দু’দিন আগেই রাজভবনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে বৈঠক করে এসেছিলেন। তখন সবাই মনে করেন সংঘাতের আবহ বোধহয় অস্তমিত। কিন্তু সেটা যে শেষ হয়ে যায়নি তা বোঝা গেল রাজ্যপালের পদক্ষেপে। এবার স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ নিয়ে রিপোর্ট তলব করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এমনকী স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়কে রীতিমতো চিঠি দিয়ে এই রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। যা নিয়ে এখন রাজ্য–রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের জেরেই এই রিপোর্ট তলব করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এখানের নিয়োগ প্রক্রিয়া সরেজমিনে দেখতেই এই পদক্ষেপ বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্য–রাজনীতিতে সরগরম বিষয় হল নিয়োগ দুর্নীতি। সেখানে রাজ্যপাল সরাসরি নিয়োগ নিয়েই রিপোর্ট তলব করলে তাতে বাড়তি ইন্ধন প্রবেশ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সূত্রের খবর, উপাচার্যের নিয়োগ নিয়ে এই চিঠি এসেছে রাজভবন থেকে। তাই স্বাস্থ্যভবনে যান স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুহৃতা পাল। আর এই চিঠির প্রেক্ষিতে কোন পথে খেলা হবে তার প্রস্তুতিও আজ শুক্রবার শুরু হয়ে গিয়েছে।
কেন এমন ঘটনা ঘটল? সম্প্রতি রাজ্যপালের কাছে কয়েকজন চিকিৎসক একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেই চিঠি পেয়েই গোটা পরিকল্পনাটি ছকে ফেলেন রাজ্যপাল। সেই মতো নিয়োগ নিয়ে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই চিকিৎসক সংগঠন থেকে শুরু করে কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ খুশি হয়েছেন। এই চিকিৎসকরাই রাজ্যপালকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন পরিচালনার ক্ষেত্রে খামতি রয়েছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল একটি স্বশাসিত সংস্থা। তাদেরকে এই স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
আর কী জানা যাচ্ছে? এই ঘটনা নিয়ে যখন চর্চা তুঙ্গে উঠেছে তখন কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুহৃতা পালের পক্ষ থেকে। তবে রাজ্যপাল যে ক্রমাগত সক্রিয় হয়ে উঠছেন তা বোঝা গিয়েছে বিভিন্ন সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করার মধ্য দিয়ে। রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে এককোণে সরিয়ে রেখে উপাচার্য নিয়োগ থেকে শুরু করে নানা কড়া সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তিনি। তারপর এমন ঘটনা ঘটবে সেটাই দস্তুর। তবে এই বিষয়ে মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি সুদীপ্ত রায় সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আমি বলতে পারব না। আমি এরকম কিছু এখনও ওয়েবসাইটে দেখিনি। আগে দেখি তারপর যা বলার বলব।’ এর আগে ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্যও নিয়োগ করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
(Feed Source: hindustantimes.com)