বাংলাদেশঃ সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

বাংলাদেশঃ সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি, পাবনা: নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ করায় পাবনা সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দুবলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও কর্মচারীদের ঈদ বোনাস বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে।

এবিষয়ে প্রতিকার চেয়ে পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে, জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা।

রোববার (১৬ জুলাই) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোছা: আফরোজা আক্তার।

১৪ জন শিক্ষকের স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘ঈদ (ঈদুল আজহার) বোনাসের শেষ তারিখ ছিল গত ২৬ জুন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি আত্মঘাতি সিদ্ধান্তে আমাদের ঈদ বোনাস বন্ধ করে রেখেছেন। এমনতাবস্থায় আমরা শিক্ষক কর্মচারিরা স্বাচ্ছন্দে ঈদ উদযাপন করতে পারিনি।’

এর আগে চলতি বছরের মার্চে মাসে টানা ১৪ বছর ধরে সভাপতির পদে থাকা পাবনা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশারফ হোসেনকে তৃতীয় বার মনোনয়ন না করতে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন শিক্ষকরা। এতে বলা হয়েছে, কোনো নির্বাচন না দিয়ে টানা ক্ষমতায় থাকায় প্রতিষ্ঠানটিতে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, নির্যাতন ও নীপিড়ন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মোশারফ হোসেন সভাপতি থাকাকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন।

অভিযোগ দেয়ার ৪ মাস অতিবাহিত হলেও এখনো রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড হতে কোনও ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সকল নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে ক্ষমতার বলে আবারও সভাপতি হওয়ার জন্য জোর পাঁয়তারা শুরু করেছেন বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি মোশারফ হোসেন। শিক্ষকরা এই বিষয়ে অভিযোগ করায় প্রথমে তাদের ঈদ বোনাস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এরপর বেতনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা।

দুবলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুজন আলী বলেন, সম্পুর্ণ নিয়মবহির্ভূতভাবে আমাদের বোনাস আটকিয়ে দেয় স্কুলের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। এরপর আমাদের বেতনও বন্ধ করে দিয়েছে। দেশের সকল স্কুলের শিক্ষকরা বেতন তুলে পরিবারে খরচ করলেও অর্ধ মাস চলে যাচ্ছে তবুও আমাদের বেতন আটকে আছে । ঈদ বোনাস গত ২৬ তারিখে উত্তোলনের কথা থাকলেও আটকা দেওয়ার কারণে এখন পর্যন্ত আমরা বোনাস তুলতে পারিনি। অন্যায়ের প্রতিবাদ করাই আমাদের সকল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এমন অবস্থান নিয়েছে তারা। আমরা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনা দরকার।

সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল হক বলেন, বোনাস তো আমাদের দেয়ইনাই। বরং আমাদের বেতন স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে প্রধান শিক্ষক। ঈদের পুর্বে সবাই বোনাস পেয়েছে। ঈদের দুই সপ্তাহ পার হয়ে যাচ্ছে তবুও আমরা বোনাস ইত্তোলন করতে পারিনি। মাসের অর্ধমাস চলে যাচ্ছে আমরা বেতন তুলতে পারিনি।

এবিষয়ে বিদ্যালয়ের বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, গত কয়েকদিন আগে আমি সবাইকে নিয়ে বসছিলাম। বোনাসে সই করা হয়েছে। আমি আসছি ৬ মাসও হয়নি। সকল শিক্ষকদের বলেছি স্কুলটাকে ভালোভাবে পরিচালনা করতে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।

প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, বোনাসে সই করা হয়েছে। বেতন তারা পেয়ে যাবেন। এখনো বেতন উত্তোলনের সময় আছে। গত (১০ জুলাই) সভাপতি আমাদের সবাইকে নিয়ে সমাধানের জন্য বসেছিলেন। সবাইকে বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা মেনে চলার জন্য বলা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোছা: আফরোজা আক্তার বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

(Feed Source: sunnews24x7.com)