কলকাতা: বিকেল চারটে থেকে আর জি কর হাসপাতালে ভাঙড়ে গুলিবিদ্ধ আহতদের নিয়ে আসা হয়। তার মধ্যে সেলিম মোল্লার পেটে গুলি লেগেছে বলে জানায় তাঁর পরিবারের লোকজন।
সেলিম মোল্লার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান ‘ আমি বাজারের দিকে বেড়িয়েছিলাম। হঠাৎ করে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। তখনই আমার পেটে গুলি লাগে।’
সেই গুলি সেলিমের পেটে লেগে এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে বেরিয়ে যায় বলে পরিবারের দাবী। হাসপাতালে আসা পর্যন্ত সেলিম মোটামুটি আস্তে আস্তে কথা বলছিলেন। কিন্তু ভাঙ্গরের বাস্তব পরিস্থিতি ফুটে উঠছিল সেলিমের সঙ্গে আসা পরিবারের লোকজনদের চোখ মুখে।
পর পর অ্যাম্বুলেন্সে করে আমিরুল মোল্লা, মনিরুল মোল্লাদের নিয়ে আসা হয়। কারও হাত ছুঁয়ে বেরিয়ে গেছে গুলি। কারো বা ডান হাতে কাঁধের কাছে গুলি লেগেছে। প্রত্যেকেই আরজি কর মেডিকেল কলেজের ট্রমা কেয়ার ইউনিটে ভর্তি।
সর্বশেষে আসেন ইসমাইল পাহাড় (২৮) নামে একটি ছেলে। তাঁর বক্তব্য, রাজমিস্ত্রির কাজ করতে করতে বাড়ির উপর থেকে নিচে নেমেছিলেন, হঠাৎ করে এই গুলি ছুটে আসে। তাঁর ডান পায়ের থাইয়ের উপরের অংশে গুলি লেগেছে।
প্রত্যেকের অস্ত্রোপচার করছেন ডাক্তাররা। ভাঙর প্রায় তৃণমূল কংগ্রেস শূন্য। বাইরে থেকে গুন্ডা বাহিনী এনে তৃণমূলের নেতারা সন্ত্রাস চালাচ্ছে।সেখানে একটা প্রশ্ন উঠেছে, তৃণমূল কংগ্রেসের এক জন কর্মী, তিনিও পর্যন্ত আজকের পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনের অশান্তিতে মারা গেছেন।
আরজি কর হাসপাতাল রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছে। অন্যান্য এলাকার রোগীর পরিজনেরা ওখানে এসে রয়েছেন, তাদের বেশিরভাগেরই বাড়ি পঞ্চায়েত এলাকায়। এই দৃশ্য চোখের সামনে দেখে তাদের প্রত্যেকেরই একটাই বক্তব্য। ভোট শান্তিতে হোক, রক্ত যাতে না ঝরে কারও।
তবে হাসপাতাল চত্বরে আসা সাধারণ মানুষ যে এই বাংলায় নির্বাচন নিয়ে মনের ভেতরে ক্ষুব্ধ, সেটার বহিঃপ্রকাশ চোখে পড়ার মতো ছিল।