‘ও পাকিস্তানেই মরুক’, ২ সন্তানকে ফেলে নাসরুল্লাকে নিকাহ করায় বললেন অঞ্জুর বাবা

‘ও পাকিস্তানেই মরুক’, ২ সন্তানকে ফেলে নাসরুল্লাকে নিকাহ করায় বললেন অঞ্জুর বাবা

মেয়ে যে এরকম কাজ করতে পারেন, সেটা এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না। স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়েই দুই সন্তানকে রেখে পাকিস্তানে গিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে স্থানীয় যুবক নাসরুল্লাকে বিয়ে করায় মেয়ের প্রতি তীব্র বিতৃষ্ণা প্রকাশ করলেন ভারতীয় ‘বধূ’ অঞ্জুর (নাম পালটে এখন ফতিমা) বাবা গয়াপ্রসাদ থমাস। মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র জেলার বৌনা গ্রামে সাংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি জানান, মেয়ে যে কাজ করেছেন, তাতে তাঁদের কাছে এখন অঞ্জু ‘মরে গিয়েছেন’। মেয়েকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত সরকারের কাছেও আবেদন করবেন না বলে জানিয়েছেন গয়াপ্রসাদ। বরং তিনি বলেছেন, ‘আমি প্রার্থনা করি…যে ও ওখানেই (পাকিস্তানে) মরে যাক।’

অঞ্জু অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি ভারতে ফিরে আসছেন। যিনি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের আপার দির জেলার ছেলে নাসরুল্লার (২৯) সঙ্গে বিয়ে করেছেন। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আপার দির জেলার পুলিশ কর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে প্রথমে ধর্মান্তরিত হন অঞ্জু (৩৪)। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নিজের নাম রাখেন ফতিমা। তারপর ইসলামের রীতনীতি মেনে নাসরুল্লার সঙ্গে নিকাহ সারেন। যে নাসরুল্লার সঙ্গে ২০১৯ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে আলাপ হয়েছিল অঞ্জুর। তারপর দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।

আর পাকিস্তানে গিয়ে মেয়ের সেই নিকাহের খবর জানার পর মধ্যপ্রদেশের গ্রামে দাঁড়িয়ে অঞ্জুর বাবা বলেন, ‘ও নিজের দুই সন্তান এবং স্বামীকে ফেলে যেভাবে পালিয়ে গিয়েছে………………। ও নিজের সন্তানদের কথাও ভাবল না। ও যদি এটাই করতে চাইত (নাসরুল্লাকে নিকাহ), তাহলে নিজের স্বামীকে (রাজস্থানের আলওয়ারে স্বামী ও দুই সন্তানের সঙ্গে থাকতেন অঞ্জু) আগে ডিভোর্স দিতে পারত। ও আমাদের কাছে আর বেঁচে নেই।’ সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওর সন্তানদের কী হবে? ওর স্বামীর কী হবে? ওর ১৩ বছরের মেয়ে এবং পাঁচ বছরের ছেলের দেখভাল করবে কে? ও নিজের সন্তান এবং স্বামীর ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিয়েছে। কে ওর সন্তানদের দেখভাল করবে? আমাদেরই করতে হবে।’

অঞ্জু যে পাকিস্তানে যাচ্ছেন, সে বিষয়ে স্বামীরও বিন্দুমাত্র ধারণা ছিল না বলে একাধিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে। অথচ অঞ্জু পুরোপুরি পরিকল্পনা করেই পড়শি দেশে গিয়েছেন বলে একটি ভিডিয়োবার্তায় দাবি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পুরো পরিকল্পনা করেই সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে গিয়েছেন। পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত পাকিস্তানের হাইকমিশনের কাছে আসা নথি অনুযায়ী, বৈধভাবেই পাকিস্তানে গিয়েছেন অঞ্জু। তাঁকে যে ভিসা দেওয়া হয়, সেটা শুধু আপার দির জেলার জন্য বৈধ। অর্থাৎ আপার দির জেলার বাইরে বেরোতে পারবেন না অঞ্জু।

সেই পরিস্থিতিতে থমাস জানিয়েছেন যে মেয়েকে কীভাবে ভিসা পেলেন, সে বিষয়ে তাঁর কোনও ধারণা নেই। থমাস বলেন, ‘আমি জানি না যে ও কীভাবে পাসপোর্ট পেল বা ও কীভাবে ভিসা পেল।’ সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে পাকিস্তানে যাওয়ার পর থেকে তাঁর সঙ্গে মেয়ের কোনও কথা হয়নি। মায়ের সঙ্গে কথা বলছেন অঞ্জু। যে অঞ্জুকে সোমবার ‘মানসিক ভারসাম্যহীন এবং উদ্ভট’ বলেন থমাস।

তারইমধ্যে অঞ্জুর পাকিস্তান সফর নিয়ে একটি মহলে যে জল্পনা তৈরি হয়েছে, তা থমাস উড়িয়ে দিয়েছেন। থমাসরা যেখানে থাকেন, সেই গ্রামের কিছুটা দূরেই বিএসএফের বড় ইউনিট আছে। সেই বিষয়টির সঙ্গে অঞ্জুর পাকিস্তানে যাওয়ার সম্পর্ক আছে কিনা, সেই প্রশ্নের জবাবে থমাস বলেন, ‘আমার মেয়ের কোনও অপরাধমূলক মনোভাব নেই। এই বিষয়টি নিয়ে যে কোনওরকম তদন্তের জন্য আমি তৈরি আছি।’

(Feed Source: hindustantimes.com)