প্রকৃতির আশ্চর্য লীলা! মরুভূমির ৫০ ডিগ্রি গরমেও ঘন সবুজ এই গাছ! হচ্ছে ফল-ফুল!

প্রকৃতির আশ্চর্য লীলা! মরুভূমির ৫০ ডিগ্রি গরমেও ঘন সবুজ এই গাছ! হচ্ছে ফল-ফুল!

রাজস্থান:  পশ্চিম রাজস্থানের সীমান্তবর্তী জেলা বারমের। চরমভাবাপন্ন এই এলাকায় গরমের দাপট খুবই বেশি। সাধারণত এখানে গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রির আশেপাশে থাকে। আবার শীতকালে সেই তাপমাত্রাই পৌঁছে যায় একেবারে শূন্য ডিগ্রিতে। এমন আবহাওয়ায় জীবনধারণ করা যে কোনও প্রাণীর পক্ষেই বেশ কষ্টসাধ্য। তবুও এখানে পাওয়া যায় এমন একটি গাছ, যা সারা বছর সবুজ থাকে। জালোর, জয়সলমের, বারমের, পালি, যোধপুর ইত্যাদি জেলায় এক বিশেষ ধরনের কাঁটাযুক্ত গাছ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।

সব থেকে আশ্চর্যের কথা হল, গ্রীষ্ম যত তীব্র হয়, ততই মরুভূমির এই গাছেও ফুল ধরতে শুরু করে। প্রবল গ্রীষ্মের কয়েক মাস, মরুভূমি এই কাঁটাযুক্ত গাছের জন্যই সবুজ থাকে। মরুভূমির প্রচণ্ড উত্তাপেও সেই সবুজ ফিঁকে হয় না। এমনকী তাপমাত্রা যখন সর্বোচ্চ ৫০ ডিগ্রিতে পৌঁছায়, তখনও একমাত্র এই গাছই সবুজ দেখায়, ঘন হয়ে ওঠে। নানা রকম উপকারে লাগে এই গাছ। এই গাছে যে ফল ধরে, তাকে স্থানীয় গ্রামাঞ্চলে পিলু বলা হয়। গরমের সময় এলাকার বাসিন্দারা এই ফল খুব ভালবেসে খান। পিলু লাল-গোলাপী রঙের হয়ে থাকে। এই সময় বাজার ছেয়ে গিয়েছে এই ফলে।

মরুভূমি অঞ্চলে দুই প্রজাতির জাল গাছ পাওয়া যায়। প্রচলিত ভাষায় এটি ‘খারা উপমিঠা’ জাল নামে পরিচিত। সাধারণত কাঁচা-মিঠে স্বাদের হয়ে থাকে এই ফল। এর বৈজ্ঞানিক নাম সালভাডোরা ওলিওডস। অন্য একটি প্রজাতি আবার মিষ্টি স্বাদের হয়ে থাকে, একে সালভাডোরা পারসিকা বলা হয়। গাছের বীজ থেকে প্রাপ্ত তেল থেকে ওষুধ প্রস্তুত করা হয়। মিষ্টি প্রজাতির গাছে শাখা থেকে টুথপিক তৈরি করার প্রথাও রয়েছে। এই ব্যবহার অত্যন্ত প্রাচীন

জালোর, জয়সালমের, বারমের, পালি, যোধপুর প্রভৃতি মরু এলাকায় এই গাছ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। জাল গাছ গ্রামাঞ্চলের পাশাপাশি শহরেও পাওয়া যায়। স্থানীয়রা এই গাছের ফলকে দেশি আঙুরও বলে থাকেন।এর ঐতিহ্যও বেশ প্রাচীন। মহাভারতের কর্ণপর্বের ত্রিশতম অধ্যায়ের ২৪ নম্বর শ্লোকে এই জালের কথা রয়েছে। তা থেকেই এর গুরুত্ব সম্পর্কে জানা যায়। কথিত আছে যে গুরু নানকের জন্মের সঙ্গেও জাল গাছের সম্পর্ক রয়েছে। মনে করা হয় গুরু সূর্যের আলো থেকে বাঁচতে এটি ব্যবহার করেছিলেন।

মরুভূমি অঞ্চলের জন্য এই গাছ প্রকৃতির আশীর্বাদের মতো। গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রিতে পৌঁছে গেলেও এই গাছের ঘন সবুজ রঙ অটুট থাকে। মেলে সুস্বাদু ও উপকারী ফল। আবার এত ঘন হয় এই গাছগুলি, তাই এর ছায়াও প্রচুর, যা মানুষকে একটু স্বস্তি দিতে পারে।

(Feed Source: news18.com)