ক্রমশ তেতে উঠছে পৃথিবী, আগের সব রেকর্ড ভেঙে বিশ্বের উষ্ণতম দিন

ক্রমশ তেতে উঠছে পৃথিবী, আগের সব রেকর্ড ভেঙে বিশ্বের উষ্ণতম দিন

নিউইয়র্ক : গ্লোবাল ওর্য়ামিং (Global Warming) নিয়ে শোনা যাওয়া সতর্কবার্তা যে আর মোটেই হালকাভাবে নেওয়ার উপায় নেই, সেটাই যেন থার্মোমিটারের কাঁটা প্রমাণ দিয়ে গেল। আগের যাবতীয় সব রেকর্ড ভেঙে দিয়ে বিশ্ব সাক্ষী হল উষ্ণতম দিনের (World Hottest Day)। গত ৩ জুলাই বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ছিল ১৭.০১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এখনও পর্যন্ত ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ২০১৬ সালের অগাস্ট মাসে ১৬.৯২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এতদিন ছিল সর্বোচ্চ। ইউএস ন্যাশনাল সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল প্রেডিকশন (US National Centers for Environmental Prediction) যে তথ্য জানিয়েছে।

আর যে তথ্য সামনে আসার পর থেকেই নতুন আশঙ্কা মাথাচাড়া দিয়েছে। ‘মানবসভ্যতার জন্য মৃত্যুঘণ্টা’ বলেই ঘটনাক্রমকে অভিহিত করছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের আশঙ্কা, এমন একটা দিনের সাক্ষী হওয়া যথেষ্ট আশঙ্কার। এল নিনোর (El Nino) যে প্রবণতা তৈরি হয়েছে, তা বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করছেন তাঁরা। বার্কলে আর্থে গবেষণারত বিজ্ঞানী জেকে হাউসফাদারের আশঙ্কা, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে এরকম চিন্তার দিন আরও বাড়বে। আরও চিন্তার রেকর্ড তৈরি হবে। গোটা বিশ্বে যেভাবে কার্বন ডাই অক্সাইড ও গ্রিন হাউস গ্যাসের নিঃসরণ বেড়েছে, তার সঙ্গে যোগ হয়েছে এল নিনোর প্রবণতা, সবমিলিয়ে উত্তরোত্তর তাপমাত্রা বৃদ্ধিরই আশঙ্কা।’

পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষ থেকে শুরু করে এশিয়া, আমেরিকা বা ইউরোপ মহাদেশ প্রবল তাপপ্রবাহের জের ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের আবহবিদরাও কিছুদিন আগেই জানিয়েছিলেন, এরকম টানা তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার ঘটনাক্রম আগে তাঁরা গাঙ্গেয় বঙ্গে দেখেননি। ক্যালেন্ডারের খাতায় বর্ষা হলেও পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ জায়গাতেই এখনও তাপের যথেষ্ট দাপট জারি রয়েছে। আর তাপের জের শুধু জীবনযাত্রাতেই নয়, পড়তে শুরু করেছে পকেটেও। প্রথমে তাপপ্রবাহ ও পরে মাঝে কয়েকদিনের অতিবৃষ্টিতে কার্যত আকাশ ছুঁয়েছে সবজির দাম। নিত্যপণ্যের দামবৃদ্ধির মাঝেই যা কার্যত চিন্তা বাড়াচ্ছে ক্রমশ।

এদিকে, আগামী বেশ কয়েকবছর ভারত-পাকিস্তান সহ এশিয়ার একাধিক দেশে তাপপ্রবাহের রেশ বাড়বে বলেই কিছুদিন আগে একাধিক বিজ্ঞানী আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। আর তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে আগামী কয়েকবছরের মধ্যে এসি-র ব্যবহার আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা তাদের। আর যার জেরে আখেরে পরিবেশে আরও বেশি গরম বাড়ার আশঙ্কা। গাছ লাগিয়ে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ কমানো, গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণের ওপর নিয়ন্ত্রণ ছাড়া পৃথিবী ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্য থাকার বেশ কষ্টকর এক জায়গা হয়ে উঠবে বলেই আশঙ্কা সবমহলেই।

(Feed Source: abplive.com)