‘অনুব্রত মণ্ডল আমার রাজনৈতিক গুরু’, কাজল শেখকে প্রার্থী করল TMC

‘অনুব্রত মণ্ডল আমার রাজনৈতিক গুরু’, কাজল শেখকে প্রার্থী করল TMC

ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: বীরভূমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) তৈরি করে দেওয়া দলের কোর কমিটিতে আগেই ঠাঁই পেয়েছিলেন। এবার জেলা পরিষদ আসনে কাজল শেখকে প্রার্থী করল তৃণমূল (TMC)। যিনি আবার অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত। যদিও এদিন অনুব্রতকে তাঁর রাজনৈতিক গুরু বলে মন্তব্য় করেন কাজল শেখ (Kajal Sheikh) ।

অনুব্রত-হীন বীরভূমে নতুন মোড়, ভোটের ময়দানে কাজল, ভাঙল প্রথা

অনুব্রত-হীন বীরভূমের রাজনীতিতে নতুন মোড়।আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে জেলা পরিষদে মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন বীরভূমে তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য ও নানুরের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা কাজল শেখ।বীরভূম  তৃণমূল কংগ্রেস জেলা পরিষদের প্রার্থী কাজল শেখ বলেছেন, মমতা অভিষেকের দিকে তাকিয়ে মানুষ ভোট দেবে। দুহাত ভরে মানুষ তৃণমূলকে ভোট দেবে। লালমাটির জেলার রাজনীতিতে কাজল শেখ বরাবরই অনুব্রত মণ্ডলের বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত হলেও, দু’জনের মধ্যে একটি বিষয়ে মিল ছিল। এতদিন পর্যন্ত সংগঠনের রাশ হাতে রাখলেও, ভোটের ময়দানে কখনও লড়াই করেননি অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখ। কিন্তু এবার সেই প্রথা ভাঙল।

‘অনুব্রত মণ্ডল হচ্ছে আমার রাজনৈতিক গুরু’

যদিও কাজল শেখ বলেছেন, ‘অনুব্রত মণ্ডল হচ্ছে আমার রাজনৈতিক গুরু। দল প্রয়োজন মনে করেছে, আমাকে নমিনেশন দিয়েছে। দলের জন্য নমিনেশন কেন নিজের জীবনটা পর্যন্ত বিসর্জন দিতে পারি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য কাজল শেখ সবকিছু করতে প্রস্তুত আছে।’ এই প্রেক্ষাপটে অনেকেরই মনে পড়ে গেছে, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের কথা। সেবার নানুর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করেছিল অনুব্রত ঘনিষ্ঠ গদাধর হাজরাকে। কিন্তু, সকলকে চমকে দিয়ে ভোটে জয়ী হন সিপিএমের প্রার্থী শ্যামলী প্রধান।

কী মত ওয়াকিবহাল মহলের ?

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, নানুনের তৃণমূল নেতা ও দক্ষ সংগঠক কাজল শেখের সমর্থন না পাওয়ার কারণেই সেবার হারতে হয় গদাধর হাজরাকে। এই প্রেক্ষাপটেই প্রশ্ন উঠছে, অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখের গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব কি এবারের পঞ্চায়েত ভোটেও প্রভাব ফেলবে? নানুর বিধানসভা এলাকায় ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং জেলা পরিষদের চারটি আসন রয়েছে। এর মধ্যে বোলপুরের মধ্যে ৬টি ও নানুরে ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত পড়ে। বোলপুরের ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রার্থী হিসেবে প্রাধান্য পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলের করে যাওয়া তালিকার সদস্যরা।

এবার ‘তাঁকে’ আর প্রার্থী করল না দল

অন্যদিকে নানুনের ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রাধান্য পেয়েছেন কাজল শেখের অনুগামীরা। জেলা পরিষদের চারটি আসনের মধ্যে তিনটিতেই প্রার্থী করা হয়েছে কাজলের অনুগামীদের মধ্যে। যার একটিতে খোদ প্রার্থী হয়েছেন তিনিই। শুধু তাই নয়, কাজল শেখ জেলা পরিষদের যে আসনে প্রার্থী হয়েছেন, সেখানে গতবার দাঁড়িয়েছিলেন অনুব্রত ঘনিষ্ঠ ও বীরভূম জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কেরিম খান। এবার তাঁকে আর প্রার্থী করল না দল।

 তাহলে কি অনুব্রত-পন্থীদের ডানা ছাঁটার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল?

প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি অনুব্রত-পন্থীদের ডানা ছাঁটার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল? বীরভূম জেলা পরিষদ তৃণমূল প্রার্থী ও বিদায়ী সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, নতুন মুখ তো আনতেই হবে। পুরনো নতুন মিশিয়ে। আমার ডানা ছাঁটা হয়েছে এরকম কোনও কথা জানা নেই। এই জেলায় দলের সংগঠন কে তৈরি করেছে? যে ভিত তৈরি করেছে, তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই। বীরভূম কংগ্রেস জেলা সভাপতি মিল্টন রশিদ বলেছেন, এখন ভোটের ফলে কী হবে, সেটাই দেখার।

(Feed Source: abplive.com)