Pakistani Media: পাকিস্তানের মিডিয়াতেও বাংলার পঞ্চায়েত ভোট-সন্ত্রাসের খবর…

Pakistani Media: পাকিস্তানের মিডিয়াতেও বাংলার পঞ্চায়েত ভোট-সন্ত্রাসের খবর…

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ‘ড্যন’ পাকিস্তানের বিখ্যাত মিডিয়া কোম্পানি। তাদের অনলাইন ভার্সনে গতকাল ৮ জুলাই সন্ধের দিকে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে এই হেডিংয়ে– ‘7 killed in Indian village election clashes’! বোঝাই যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে চলা পঞ্চায়েত ভোটের খবর করেছে তারা। সেটা বেশ আশ্চর্যের। কেননা, সন্নিহিত দেশগুলির কাছে কোনও দেশের সরকার নির্বাচনটা গুরুত্বপূর্ণ হতেই পারে। পঞ্চায়েত ভোটের সেই অর্থে কোনও গুরুত্ব আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় না থাকারই কথা।

যাই হোক, উক্ত খবরের প্রথম অনুচ্ছেদেই পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাস ও মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়েছে এবং খবরটিতে পশ্চিমবঙ্গকে বিশেষায়িত করা হয়েছে এই ভাবে– ‘a state notorious for political violence during election campaign’! খবরটিতে তথ্য সমস্ত ঠিক আছে কিনা, বা পশ্চিমবঙ্গকে যেভাবে তারা তাদের পাঠককুলের কাছে পরিচিত করিয়েছে সেটাই-বা কতটা যুক্তিযুক্ত– এসব বিচার-বিশ্লেষণ ভিন্নতর মনোযোগ বা আলোচনা দাবি করে। মোদ্দা কথা হল, পাকিস্তানের এক সংবাদমাধ্যমে ভারতের এক রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটের খবর পর্যন্ত প্রকাশিত হল!

গতকাল সকালের দিকে পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যম (ডিজিটাল) যেভাবে এলাকাভিত্তিক বা জেলাওয়াড়ি পঞ্চায়েত ভোটের হিংসা-সন্ত্রাসের খবর করতে-করতে যাচ্ছিল, তা অনেকটা এরকম:

আরামবাগের খানাকুলে ভোট দিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ তিন ভোটার। আহতদের মধ্যে এক মহিলাও আছেন। এদিন দুপুরের পর খানাকুলের নতিবপুরে বিহারীলাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁরা। তখনই দুষ্কৃতীরা এসে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়তে শুরু করেন।

ভোট দিতে যাওয়ার পথে কুলতলিতে গুলিবিদ্ধ তিন SUCI সমর্থক। কুলতলি ব্লকের মেরিগঞ্জ ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১ নম্বর বুথের ঘটনা। নেতৃত্বের দাবি মোট ৭ জন গুলিবিদ্ধ।

মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর মালিওর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেসের মধ্যে সংঘর্ষ। চলল গুলি। গুলিবিদ্ধ একজন।

মাথাভাঙা ১ ব্লকের বেলতাপাড়া ২১২ নম্বর বুথে তৃণমূল কর্মীকে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। আহত তৃণমূল কর্মী মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জিরানগাছায় বল ভেবে খেলতে গিয়ে বোমা ফেটে আহত দুই শিশু।

কানহাইয়া-করিম বিবাদের জেরে সংঘর্ষ উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে। গুলিবিদ্ধ এক তৃণমূল কর্মী। অভিযোগ করিমের অনুগামীদের বিরুদ্ধে।

মালদা ইংরেজবাজারের নঘড়িয়ায় তৃণমূল প্রার্থীর শাশুড়ির মৃত্যু।

দিনহাটায় বিজেপি কর্মীর মৃত্যু। পেটে গুলি লেগেছিল।

উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখর ২ (চাকুলিয়া)-র বিদ্যানন্দপুর পঞ্চায়েতের ভেবরা ১০ নম্বর বুথে কংগ্রেস-তৃণমূল সংঘর্ষে খুন তৃণমূল কর্মী। নিহতের নাম মহম্মদ শাহেনশা। নিহত বিদায়ী তৃণমূল প্রধানের স্বামী।

মুর্শিদাবাদের নওদায় খুন কংগ্রেস কর্মী। বুথের সামনে মারধর করা হয় কংগ্রেসকর্মী রমজান শেখকে। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। কংগ্রেসের অভিযোগ, বুথে আসার সময় মারধর করা হয় রমজানকে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে খুন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী।

মুর্শিদাবাদের লালগোলায় ভোট সংঘর্ষে মৃত্যু সিপিআই কর্মীর।

পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় খুন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী। তৃণমূল প্রার্থীর বুথ এজেন্ট গৌতম রায় খুন।

নদিয়ার চাপড়ায় নিহত তৃণমূল কর্মী। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মৃত্যু তৃণমূল কর্মী হামজার আলির।

মালদার মানিকচকে নিহত তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী।

কোচবিহারের ফলিমারিতে খুন বিজেপির পোলিং এজেন্ট। বিজেপির পোলিং এজেন্টকে গুলি করে খুন।

মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে খুন তৃণমূলকর্মী। কুপিয়ে খুনের অভিযোগ।

মুর্শিদাবাদের রেজিনগরেও খুন তৃণমূল কর্মী। বোমা মেরে খুনের অভিযোগ। নিহত তৃণমূল কর্মীর নাম ইয়াসিন শেখ।

ভোটের আগের রাতেই খুন কোচবিহারের বক্সীরহাটে।

মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় তৃণমূল-কংগ্রেস সংঘর্ষে মৃত্যু শাসকদলের কর্মীর।

এই ভাবে সারাদিন ধরে শুধু মৃত্যু নয়, সমস্ত সংঘর্ষ রক্তপাত আহত বা জখম হওয়ার খবর দিতে-দিতেই এগিয়েছে সারাদিনের খবর। এবং সন্ধের দিকে সর্বশেষ খবর আসা পর্যন্ত মোট ১৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।

একটি রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটের খবর সেই দেশেরই ভিন্ন রাজ্যের সংবাদমাধ্যমে জায়গা পেতেই পারে। বিশেষত সেই রাজ্য যদি হয় ভোট-হওয়া-রাজ্যর সংলগ্ন। দূরতর বা দূরতম রাজ্যের মিডিয়াতেও এই খবর হয়তো তত বেমানান দেখাবে না। কিন্তু তাই বলে আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও জায়গা পাবে পঞ্চায়েত ভোটের খবর, পঞ্চায়েত ভোট-সন্ত্রাস? শুধু তাই নয়, খবরটির ভিতরে একটি ভিডিয়ো ‘এমবেড’ করা হয়েছে, যেখানে বুথ থেকে ব্যালটবক্স ছিনিয়ে নিয়ে দৌড় দেওয়ার ছবিচটি ধরা আছে!

(Feed Source: zeenews.com)