নয়াদিল্লি : একাধিকবার হামলা হয়েছে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে। ট্রেন লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে পাথর। এত বিলাসবহুল একটা ট্রেনে এভাবে পাথর নিক্ষেপে ক্ষতি হয়েছে রেলের। সেই পরিমাণটা কত, তা জানালেন রেলমন্ত্রী। বুধবার সংসদে কেন্দ্রীয়মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ জানান, বন্দে ভারত এক্সপ্রেস লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপের জেরে ২০১৯ সাল থেকে ৫৫ লক্ষ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে রেলের।
লোকসভায় এক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী জানান, বন্দে ভারত এক্সপ্রেস পাথর ছোড়ার ঘটনায় জড়িত ১৫১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোনও ক্ষেত্রেই যাত্রীর প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। চুরি বা যাত্রীর কোনও জিনিসের ক্ষতি হয়নি। বন্দে ভারতে পাথর ছোড়ার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। ২০১৯, ২০২০, ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত এ ধরনের ঘটনার জেরে ৫৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে রেলের।
অশ্বিনী বৈষ্ণ আরও জানান, যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং রেলের সম্পত্তির ক্ষতি রুখতে, আরপিএফ জিআরপি/জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে একযোগে ‘অপারেশন সাথী’ পরিচালনা করছে। যার মাধ্যমে পাথর নিক্ষেপ এবং তার পরিণতি সম্বন্ধে সংবেদনশীল জনগণকে বোঝানো হচ্ছে। রেলপথ সংলগ্ন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় চলছে অপারেশন সাথী।
সংসদে লিখিত জবাবে রেলমন্ত্রী আরও বলেন, ‘চলন্ত গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার ঘটনায় রাশ টানতে, এসব ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা জনিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ গাইডলাইন জারি করা হয়েছে। বিভিন্ন ঘটনাকে বিশ্লেষণ করে এসব ঘটনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ তাঁর সংযোজন, আক্রান্ত এলাকা বা ‘ব্ল্যাক স্পটে’ অসামাজিক কার্যকলাপ, যেমন- মদ্যপ ও অন্যান্য দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। আরপিএফ নিয়মিত জিআরপি ও স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছে। ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার মত বিপদ নিয়ন্ত্রণ করতে বিভিন্ন তথ্যও শেয়ার করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’-এর ওপর দ্বিতীয় বার হামলার ঘটনায় নিজেদের মতো করে তদন্ত শুরু করে রেলপুলিশ। তার পর সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হয়। তাতে দেখা যায়, হাওড়া থেকে বিহার হয়ে নিউ জলপাইগুড়ি যাওয়ার পথে হামলা হয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে। তবে এই হামলা হয় বিহারের কিষাণগঞ্জ জেলায়, মানগুর্জন স্টেশন থেকে একটু এগিয়ে। রেলের তরফে জানানো হয়, গত ৩ জানুয়ারি বিহারের কিষাণগঞ্জ জেলায় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসকে লক্ষ্য করে চলে হামলা। বাইরে থেকে ছোড়া হয় পাথর। তাতে সবে উদ্বোধন হওয়া ট্রেনের দুই কোচের জানলার কাচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তাতে বিজেপি নেতাদের যাবতীয় দাবি-দাওয়া এবং হুঁশিয়ারি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বাংলার বিজেপি নেতাদের মুখ পুড়েছে বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। কারণ, ঘটনার পর নানা মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছিল বাংলার বিজেপি নেতাদের। “বাংলা ভাল কিছু পাওয়ার যোগ্য নয়” বলে মন্তব্য করেন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বিজেপি-র সর্বভারতীয় নেতা দিলীপ ঘোষকে আবার বলতে শোনা যায়, “বাংলা ধীরে ধীরে কাশ্মীর হয়ে যাচ্ছে”। তৃণমূলকে “বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে পাথর ছোড়া দল” বলে কটাক্ষ করেন শুভেন্দুও। কিন্তু শেষ মেশ দেখা যায়, বাংলায় নয়, দ্বিতীয় বার বিহারেই হামলা হয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উপর।
(Feed Source: abplive.com)