দেওবন্দ ছবিঃ…

দেওবন্দ ছবিঃ…
জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের জাতীয় সম্মেলনে তখন মাওলানা মাহমুদ মাদানীর বেদনা স্পষ্ট ছিল। দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে বক্তব্যে তিনি যখন বলেন, নিজের দেশেই অচেনা মানুষ তৈরি হয়েছে। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, দেশ স্বাধীন করতে আমাদের পূর্বপুরুষেরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। দেশের গৌরব নিয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে খেলতে দেব না।

প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ মাওলানা মাহমুদ মাদানি বলেছেন যে মুসলমানদের উগ্রবাদ এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া এড়ানো উচিত। আগুন দিয়ে আগুন নেভানো যায় না। তাই বিদ্বেষ সাম্প্রদায়িকতা ও বিদ্বেষের উত্তর হতে পারে না। এর জবাব দিতে হবে ভালোবাসা ও সদিচ্ছার সাথে।

মাওলানা মাহমুদ মাদানীও পরোক্ষভাবে বৃটিশদের কাছে যারা ক্ষমা চেয়েছেন তাদের কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, কেউ কেউ আছেন যারা ঘর বাঁচাতে ও সুন্দর করার জন্য ত্যাগ স্বীকার করেন এবং আবার কেউ আছেন যারা ক্ষমা চান। উভয়ের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট এবং বিশ্ববাসী সেই পার্থক্য দেখতে পাচ্ছে, যারা ক্ষমাপ্রার্থনা লিখেছেন তারা কীভাবে ক্ষমতার দাম্ভিকতায় নিমজ্জিত হয়ে দেশকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ যেমন ভারতের মুসলমানদের অবিচলতার প্রতীক, তেমনি জমিয়ত শুধু মুসলমানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি দেশের একটি সংগঠন। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ নির্মূল করা মুসলমানদের চেয়ে সরকার ও গণমাধ্যমের দায়িত্ব বেশি। এর আগে জমিয়ত কর্মকর্তারা দেশ ও সমাজের বিভিন্ন বিষয়ে প্রস্তাব উপস্থাপন করেন, যা অনুমোদনও করা হয়। এসব প্রস্তাবের মাধ্যমে দেশের সমস্যা সমাধানে একটি রোডম্যাপ দেওয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হয়।

মঞ্চে এসে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মাওলানা মাহমুদ মাদানী

সম্মেলনে বক্তব্য শুরু করতে মঞ্চে উপস্থিত মাওলানা মাহমুদ মাদানী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি আর্দ্র চোখে স্মরণ করলেন সংগঠনের সাবেক সভাপতি মরহুম মাওলানা ক্বারী মোহাম্মদ উসমান মনসুরপুরীকে। মাওলানা মাদানী বলেন, ক্বারী মোহাম্মদ উসমান মনসুরপুরীকে ছাড়া এই প্রথম এই অনুষ্ঠান করতে হলো। সব সময় তিনি জমিয়তের পতাকা উত্তোলন করতেন এবং অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করতেন। তার দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ায় ইসলামী বিশ্বের পাশাপাশি জমিয়তেরও বিরাট ক্ষতি হয়েছে। কারণ ক্বারী উসমান সবসময় তাকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন।

যারা ঐক্যের কথা বলে তারা একটা অংশকে কষ্ট দিচ্ছে: মাদানী

জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের জাতীয় ব্যবস্থাপনা কমিটির দুদিনব্যাপী অধিবেশনে সারা দেশের বিশিষ্ট উলামারা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জমিয়তের জাতীয় সভাপতি মাওলানা মাহমুদ মাদানী বলেন, যারা ঐক্য ও অখণ্ডতার কথা বলে তারা বিশেষ শ্রেণীকে কষ্ট দিচ্ছে। ইঙ্গিতে সরকারকে আক্রমণ করতে গিয়ে তিনি কর্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেন এবং ঘৃণাকে ঘৃণা নয়, ভালোবাসা ও ভালোবাসা দিয়ে পরাজিত করার তাগিদ দেন।

(Source: amarujala.com)