অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে গভীর রাতে বৈঠকে বসল মুসলিম ল বোর্ড, কী সিদ্ধান্ত ?

অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে গভীর রাতে বৈঠকে বসল মুসলিম ল বোর্ড, কী সিদ্ধান্ত ?

নয়াদিল্লি :  দেশে ইউনিফর্ম সিভিল কোড (UCC) লাগুর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Prime Minister Narendra Modi) জোরালো সওয়ালের পরই রাতবিরেতে লম্বা বৈঠক করল ভারতের মুসলিমদের শীর্ষস্থানীয় সংস্থা অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড ( All India Muslim Personal Law Board )।

প্রধানমন্ত্রী মোদি, মঙ্গলবার ভোপালে বিজেপি কর্মীদের সভায় দেশে ইউনিফর্ম সিভিল কোড (Uniform Civil Code) চালু করার সপক্ষে একাধিক যুক্তি দিয়েছেন। এদিন মোদি বলেন, ভারতের সংবিধানেও এই বিধি চালুর অঙ্গীকার রয়েছে, শীর্ষ আদালতও তা লাগু করতে বলেছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এদিন আরও বলেন, আজকাল অভিন্ন দেওয়ানি বিধির কথা বলে বহু মানুষকে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এক দেশে কী ভাবে দুটি আইন চলতে পারে? সংবিধান সমানাধিকারের কথা বলে…সুপ্রিম কোর্টও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বলবৎ করার কথা বলেছে। ওরা (বিরোধী) শুধু ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করছে।’

প্রধানমন্ত্রীর বলেন, মুসলিম ভোট-ব্যাঙ্ক নিয়ে রাজনীতি করার উদ্দেশে বিরোধী দলগুলি মানুষকে প্ররোচিত করছে। বিজেপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে,  তুষ্টিকরণের পথ তারা অবলম্বন করবে না।

ওই একই দিনে তড়িঘড়ি ভার্চুয়াল বৈঠকে বলে মুসলিম ল বোর্ডের সদস্যরা। বৈঠক চলে প্রায় তিন ঘন্টা। সূত্রের খবর, তারা প্রধানমন্ত্রী মোদির মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ইউসিসির আইনি দিকগুলি নিয়ে আলোচনা করেছেন। স্থিরিকৃত হয়েছে, মুসলিম সংগঠনগুলি তাঁদের আইনজীবীদের যুক্তিগুলি এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতগুলি ল-কমিশনে পেশ করবে।

সম্পত্তির উত্তরাধিকার, সন্তান দত্তক নেওয়া, বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ ইত্যাদি নিয়ে এক এক দেশে ধর্ম এবং জাতি নির্বিশেষে নিজস্ব আইন-কানুন রয়েছে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে দেশের সমস্ত নাগরিককে একই পারিবারিক আইন মেনে চলতে হবে।

এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার আরও বলেন, “আপনারা আমাকে বলুন, একটি বাড়িতে একজন সদস্যের জন্য একটি আইন এবং অন্য সদস্যের জন্য অন্য আইন কীভাবে হতে পারে? সেই বাড়িটি কি ঠিকমতো চলবে? তাহলে কীভাবে একটি দেশ এমন দ্বৈত ব্যবস্থায় চলতে পারবে? আমাদের আছে? মনে রাখতে হবে,সংবিধানেও সবার জন্য সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে”

তিনি বিরোধীদের কটাক্ষ করে বলেন, ওরা মুসলিম, মুসলিম বলে স্লোগান দেয়। কিন্তু তারা যদি সত্যিই মুসলমানদের স্বার্থে কাজ করত, তাহলে মুসলিম পরিবারগুলো শিক্ষা ও চাকরিতে পিছিয়ে থাকত না।

প্রধানমন্ত্রীর এই  মন্তব্যের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলি কড়া  প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি ভারতের বহুত্ববাদ এবং বৈচিত্র্যের আদর্শকে চূর্ণ করতে চায়। সেইসঙ্গে দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং মূল্যবৃদ্ধির মতো ইস্যুগুলি থেকে নজর সরিয়ে দেওয়ার জন্যই ভোটের আগে এই বিষয়গুলিকে ফোকাসে আনছে। ভারতের মতো বৈচিত্রপূর্ণ দেশে এই বিধির যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তাঁদের মতে, ভারতীয় সংবিধানে নাগরিকের মৌলিক অধিকার, ব্যক্তি স্বাধীনতা, ধর্মাচারণের অধিকারের কথা বলা রয়েছে। শুধুমাত্র সংখ্যার জোরে, মেরুকরণের রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠা দিতে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের উপর জোর করে বিধি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি।

(Feed Source: abplive.com)