
ওঙ্কার সরকার, কলকাতা : বাংলার সমস্ত অ্যালোপ্যাথিক পাঠ্যক্রমের জন্য নতুন সিদ্ধান্ত বলবৎ হতে চলেছে। এ বার কোনও পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলেই এক বার হবে রিভিউ। নয়া সিদ্ধান্ত রাজ্যের শিক্ষা দফতরের। পাঁচ হাজারেরও বেশি এমবিবিএস এবং দু’হাজারেরও বেশি স্নাতকোত্তর আসনে পাঠরত প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর জন্য জারি হবে এই নিয়ম। মে মাসে সব মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে এই চাঞ্চল্যকর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, এতদিন ফলাফল মনের মতো না হলে ফল প্রকাশ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিভিউয়ের নির্দিষ্ট ফরম্যাট মেনে আবেদন করতে হতে। প্রতিটি পেপারের রিভিউয়ের জন্য খরচ পড়ত দু’হাজার টাকা। তবে সেই রিভিউয়ে সবসময় নম্বর বাড়ত এমন নয়। সাম্প্রতিককালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে তার উদাহরণও রয়েছে। অনার্স পাওয়ার যোগ্য মনে করে খাতা রিভিউয়ে পাঠিয়েছিলেন কিছু ছাত্রছাত্রী। কিন্তু রিভিউয়ের ফল হাতে আসার পর কয়েকজন দেখেন, নম্বর বাড়েনি উল্টে ফেল করে গিয়েছেন। এই ধরনের ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন ওঠে।
সে কারণেই কি এই সিদ্ধান্ত? এই বিষয়ে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক জানান, ‘‘একেবারেই নয়। ওই ঘটনার সঙ্গে এই সিদ্ধান্তের সম্পর্ক নেই। মডার্ন মেডিসিন পঠনপাঠনের চূড়ান্ত নীতি নির্ধারক সংস্থা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের নয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পরীক্ষা এবং সাপ্লি এই দুইয়ের ফল তিন থেকে ছ’সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে হবে। হাতে নামমাত্র সময়। ফলে কথায় কথায় রিভিউ যাচাই করার মতো অবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে থাকবে না। কোনও ছাত্রছাত্রী ফেল করলে নিশ্চয়ই আমরা রিভিউ করব।’’
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের এক পড়ুয়া বলেন, ‘‘গ্রামের বহু পড়ুয়া অনেক কষ্ট করে শহরে এসে পড়াশোনা করেন। প্রত্যেকে ভালে ফলের আশা করেন। ফল আশানুরূপ না হলে রিভিউয়ের আবেদন জানান তাঁরা। তাই রিভিউয়ের অধিকার কেড়ে নিলে তা ছাত্রছাত্রীদের অধিকার হরণ করার শামিল। আমরা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাই।’’
