Rahul Gandhi in UK: বাবা এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধির হত্যাকাণ্ডই তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা! এমনটাই জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি। তিনি আরও জানিয়েছেন, সেই দিনের ঘটনাটি তাঁকে এমন কিছু জিনিস শিখিয়েছে যা বাবার হত্যার মতো ঘটনা না দেখলে তিনি জীবনেও শিখতে পারতেন না। গত সোমবার কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূত শিক্ষাবিদ ডঃ শ্রুতি কপিলার সঙ্গে এক কথোপকথনে রাহুল গান্ধিকে তাঁর বাবার মৃত্যুবার্ষিকী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়। ১৯৯১ সালের মে মাসে তামিলনাড়ুতে একটি নির্বাচনী সমাবেশে LTTE-র আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হন রাজীব গান্ধি।
১৯৮৪ থেকে থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ভারতের ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন রাজীব গান্ধি। ১৯৯১ সালের ২১ মে রাতে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরামবুদুরে একটি নির্বাচনী সমাবেশে ধানু নামে একজন মহিলা আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী ৪৬ বছর বয়সী রাজীব গান্ধিকে হত্যা করেন। লিবারেশন টাইগার্স অফ তামিল ইলম (এলটিটিই) পরিচালিত এই সন্ত্রাসবাদী হামলায় ধানু সহ আরও ১৪ জন নিহত হয়েছিলেন।
কর্পাস ক্রিস্টি কলেজের ইতিহাসের সহযোগী অধ্যাপক ডঃ শ্রুতি কপিলা রাহুল গান্ধিকে জিজ্ঞাসা করেন এই হিংসার ঘটনার স্মৃতিকে নিয়ে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কীভাবে জীবনযাপন করেন তিনি? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বেশ খানিকক্ষণ নীরব থাকেন রাহুল, তারপর বলেন, “আমার জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা ছিল আমার বাবার মৃত্যু। এর চেয়ে বড় অভিজ্ঞতা আর নেই।”
“যে ব্যক্তি বা শক্তি আমার বাবাকে হত্যা করেছে সে আমাকে প্রচণ্ড ব্যথা দিয়েছে একথা সত্য, ছেলে হিসাবে আমি আমার বাবাকে হারিয়েছি এবং এটি খুবই বেদনাদায়ক। কিন্তু তারপরেও আমি এই সত্য থেকে দূরে সরতে পারি না যে এই ঘটনাটিই আমাকে এমন কিছু শিখিয়েছিল যা আমি আর কখনও হয়তো শিখতাম না। সুতরাং, যতক্ষণ না আপনি শেখার জন্য প্রস্তুত, লোকজন কতটা দুষ্ট বা মন্দ তা বিবেচ্য নয়,” বলেন কংগ্রেস নেতা।
রাহুল গান্ধি প্রতিদিনের রাজনীতির সঙ্গে বিষয়টিকে যুক্ত করে বলেন, “যদি এই সময়ের দিকে তাকাই, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমাকে আক্রমণ করেন, এবং আমি ভাবি, কী অদ্ভুত লোক, আমাকে কত আক্রমণ করছেন। এটি কোনও জিনিসকে দেখার একটি উপায়। আর দুর্দান্ত একটি অন্য উপায় হল এই ভাবে ভাবা যে, আমি তাঁর কাছ থেকে কিছু শিখতে পারছি কী না।”
রাহুল আরও বলেন, “জীবনে সর্বদাই আঘাত পাবেন, বিশেষ করে যদি এমন জায়গায় থাকেন যেখানে আরও বড় বড় শক্তির খেলা চলে, সবসময়ই আহত পাবেন। বিষয়টা খানিক সমুদ্রে সাঁতার কাটার মতো, বড় ঢেউয়ের সঙ্গে লড়া।” কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিবেশন চলাকালীন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পড়ুয়াই রাহুল গান্ধিকে প্রশ্ন করেন কীভাবে ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে তাঁরা যুক্ত হতে পারেন? কংগ্রেস নেতা জানান, পড়ুয়ারা দলের নেতাদের সঙ্গে ইন্টার্ন হিসাবে যোগ দিতে পারে এবং তারপরে রাজনৈতিক পদক্ষেপের সাক্ষী হওয়ার জন্য ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে তাঁদের পাঠানো হতে পারে।