রবীন্দ্রভারতীর প্রশাসনিক ভবনে লোহার রেলিং? প্রতিবাদে অধ্যাপক সংগঠন

রবীন্দ্রভারতীর প্রশাসনিক ভবনে লোহার রেলিং? প্রতিবাদে অধ্যাপক সংগঠন

কলকাতা: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে বসবে লোহার রেলিং।উপাচার্য ইতিমধ্যেই এই নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও ফিনান্স অফিসারকে। এবার সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাল  বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন।সোমবার থেকে ক্যাম্পাসমুখি হচ্ছেন না রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়। শারীরিকভাবে নিগ্রহের আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন তিনি। নাম করে তৃণমূল সমর্থিত কর্মচারী ইউনিয়নের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার জন্য উপাচার্য এবার কয়েক দফার নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ও ফিনান্স অফিসারকে। তিনি চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ব্লকে লোহার রেলিং বসাতে হবে যাতে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ব্লক সুরক্ষিত থাকে। পাশাপাশি, অনুমতি ছাড়া যাতে কেউ না ঢুকতে পারে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ব্লকে, সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।

উপাচার্য রেজিস্ট্রারকে এও নির্দেশ দিয়েছেন, প্রশাসনিক ভবনের সুরক্ষার জন্য এক্সসার্ভিস ম্যান- এর তরফ থেকে  কয়েকজনকে নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে নিয়োগ করতে হবে, যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখবেন এবং প্রশাসনিক ভবনে যাঁরা কাজ করবেন তাঁদেরও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবেন। পাশাপাশি, রেজিস্টারকে এও নির্দেশ দেওয়া হয়, যাতে উপাচার্যের দফতর প্রথম তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। চিঠিতে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গ্রাউন্ড ফ্লোরে বর্তমানে উপাচার্যের দফতর থাকায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে। তাই উপাচার্যের দফতর  প্রথম তলায় স্থানান্তর করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ নজরদারির সঙ্গে করা যাবে। পাশাপাশি প্রশাসনিক ব্লকে সিসিটিভি বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন উপাচার্য। গোটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ব্লক জুড়ে যাতে সিসিটিভি বসানো হয় এবং সেই কাজ যাতে অবিলম্বে শুরু করা হয়। আগামী ১০ দিনের মধ্যে এই কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

সিসিটিভি বসানোর নির্দেশকে কার্যত স্বাগত জানিয়েছেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এর অধ্যাপক সংগঠন। বুধবার জারি করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন-এর তরফে সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত দাস জানিয়েছেন, “রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বিশৃঙ্খলার খবর সামনে এসেছে, সে-বিষয়ে শিক্ষক সমিতি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। শিক্ষক, পড়ুয়া থেকে শুরু করে আধিকারিক, শিক্ষাকর্মী-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক অংশের নিজস্ব দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলনের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে বলেই আমরা মনে করি। কিন্তু কোনওরকম বিশৃঙ্খলা, যা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশের পরিপন্থী, তাকে আমরা  সমর্থন করি না। ”

এও বলা হয়েছে ” বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনকে, যা আবার ঠাকুরবাড়ির অংশ হওয়ায় একটি প্রথম সারির হেরিটেজ ভবনও বটে, লোহার রেলিংয়ে ঘিরে ফেলা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের ভাবনাও একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আদর্শ পরিবেশের সঙ্গে মানানসই বলে আমরা মনে করি না। বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত সব মানুষের সুরক্ষার স্বার্থে ক্যাম্পাসে সিসিটিভি লাগানোর শিক্ষক সমিতির দীর্ঘদিনের দাবি মেনে এ’বিষয়ে অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ করুক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, আমরা সেই দাবি পুনর্বার রাখছি।” প্রসঙ্গত গত সোমবারই রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য জানিয়েছিলেন, তিনি ইতিমধ্যেই রাজ্যপাল তথা আচার্যকে ই-মেল করে জানিয়েছেন,  আপাতত তিনি ক্যাম্পাসে যাবেন না। বাড়ি থেকেই কাজ করবেন। আপাতত যে নির্দেশগুলি দিয়েছেন, সেই নির্দেশ কার্যকর হওয়া না পর্যন্ত তিনি বাড়ি থেকেই কাজ চালিয়ে যাবেন।

(Feed Source: news18.com)