কলকাতা: ব্যাঙ্কে কি আদৌ নিরাপদ সাধারণ মানুষের টাকা! এই প্রশ্নই তুলে দিল রাজস্থানের জালিয়াতি।
রাজস্থানের দৌসা জেলার এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা থেকে খোয়া গিয়েছে বিপুল পরিমাণ টাকা। ঘটনায় অভিযোগের তির ব্যাঙ্ককর্মীর দিকেই। ইউকো ব্যাঙ্কের নাঙ্গল রাজাওয়াতান শাখায় উঠেছে এই জালিয়াতির অভিযোগ।
এই শাখায় আশপাশের বহু বাসিন্দাই অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। অভিযোগ, গত তিন-চার মাস ধরে এই ব্যাঙ্কের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা খোয়া যাচ্ছে। কারও পাঁচ তো কারও তিন লক্ষ টাকা উধাও হয়েছে।
গত শনিবার ওই শাখার কিছু উপভোক্তা পাসবুক আপডেট করাতে গিয়ে এই গরমিল দেখতে পান। তারপরই চাঞ্চল্য তৈরি হয়। দেখা যায় বহু মানুষের সঙ্গেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এলাকার মানুষ ব্যাঙ্কের শাখায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। জানা যায় ওই শাখার ‘ক্যাশিয়ার’ দু’দিন ধরে কাজে আসছেন না।
গ্রাহকদের তরফে অভিযোগ পেয়ে ওই শাখার ম্যানেজার আশ্বাস দেন পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার। প্রাথমিক খোঁজখবর নেওয়ার পর ওই ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ার জয়পুরের বাসিন্দা অনিল শর্মাকে সাসপেন্ড করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। সোমবারই অডিট টিম ইউকো ব্যাঙ্কের নাঙ্গল রাজাওয়াতন শাখায়ও গিয়ে সব দিক খতিয়ে দেখবে। তারপরই নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে ঠিক কত টাকা সরানো হয়েছে, এমনই জানিয়েছেন ম্যানেজার।
তবে এখনও পর্যন্ত মোট ২০ জন গ্রাহক অভিযোগ করেছেন তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরানো হয়েছে বলে। সেই সব হিসেব মেলালে প্রায় ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
কিন্তু কেমন করে ঘটানো হল এই জালিয়াতি?
মনে করা হচ্ছে যে সব অ্যাকাউন্টের সঙ্গে কোনও মোবাইল নম্বর যুক্ত করা নেই বা মেসেজিং সার্ভিস সক্রিয় নেই, সেই সব অ্যাকাউন্টকেই চিহ্নিত করেছিলেন অভিযুক্ত ওই ব্যাঙ্ককর্মী, যাতে টাকাপয়সা লেনদেন হলে গ্রাহকের কাছে মেসেজ না যায়। তারপর সেলফ উইথড্রয়াল দিয়ে ৫০ হাজার করে টাকা তুলে নেন। কারণ একবারে ৫০ হাজার টাকার বেশি তুলতে গেলে ম্যানেজারের অনুমতি লাগে।
গ্রাহকেরা অভিযোগ করার পর প্রথমেই সন্দেহ গিয়ে পড়ে ক্যাশিয়ারের উপর। কারণ হঠাৎই তিনি কাজে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। মনে করা হচ্ছে সোমবার অডিট রিপোর্ট পাওয়ার পর সিবিআই তদন্ত দাবি করা হতে পারে।