নয়াদিল্লি: আরেকটু হলেই বিরোধী মহাজোট উড়ান নেওয়ার আগেই মুখ থুবড়ে ক্র্যাশ করছিল আর কী! ঠিক সময়ে এসে ব্যাপারটা সামলে দিলেন যিনি, তিনি আর কেউ নন, তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ হ্যাঁ, কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টির মধ্যে তৈরি হওয়া সমস্যা (নাকি, ভুল বোঝাবুঝি) ঠিক সময়ে মিটিয়ে দিলেন তিনি। সঙ্গে অবশ্যই ছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার৷ কোথায় হল ম্যাজিক!
গত ২৩ জুনের বৈঠক শেষেই বিবৃতি প্রকাশ করে আম আদমি পার্টি জানিয়ে দিয়েছিল, দিল্লি অর্ডিন্যান্স, অর্থাৎ, দিল্লির আমলা নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্স নিয়ে কংগ্রেস নিজের অবস্থান স্পষ্ট না করলে বিরোধী জোটের পরবর্তী বৈঠকে তাদের পক্ষে যোগ দেওয়া মুশকিল হবে৷
আর আপ-এর এই অবস্থান জানার পর থেকেই শুরু হয় জলঘোলা৷ কংগ্রেসের তরফে মল্লিকার্জুন খাড়্গে আগেই জানিয়েই দিয়েছিলেন যে, তাঁরা বিজেপির কোনও প্রস্তাবকেই সমর্থন করবেন না৷ কিন্তু, বাধা আসে কংগ্রেসের দিল্লি এবং পঞ্জাব সেল থেকে৷ বিষয়টি আরও জটিল হয় যখন, পঞ্জাবের আপ সরকারের দুর্নীতি বিরোধী ধরপাকড়ে গ্রেফতার হন পঞ্জাবের প্রবীণ কংগ্রেস নেতা ও পি সোনি৷
এদিকে, বেঙ্গালুরু বৈঠকের দিনও এগিয়ে আসছিল৷ এবার, এই বৈঠকের আয়োজক হল কংগ্রেস৷ সেই মতো আম আদমি পার্টির মুখ্য আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানাতে ফোন করেন খাড়্গে৷ সূত্রের খবর, সেই সময়েও নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে অনড় থাকে আপ৷
এর পরেও, গত শনিবার দলীয় বৈঠকের শেষে অর্ডিন্যান্স সম্পর্কে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি কংগ্রেস৷ ঠিক তখনই বিরোধী জোটের বাকি সদস্যেরা প্রমাদ গুনতে শুরু করেন৷
ঠিক এই সময়ে মধ্যস্থতা করতে এগিয়ে আসেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সঙ্গে নীতীশ কুমার৷ তাঁরা দু’জনেই কংগ্রেস নেতৃত্বকে বোঝান, কংগ্রেস যদি অর্ডিন্যান্স নিয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট না করে, তাহলে বিরোধীদের প্রতিরোধ পাঁচিলে দিল্লি-পঞ্জাবের মতো প্রমাণ সাইজের ফাঁক তৈরি হবে৷
একদিকে যখন আপ তার নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসছে, সূত্রের খবর, অন্যদিকে, তখনই মল্লিকার্জুন খাড়্গেকে ফোন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসকে প্রকাশ্যে অবস্থান স্পষ্ট করার পরামর্শ দেন তিনি৷ উল্লেখযোগ্য ভাবে, তার পরেই আসে কে সি বেণুগোপালের প্রতিক্রিয়া৷
বেণুগোপাল সংবাদ সংস্থাকে রবিবার জানান, ‘‘আমার মনে হয় ওরা (আপ) আগামিকাল বৈঠকে যোগদান করবে৷ অর্ডিন্যান্সের (দিল্লির আমলা নিয়ন্ত্রণ) বিষয়ে বলতে গেলে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট৷ আমরা একে সমর্থন করব না৷’’
এরপরেই, সন্ধে নাগাদ আপ-এর তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, তারা সোমবারের বিরোধী বৈঠকে যোগ দেবে। এখন শুধু রাত পোহানোর অপেক্ষা৷ তারপরেই বেঙ্গালুরুতে বসতে চলেছে বিজেপি বিরোধী দলগুলির দ্বিতীয় মেগা বৈঠক৷