কলকাতা: সোমবার দিল্লিতে বঙ্গ বিজেপির মেগা বৈঠক। রবিবারই দিল্লি উড়ে যাচ্ছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে দিল্লিতে জরুরি বৈঠকে থাকবেন জে পি নাড্ডা, অমিত শাহ, এমনটাই খবর বিজেপি সূত্রের। সাংগঠনিক বিষয়-সহ রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা। সুকান্ত- শুভেন্দু সহ এই বৈঠকে বঙ্গ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সংগঠন অমিতাভ চক্রবর্তীও উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গিয়েছে।
একদিকে পঞ্চায়েত ভোটে দলের আশানুরূপ ফল না হওয়ার কারণ পর্যালোচনা যেমন হবে, পাশাপাশি চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে সংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হতে পারে এই বৈঠকে বলে বিশেষ সূত্রের খবর। পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদলের বিরুদ্ধে বারবারই সন্ত্রাসের অভিযোগে সরব হয়েছে বঙ্গ পদ্ম শিবির। এছাড়াও গণনায় কারচুপি-সহ ভোট পরবর্তী অশান্তির শিকার দলীয় কর্মী সমর্থকেরা বলে হামেশাই অভিযোগে সোচ্চার হয় গেরুয়া শিবির। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার এবং শাসকদলকে নিশানা করে রাজ্যে অবিলম্বে ৩৫৫ ধারা লাগুর পক্ষে জোর সওয়াল করছেন শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার-রা।
এই প্রেক্ষাপটে সোমবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বঙ্গ বিজেপি-র প্রথম সারির নেতাদের বৈঠক রাজনৈতিকভাবে যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহল মহল। এদিনের সাংগঠনিক বৈঠকের পাশাপাশি সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আলাদা করে বিভিন্ন ইস্যুতে বৈঠক করতে পারেন অমিত শাহ , জে পি নাড্ডা বলেও খবর। পঞ্চায়েত ভোটের দিন হোক বা ভোট পরবর্তী সময়ে, বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে কথা বলেছেন অমিত শাহ থেকে শুরু করে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। ভোট পরবর্তী অশান্তির ঘটনায় রাজ্যে একাধিক কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে দিল্লি বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব। এবার এক প্রকার সুকান্ত- শুভেন্দুদের দিল্লিতে তলব করে বৈঠকে বসতে চলেছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, বাংলায় সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিতে রাজ্যে সুনীল বনসল, আশা লকড়া, মঙ্গল পান্ডে, সতীশ ধন্দের মতো দুঁদে রাজনীতিবিদদের পৃথকভাবে দায়িত্ব ভাগ করে দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় নিয়োগ করা হলেও শুধুমাত্র শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ নয়, কার্যত নড়বড়ে সংগঠনের কারণেই বঙ্গ বিজেপি রাজনৈতিকভাবে জমি শক্ত করতে পারছে না বলেই মত বিজেপি শিবিরের একাংশের। বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট। তার আগে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মূল নজর বাংলায় সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধি। সোমবারের বৈঠকে তাই সংগঠনকে কিভাবে মজবুত করা যায়, কোন পথে এগোবে বঙ্গ বিজেপি ব্রিগেড, মূলত সে ব্যাপারেই রণকৌশল ঠিক হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।