কলকাতা: পথ দুর্ঘটনায় সাত বছরের এক শিশুর মৃত্যুকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এদিন বেহালা। উত্তেজিত জনতা সরকারি বাসে ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয় বিরাট বাহিনী। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে ওই শিশুর বাবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সিগন্যালের সময়ে সন্তানকে নিয়ে সাইকেলে করে রাস্তা পার হচ্ছিলেন ওই ব্যক্তি। তখনই লরি এসে ধাক্কা মারে তাঁকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেব্রা ক্রসিংয়ে তিন নম্বরে গাড়ির পিছনে লরি ছিল। শিশুর বাবা অটো থেকে নেমে দুটো গাড়ি ছেড়ে লরির সামনে থেকে যাচ্ছিলেন। এতোটা নিচে ছিল (ব্লাইন্ড স্পট) যে ড্রাইভার দেখতে পারেনি যে বাবা ও শিশু পার হচ্ছেন। পুলিশের কাছে ঘাতক গাড়ির চালকের দাবি, তিনি দেখতেই পাননি যে তাঁর গাড়িতে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের দাবি, ব্লাইন্ড স্পটের জন্য দেখতে পারেনি চালক। এমনটাই সে দাবি করেছে পুলিশের কাছে।
অন্যদিকে, কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হবে বলে লালবাজার সূত্রের খবর। বেহালায় চৌরাস্তায় পথদুর্ঘটনা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মোট এখনও পর্যন্ত তিনটি মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
ঠাকুরপুকুর থানায় চালকের বিরুদ্ধে মামলা অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারার মামলা। ঠাকুরপুকুর থানায় ভাঙচুর সহ মারধর সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়া বেহালা থানাতেও ভাঙচুর-মারধর ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত চালক পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা। লরির খালাসিকেও আটক করা হয়েছে। কোনা এক্সপ্রেসওয়ে বাবলাতলা থেকে বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ গাড়িটিকে। এই গাড়ির বিরুদ্ধে আগে কোনো কেস রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিন দুর্ঘটনার পর রণক্ষেত্রর আকার নেয় গোটা এলাকা। উত্তেজিত জনতা সৌরনীলের দেহ রাস্তায় রেখে বিক্ষোভ দেখান। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের ভ্যান এবং বাইকে। রাস্তার মাঝে দাউদাউ করে জ্বলতে থাকতে উলটে পড়া পুলিশের প্রিজন ভ্যান। স্থানীয়দের বিক্ষোভে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ডায়মন্ড হারবার রোড। দফায় দফায় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল।