পঞ্চায়েতের মাঝেই পাখির চোখ লোকসভা, এবার প্রকাশ্যে অভিষেকের ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’

পঞ্চায়েতের মাঝেই পাখির চোখ লোকসভা, এবার প্রকাশ্যে অভিষেকের ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’

দক্ষিণবঙ্গ: মনোনয়ন পর্ব শেষ হয়েছে৷ আর মাত্র ক’টা দিন বাকি৷ আগামী মাসের ৮ জুলাই এ রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোট৷ কিন্তু, পঞ্চায়েত ভোটের মাঝে আচমকাই কার্যত লোকসভা নির্বাচনের প্রচার পর্ব শুরু করে দিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতার সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজেই প্রকাশ করলেন সাংসদ অভিষেকের নিজের রিপোর্ট কার্ড৷ নাম ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’৷

কী এই ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’? ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’ আদতে হল সাংসদ অভিষেকের কাজের খতিয়ান৷ এদিন এই বই প্রকাশ করে অভিষেক বলেন, ‘‘এটা আমাদের দায়বদ্ধতা, যাঁরা আমাকে জিতিয়েছেন, তাঁদের হিসাব দেওয়া আমার দায়িত্ব। বছরে সাংসদ হিসাবে যে ৫ কোটি করে টাকা পেয়েছি, তার খরচের খতিয়ান তুলে ধরা আমার কাজ৷ আমি নিঃশব্দ বিপ্লবের মাধ্যমে আজ হিসাব দিচ্ছি। কোভিডের জন্য গত দুই বছর এই পুস্তক বার করতে পারিনি। তাই সাত বছরের কাজের খতিয়ান দিচ্ছি।’’

এরপরেই দেশের প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিশানা করে অভিষেকের দাবি, ‘‘দেশের কোনও সাংসদ এটা করে না৷ এমনকি, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও করেন না। আমি আমার রিপোর্ট কার্ড আপনাদের সামনে নিয়ে এসেছি। বিরোধীদের অনুরোধ করব, আপনারাও আপনাদের রিপোর্ট কার্ড সামনে নিয়ে আসুন। বিজেপিকে বলব, একটা বই নয়, একটা পাতা প্রকাশ করে দেখান। তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ করছি। গত নয় বছর দক্ষিণ ২৪ পরগণার জন্যে কী করেছে, বা রাজ্যের জন্য কী করেছে, তার একটা হিসাব দিন।’’

এদিনের মঞ্চ থেকে তাঁকে ও তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইডি-সিবিআইয়ের তলব করা নিয়েও কেন্দ্রকে নিশানা করতে ছাড়েননি অভিষেক৷ তাঁর জোরাল দাবি, ‘‘২০২১ এর ভোটে যে ব্যবধান ছিল, সেই ব্যবধান ২০২৩ সালে বাড়বে৷ ২০২৩ এর ব্যবধান ২০২৪ সালে বাড়াব। জেনে রাখুন, আমি মাথা নিচু করব না৷ ওরা অনেক চেষ্টা করেছে৷ প্রমাণ থাকলে দিন। ৩ বছর আগে যা বলেছিলাম, আজও আমি তাই বলছি। আমাকে ধমকে, ভয় দেখিয়ে লাভ নেই৷ যেদিন রাজনীতি করব না সেদিন নিষ্ক্রিয় হয়ে যাব। নয়ত ভারত সেবাশ্রমের মাধ্যমে সমাজসেবা করব। মাথা নিচু আমি করব না৷ আমার সাথে লড়ুন৷ আমার পরিবারকে হেনস্থা করছেন৷ এর জবাব মানুষ দেবে। জেনে রাখুন ইডি, সিবিআই পাঠিয়ে মাথা নিচু করা যাবে না৷’’

পঞ্চায়েত নির্বাচনে কলকাতা হাইকোর্টের কেন্দ্রীয় বাহিনীর নির্দেশ প্রসঙ্গেও এদিন মন্তব্য করতে দেখা যায় অভিষেককে৷ তাঁর কথায়, ‘‘আমি কলকাতা হাইকোর্টকে ধন্যবাদ জানাই। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে উপকার করেছেন। আগের ভোটেও কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল। রেজাল্ট কী? পঞ্চায়েত ভোটেও তৃণমূল কংগ্রেস জিতবে। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিলেও জিতবে। ভোট মানুষ দেয়। ভোট হাইকোর্ট, কেন্দ্রীয় বাহিনী, ইডি, সিবিআই দেয় না। ’’

পঞ্চায়েতে মনোনয়ন পর্ব ঘিরে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে রাজ্যের একাধিক জেলা৷ কখনও মুর্শিদাবাদের ডোমকল, কখনও উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া, কখনও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়৷ প্রাক পঞ্চায়েত হিংসায় বলি হয়েছেন চারজন রাজ্যবাসী৷

মনোনয়ন জমা দেওয়ায় বিরোধীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ অবশ্য এদিন ফুৎকারে উড়িয়ে দেন অভিষেক৷ বলেন, ‘‘দু’জন, চারজন অভিযোগ করে আসছে তাঁরা মনোনয়ন দিতে পারেননি। এক ডাকে অভিষেকে ফোন করতে বলেছিলাম, ফোন করেছিলেন?…১০০% আসনে বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছে। যা আগে কখনও হয়নি। বাম আমলে এই সব হত না৷ সবার অধিকার আছে ভোটে লড়ার। আজ আমি গর্ব করে বলছি বিরোধীরা ১০০% আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছে।’’

(Feed Source: news18.com)