কর্মচারী) বলেছিলেন দুজন ভুয়ো ডিরেক্টরকে আনতে সেই অনুযায়ী রণেশ, মৃন্ময় মালাকার নামক দুজন ভুয়ো ডিরেক্টরকে নিয়ে আসেন তারা। এরা ডামি বা ভুয়ো ডিরেক্টর। কিছু সম্পত্তি অর্পিতার নামে রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি নিজের সম্পত্তি। যেগুলোর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অর্পিতার ছিল। যার সঙ্গে পার্থর কোনো সম্পর্ক নেই। সবদিক বিচার করেই জামিনের আবেদন করেন অর্পিতার আইনজীবী।

এদিকে, ইডির আইনজীবী আদালতে বলেন, অর্পিতার আইনজীবী যে গাড়িতে এলেন, সেই গাড়িতে গভঃ অফ ইন্ডিয়া এমব্লেম লাগানো ছিল। এটা তো হিসেব মত বেআইনি। এতবড় আইনজীবীকে নিয়ে আসা হল, তাহলে অর্পিতা সাধারণ একজন বোরে হয় কীভাবে? তুমি সুযোগসুবিধা ভোগ করবে, কিন্তু কাস্টডিতে থাকবে না, সেটা হয় না। ইডি-র আইনজীবীর সংযোজন, Lic ডকুমেন্টে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অর্পিতা কাকু বলে মেনশন করেছেন, আমরা দুই কাকুকে চিনি, কালীঘাটের কাকু আর এই এক কাকু। ২১.৯ কোটি উদ্ধার হয়েছে তার বাড়ি থেকে। উনি বোরে নন, সক্রিয় অংশ ছিলেন এই চক্রান্তের। উনি জানতেন না এমনটা তো নয়, উনি জানতেন। বিলাসবহুল জীবনযাত্রার জন্য এইটাকে বেছে নিয়েছেন। উনি সহযোগিতা করেননি, উনি খালি বলে গেছেন, আমি জানি না। আমরা বলছি না আপনি চাকরি দিয়েছেন, কিন্তু সেই অনৈতিক সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন।

(Feed Source: news18.com)