Rajaram Mondal, Madhubani: পৃথিবীর ইতিহাস চাপা পড়ে থাকে তার গর্ভে। তাই এই পৃথিবী রহস্যগর্ভও বটে। সেই সম্ভাবনা অনেকাংশে উস্কে দিয়েছে মধুবনীতে প্রাপ্ত প্রত্নসামগ্রী।
বিহারের মধুবনীতে এখনও মাটির নিচে চাপা পড়ে আছে এমন অনেক রহস্য। মাটি খননের সময় সেই সব রহস্যের সামান্য সন্ধান পাচ্ছেন এলাকার মানুষজন। মধুবনী জেলার সায়নী পঞ্চায়েতে সম্প্রতি মিলেছে এমনই নজির। এখানে রয়েছে একটি পুকুর। এই পুকুরটি খননকালে গত বেশ কয়েক বছর উঠে আসছে প্রত্নপাথরের দেব-দেবীর মূর্তি। আর সেই সব মূর্তি ঘিরেই তৈরি হয়েছে রহস্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই গ্রামের বাসিন্দা ৬৫ বছর বয়সী শ্রীপ্রসাদ মুখিয়া এই পুকুরের দেখাশোনা করেন। তাঁর দাবি, রাতে পুকুরের পাশ দিয়ে দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি জলে কোনও অদ্ভুত বস্তু নড়তে দেখেছেন। এর মধ্যে কোনও আধিদৈবিক বিষয় রয়েছে বলেই তিনি বিশ্বাস করেন। একই ভাবে বিশ্বাস করেন এলাকার অন্য বাসিন্দারাও।
স্থানীয় বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন, ওই পুকুরে সর্পদেবতার বাস। এলাকার বাসিন্দারা এই দেবতাকে বহুবার প্রত্যক্ষ করেছেন বলেও দাবি করেন। তাঁদের দাবি, ওই পুকুরে কোনও অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কেউ নামলে তাঁকে সর্পদংশনের শিকার হতে হবে।
তবে সত্যিই এমন কোনও ঘটনা কখনও ঘটেছে কি না কেউ মনে করে বলতে পারেননি। তাঁদের দাবি, তাঁদের পূর্বপুরুষেরা বলতেন, এক সময় এখানে রাজা সেনের দুর্গ ছিল। বহু বছর আগে এখানে একটি মন্দির ছিল, যা সম্রাট বাবর ভেঙে দিয়েছিলেন। যদিও এই তথ্যের সপক্ষেও কোনও অকাট্য প্রমাণ দিতে পারেননি কেউ।
গ্রামের বাসিন্দারা জানান, গত ৮ বছরে তিনবার সায়নী পঞ্চায়েতের এই পুকুর খননের সময় পৌরাণিক আমলের নানা দেব-দেবীর মূর্তি উদ্ধার করা হয়েছে। আর তারই ফলে মানুষের মধ্যে আধিদৈবিক বিষয়ের বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয়েছে।
এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, কিছুকাল আগে এই পুকুর থেকে একটি কলসও বেরিয়েছিল। পুকুরের ভিতরে আরও অনেক কিছু থাকতে পারে বলে তাঁরা মনে করেন।
এদিকে ওই পুকুর থেকে সর্বশেষ যে মূর্তিটি পাওয়া গিয়েছে, তা পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন সেটি ৪০০ থেকে ৫০০ বছরের পুরনো বিষ্ণু মূর্তি হতে পারে। ৪ ফুট উচ্চতার ওই মূর্তিটি যে পাথরে তৈরি তা এখন আর পাওয়াই যায় না।