উত্তর প্রদেশ: দেরিতে ঢুকেও দাপট দেখাচ্ছে বর্ষা। সারাদেশ জুড়েই বর্ষার মরশুম চলছে। এই বছর উত্তর ভারতে বৃষ্টির পরিমাণ অন্য বছরের তুলনায় অনেকটাই বেশি। ইতিমধ্যেই হিমাচল প্রদেশ, পঞ্জাবের মতো রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দিল্লিতে যমুনা নদী বিপদসীমার উপরে দিয়ে বইতে বইতে প্রায় ভাসিয়ে দিয়েছে লালকেল্লাও।
একটানা বর্ষণে এখন উত্তরপ্রদেশেও বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। রামগঙ্গা নদীর জল বিপদসীমা থেকে মাত্র ৮২ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। পাহাড়ি ও সমতল অংশে লাগাতার বৃষ্টির কারণে অন্য নদ-নদীর জলও বাড়ছে। রামগঙ্গা এবং গগন নদীর জলস্তর এখন ১৮৯.৭৮ মিটার ও ১৮৯.২৫ মিটার উচ্চতায় রয়েছে। এতে সমস্যায় পড়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষজন।
উত্তর ভারতের বেশির ভাগ শহরই এখন একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন। অনেক শহরেই খাদ্যের সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। বহু শহরেই লাগাতার ট্রেন ও বিমান পরিষেবা বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন যাত্রীরা।
উত্তরপ্রদেশের বেশিরভাগ মানুষই চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত। খেতের ফসল বাঁচাতে তাই তাঁদের নৌকার নামাতে হয়েছে মাঠে। রামগঙ্গা নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষেরা রীতিমতো আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছন। প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে রামগঙ্গার জলস্তর।
স্থানীয় বাসিন্দা অঙ্কিত ও সোনু ঠাকুর জানিয়েছেন, রামগঙ্গা নদীর জলস্তর যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে তাঁরা খুবই চিন্তায় রয়েছেন। সেই সঙ্গে এও জানিয়েছেন যে, আশেপাশের পরিস্থিতি যাই হোক না সাধারণ মানুষরা সকলেই এক সঙ্গে এর মোকাবিলা করবেন। যদিও সকলেও এখন দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।
সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা হিসেবে ইতিমধ্যেই প্রশাসনের তরফে নদী তীরবর্তী এলাকার কিছু বাড়ি খালি করে দেওয়া হয়েছে। যাতে জলস্তর আরও বৃদ্ধি পেলে প্রাণহানির কোনও ঘটনা না ঘটে। কিন্তু তাতে স্বস্তি নেই। কারণ বেশির ভাগ বাসিন্দাই রয়ে গিয়েছেন বাড়িতে। চাষবাসের জমি এবং ঘর বাড়ি ফেলে এখনই সরে যেতে চাইছেন না বেশির ভাগ মানুষ। রুটিরুজির টান তো বটেই, সেই সঙ্গে তাঁদের পৈতৃক ভিটে, সম্পত্তি রক্ষা করার একটা তাগিদও রয়ে গিয়েছে।