চাঁদে মিলেছে সালফার! রয়েছে অক্সিজেন টাইটেনিয়ামও, আর কী কী খোঁজ পেল প্রজ্ঞান?

চাঁদে মিলেছে সালফার! রয়েছে অক্সিজেন টাইটেনিয়ামও, আর কী কী খোঁজ পেল প্রজ্ঞান?

ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা, ISRO-এর চন্দ্রযান-৩ চাঁদের দক্ষিণ অংশ থেকে একের পর এক তথ্য পাঠাচ্ছে। ইতিমধ্যেই রোভার প্রজ্ঞান জানিয়েছে, চাঁদে সালফার পাওয়া গিয়েছে। শুধু তাই নয়, অক্সিজেন-সহ অন্য অনেক উপাদানের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ISRO জানিয়েছে যে প্রজ্ঞান রোভারের আরেকটি যন্ত্রও সালফারের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে।

আর তারপর থেকেই বিজ্ঞানীদের মধ্যে উৎসাহ বেড়েছে। কিন্তু চাঁদে সালফার পাওয়াটা আসলে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত—

বিজ্ঞানীদের মতে, সালফার সাধারণত আগ্নেয়গিরির থেকে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে তৈরি হয়। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন, সালফারের উপস্থিতি পৃথিবীর বাইরে জীবনের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা নিশ্চিত করতে পারে। সালফার এই অন্য গ্রহ বা উপগ্রহের বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও দিতে পারে।

নেচার জার্নালের এক প্রতিবেদনে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী গবেষক, চাও হে জানিয়েছেন, বায়ুমণ্ডলে যদি খুব কম পরিমাণ, প্রায় দুই শতাংশও সালফার পাওয়া যায়, তা-ও খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভিন গ্রহের বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে ধারণা পেতে এগুলি খুব জরুরি। পৃথিবী, শুক্র, বৃহস্পতির মতো গ্রহগুলির বায়ুমণ্ডলে সালফারের উপস্থিতি কী ভূমিকা পালন করে, তা জানেন বিজ্ঞানীরা। চাঁদে সালফারের ভূমিকা কী তা জানতেই চলছে খোঁজ।

পৃথিবীতে প্রাণের সৃষ্টির পিছনে সালফারের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। বেশ কিছু গাছ এবং ব্যাকটিরিয়া সালফার উৎপন্ন করে। অ্যামিনো অ্যাসিড-সহ বেশ কিছু উৎসেচকেও পাওয়া যায়। সালফার চাঁদে প্রাণ সৃষ্টির কারণ হতে পারে কিনা সেটাই দেখার। এই জন্য বিজ্ঞানীরা ল্যাব সিমুলেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারেন।

জীবনে সালফারের গুরুত্ব—

গবেষকদের মতে, কোষ গঠনে সালফারের ভূমিকা রয়েছে। এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট তৈরিতে সহায়ক। একে গ্লুটাথিয়নও বলা হয়, যা কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে বাধা দেয়। কোষকলা বিকাশেও সালফার সহায়ক। অর্থাৎ, মানবদেহের ডিএনএ তৈরি ও মেরামত করতে এবং কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সালফারের প্রয়োজন হয়। আবার বিপাক ক্রিয়াতেও সাহায্য করে সালফার। প্রোটিন হজমে সহায়ক। এটি ক্যানসার থেকে শরীরকে রক্ষা করতে, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। মানবশরীরকে ব্যাকটেরিয়া মুক্ত রাখে, দূষণ ও বিকিরণের প্রভাব থেকেও রক্ষা করে। সালফারযুক্ত ভিটামিন মেথিওনিন প্রয়োজনীয় সালফার সরবরাহ করতে পারে।

একই ভাবে উদ্ভিদের বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ হল সালফার। উদ্ভিদেও উৎসেচকের কাজ বাড়ায়। এটি গাছে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, আয়রন, জিঙ্ক এবং বোরনের প্রাপ্যতা বাড়ায়। সালফার ব্যবহারে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, সালফার গাড়ির ব্যাটারি, সার, তেল পরিশোধন, জল প্রক্রিয়াকরণেও ব্যবহৃত হয়। ব্লিচিং, কাগজ, সিমেন্ট, ডিটারজেন্ট এবং কীটনাশকের মতো পণ্য তৈরিতে সালফার-ভিত্তিক রাসায়নিক ব্যবহার হয়।

(Feed Source: news18.com)