সরিয়ে দেওয়া উপাচার্যদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতিতে নিয়োগ, রাজ্যপালকে বার্তা?

সরিয়ে দেওয়া উপাচার্যদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতিতে নিয়োগ, রাজ্যপালকে বার্তা?

কলকাতা: বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে গেলে বা দৈনন্দিন সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করতে হয়। আর এবার সেই কর্মসমিতিতে সরকার মনোনীত প্রতিনিধি করেই একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যদের পাঠানো হচ্ছে। যাকে কার্যত নজিরবিহীন বলেই দাবি করা হচ্ছে।

রাজ্যের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্যকে না জানিয়েই রাজ্যপাল তথা আচার্য সি ভি আনন্দ বোস উপাচার্য নিয়োগ করে যাচ্ছেন। আর রাজ্যের দৈনন্দিন প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রেই যাতে রাজ্যপালের সরাসরি ভূমিকা না থাকে তা আটকাতেই এই পদক্ষেপ রাজ্যের? অন্তত তেমনটাই প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষামহলের একাংশ।

উচ্চ শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ওম প্রকাশ মিশ্রকেই সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থাৎ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সরকার মনোনীত প্রতিনিধি করে পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দফতরের তরফে চিঠি ওম প্রকাশ মিশ্র পেয়েছেন বলেই জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাক্তন উপাচার্য ওম প্রকাশ মিশ্রের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন খোদ আচার্য তথা রাজ্যপাল। আর এবার সেই ওম প্রকাশ মিশ্রকেই রাজ্যের তরফে সরকার মনোনীত সদস্য করে পাঠানোই যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে শুধু উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় নয়, নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীকেও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ই এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সরকার মনোনীত প্রতিনিধি করেও পাঠানো হয়েছে। রাজ্যের যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য ইতিমধ্যে রাজ্যপাল নিয়োগ করেছেন সেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রেই এখনও পর্যন্ত দেখা গিয়েছে এই ছবি। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার মনোনীত এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে পাঠানো হয়েছে ওই বিশ্ববিদ্যালয় এর অধ্যাপক তথা বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

এখন শুধু দাবি রাজ্য সরকারের তরফে এই সিদ্ধান্তের দরুন রাজ্যপালকেই কড়া বার্তা দিতে চাইছে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতর। তবে কেন এই সিদ্ধান্ত? একাংশের ব্যাখ্যা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে দৈনন্দিন কাজ বা বিভিন্ন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যাতে রাজ্যপালের মাধ্যমে নিয়োগ হওয়া উপাচার্যরা তড়িঘড়ি না নিয়ে নিতে পারেন তার জন্যই এই পথ রাজ্যের। সেক্ষেত্রে সরকার মনোনীত এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল সদস্যরা এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে প্রতিবাদ জানাতে পারেন।

তার মাধ্যমে রাজ্যপালকেও বার্তা দিতে চায় রাজ্য বলেও মনে করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি ইতিমধ্যেই বি. এড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়াদ বাড়িয়েছেন রাজ্যপাল। এক্ষেত্রে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতর উল্টো সিদ্ধান্ত নিয়ে সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার মনোনীত এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য হিসাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। একাংশের ব্যাখ্যা সব মিলিয়ে রাজ্যের এই সিদ্ধান্ত কার্যত রাজ্যপালকে কড়া বার্তা দেওয়ার জন্য। যদিও এই বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

(Feed Source: news18.com)