আরও বড় বিপদ ঘনিয়ে আসছে, ইন্টারনেট-বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হতে পারে পৃথিবী, রক্ষাকবচ কি কাজে লাগবে!

আরও বড় বিপদ ঘনিয়ে আসছে, ইন্টারনেট-বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হতে পারে পৃথিবী, রক্ষাকবচ কি কাজে লাগবে!

নয়াদিল্লি: টেলিস্কোপ থেকে কালো কালো জায়গা চোখে পড়ে সূর্যের গায়ে। আসলে সৌরঝড়ের উৎপত্তিস্থল সেগুলি। মাস দুয়েক আগেই পৃথিবীর দিকে ধাবিত হয়েছিল সেই সৌরঝড়। চৌম্বকীয় ক্ষেত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলায় প্রভাব পড়েনি সেভাবে। আমেরিকা এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে রেডিও সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছিল শুধুমাত্র (Science News)। কিন্তু পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে অশনি সঙ্কেত দেখছেন বিজ্ঞানীরা। সৌরঝড়ে আছড়ে পড়েল ইন্টারনেট সংযোগ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন, সবকিছু বন্ধ হয়ে যেতে পারে বেল আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। (Solar Storm)

সৌরঝড় মহাশূন্যের আবহাওয়া হিসেবেই গন্য হয়। সূর্যপৃষ্ঠ থেকে যখন বৈদ্যুতিক ও চৌম্বকীয় বিকিরণ ছিটকে বেরোতে থাকে, তাকেই বলা হয় সৌরঝড়। তার সঙ্গে তীব্র শক্তি নির্গত হয়, যা পৃথিবী-সহ গোটা সৌরজগতে ছড়িয়ে পড়ে। পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের সংস্পর্শে এলে বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে বিক্রিয়া ঘটে মেরুজ্যোতির আকার ধারণ করে। কিন্তু তাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র এবং পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলির উপর প্রভাব পড়ে। পথভ্রষ্ট হতে পারে মহাকাশযানগুলি। ২০০৩ সালে এমনটা ঘটেওছিল। শুধু তাই নয়, সৌরঝড় যদি প্রবল শক্তিশালী হয়, সে ক্ষেত্রে ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অন্ধকারে ঢাকতে পারে বিশ্ব, কারণ এর প্রভাবে বসে যেতে পারে বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রের গ্রিড। জায়গা বিশেষে এমনটা ঘটেওছে বলে জানিয়েছেন ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অফ রিডিংয়ের সৌর-পদার্থবিদ ম্যাথু ওয়েন্স।

সৌরঝড়ের তীব্রতা যেখানে বেশি হয়, সূর্যপৃষ্ঠের সেই এলাকার চৌম্বকীয় ক্ষেত্র পৃথিবীর তুলনায় ২৫০০ গুণ বেশি। গবেষণায় যে পরিসংখ্যান সামনে এসেছে, তা হল, চলতি বছরের জুন মাসেই শুধুমাত্র সূর্যপৃষ্ঠে ১৬০টি ‘সানস্পট’ তৈরি হয়েছে, মাসিক হিসেবে বিগত দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে যা সর্বাধিক। যবে থেকে রেকর্ড রাখা শুরু হয়েছে, সেই অনুযায়ী, এবছর ২৫তম বার। তার আওতায় প্রতি ১১ বছর অন্তর সূর্যপৃষ্ঠে সৌর চৌম্বকীয় চক্র বা সোলার সাইকেল সম্পূর্ণ হয়।

কিন্তু যত সময় যাচ্ছে, এই সোলার সাইকেলের গতিবৃদ্ধি হচ্ছে বলে জানিয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA এবং আমেরিকার ন্যাশনাল ওশিয়ন অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NOAA). এর প্রভাব পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল তো বটেই, মহাশূন্যের সার্বিক আবহাওয়ার উপরও পড়তে পারে। আজ না হলেও, আগামী কয়েক মাস বা বছরের মধ্যে এমন পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

এর আগে, বিজ্ঞানীরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন যে, ২৫তম সোলার সাইকেল চলাকালীন প্রতি মাসে সর্বাধিক ১২৫টি সানস্পট তৈরি হতে পারে। কিন্তু জুন মাসেই সেই সংখ্যা ১৬০-এ পৌঁছে গিয়েছে। আগামী দিনে তা ২০০-য় পৌঁছে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খুব বেশিদিন নয়, আগামী একবছরের মধ্যেই এমন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা। সৌর-পদার্থবিদ কিথ স্ট্রং রবিবার এ নিয়ে ট্যুইট করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “২০০২ সাল থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক মাসিক সানস্পট। জুন মাসে সানস্পটের সংখ্যা ছিল ১৬৩.৪, যা ২০ বছরের মধ্যে সর্বাধিক।”

(Feed Source: abplive.com)